• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: এপ্রিল ২২, ২০১৯, ১০:০৯ এএম
সর্বশেষ আপডেট : এপ্রিল ২২, ২০১৯, ০৪:০৯ পিএম

শরীয়তপুর পাসপোর্ট অফিস দালালমুক্ত, তবে... 

শরীয়তপুর পাসপোর্ট অফিস দালালমুক্ত, তবে... 

শরীয়তপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক আনিসুর রহমানের সঠিক তদারকিতে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসটি এখন দালাল মুক্ত হয়েছে। এদিকে দালালরা তাদের কর্মপরিকল্পনা পরিবর্তন করেছেন। তারা এখন শহরের বিভিন্ন স্টুডিও, যে সকল ব্যাংকে পাসপোর্টের ফি জমা নেয়া হয় সে সকল ব্যাংকের সামনে, পাসপোর্ট অফিসের আশেপাশে অবস্থিত কম্পিউটারের দোকানে, হাসপাতালের চিকিৎসকদের চেম্বারসহ ইউনিয়ন পরিষদের তথ্য সেবা কেন্দ্রে অবস্থান করছেন।

এর কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে জানা যায়, পাসপোর্ট অফিস এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয়টি সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। এই সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে দালালদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হচ্ছে। এছাড়া আইন শৃংঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মাঝে মধ্যেই পাসপোর্ট অফিসে অভিযান পরিচালনা করছেন। যার কারণে দালালরা ঝামেলা মুক্ত থাকার জন্য পাসপোর্ট অফিসে সহসা প্রবেশ করছেন না। অথচ কিছুদিন আগেও পাসপোর্ট অফিসের অভ্যন্তরে এবং গেটের সামনে দালালদের ছিল দীপ্ত পদাচারণা। 

এতোকিছু করেও ভোগান্তি কমেনি পাসপোর্ট গ্রাহকদের। নতুন পাসপোর্ট আবেদনকারীর সামান্য ভুলের কারণে দুই থেকে তিনবার ফেরত পাঠাচ্ছে পাসপোর্ট অফিস। সরকারি চাকরিজীবীরা তাদের অফিসিয়াল নিয়ম কানুনের মধ্যে থেকে অতি সহজে পাসপোর্ট করতে পারলেও বেসরকারি চাকরিজীবীরা পড়ছেন বিপাকে। দীর্ঘ সময় লাইনে দাড়িয়ে থাকার পর পাসপোর্টের ফরমে কম্পিউটার প্রিন্ট ছবি, সত্যায়নের সিল সঠিক জায়গায় না পড়া, জন্মনিবন্ধনের সমস্যা, মূল ফরমে ফ্লুইট ব্যবহার করা, ফরমে ছবির সাইজ ছোট-বড় হওয়া এবং সকল কাগজপত্র সত্যায়িত থাকার পরও মূল কপি না আনার কারণে তাদেরকে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। 

অনুসন্ধানে জানা গেছে, পাসপোর্ট অফিসের কতিপয় কর্মচারীর সঙ্গে রয়েছে দালালদের দারুন সখ্যতা। সেই সখ্যতার কারণে গ্রাহকরা যাতে দালালদের স্মরণাপন্ন হয় সে কারণে পাসপোর্ট ফরমে সামান্য ত্রুটি পেলেই তা ফেরত পাঠাচ্ছেন।

আর এই সুযোগটি কাজে লাগাচ্ছেন দালালরা। তারা ফরম পূরণ, নতুন পাসপোর্ট তৈরি করা, পাসপোর্টের নবায়ন, পাসপোর্ট সংশোধন, পুলিশ ভেরিফিকেশন সহ সকল সমস্যার সমাধানের কথা বলে গ্রাহকদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংকের টাকা। আর সেই টাকার একটা অংশ পেয়ে যাচ্ছেন পাসপোর্ট অফিসের কতিপয় কর্মচারী।

এ ব্যাপারে শরীয়তপুর আঞ্চলিক পাসপের্ট অফিসের সহকারী পরিচালক মোহাম্মাদ আনিসুর রহমানের সাথে আলাপ কালে তিনি বলেন, পাসপোর্ট করতে কোনো ঘুষ লাগে না। সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসাবে শরীয়তপুরের পাসপোর্ট অফিসটি ইতোমধ্যে প্রচুর সুনাম অর্জন করেছে। আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি আমার অফিস চত্বরে এখন কোন দালালের আনাগোনা নেই।

তবে কেউ যদি আমাদের অজ্ঞাতসারে কাউকে টাকা দিয়ে সাহায্য নেয় এবং তার স্বীকার না করে সেক্ষেত্রে আমাদের কিছু করার থাকে না। আমার অফিসের স্টাফের বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ থাকলে তা প্রমাণসহ আমাকে দেখানোর অনুরোধ জানাচ্ছি। আমি অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবো।

শরীয়তপুরবাসীর প্রতি অনুরোধ রইলো, ফরম পূরণের কথা বলে কেউ যদি অতিরিক্ত টাকা চায়, টাকা দেবেন না। প্রয়োজনে আমাদের অফিসে এসে কিংবা ওয়েবসাইটে ঢুকে ফরম পূরণ করবেন। আপনারা সচেতন হলেই দালালরা দালালি করতে পারবে না এবং আপনাদের অতিরিক্ত টাকা অপচয় হবে না।  

বিএস