পদ্মা সেতুতে বসতে যাচ্ছে আরেকটি স্প্যান। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) জাজিরা প্রান্তে বসানো হবে একাদশতম স্প্যানটি। এটি বসানো হলে দৃশ্যমান হবে ১৬৫০ মিটারের পদ্মা সেতু। জাজিরা প্রান্তে পদ্মা সেতুর স্প্যান ৬-সি পৌঁছেছে। সোমবার (২২ এপ্রিল) সকাল ৮টার দিকে রওনা দিয়ে সকাল সোয়া ১০টার দিকে স্প্যানটি জাজিরা প্রান্তে ৩৩ ও ৩৪ নম্বর পিলারের কাছে পৌঁছে। এই দুই পিলারের ওপর মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) স্প্যানটি বসানো হবে।
পদ্মা সেতুর সহকারী প্রকৌশলী হুমায়ুন কবির খবরটি নিশ্চিত করে জানান, এটি জাজিরা প্রান্তে সেতুর নবম স্প্যান ও উভয় প্রান্তসহ সব মিলিয়ে সেতুর একাদশ স্প্যান হবে। সেতুর মাওয়া প্রান্তে স্প্যান বসানোর ঠিক ১২ দিনের ব্যবধানে এই স্প্যানটি বসানো হচ্ছে।
মুন্সীগঞ্জের মাওয়া কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে রওনা দিয়ে স্প্যানটি সোয়া দুই ঘণ্টায় জাজিরা প্রান্তের কাঙ্ক্ষিত পিলার এলাকায় আসে।
‘স্প্যানের দৈর্ঘ্য ১৫০ মিটার আর ওজন তিন হাজার ১৪০ টন। তিন হাজার ৬০০ টন ধারণ ক্ষমতার ক্রেন তিয়ান-ই স্প্যানটি বহন করে আনে। মঙ্গলবার স্প্যানটি পিলারে বসানো হবে।’
জানা যায়, মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর ৪ ও ৫ নম্বর পিলারের ওপর অস্থায়ীভাবে একটি স্প্যান রাখা হয়েছে। এই অস্থায়ী স্প্যানসহ পদ্মা সেতুতে মোট ১০টি স্প্যান বসানো হয়েছে।
সেতুর সহকারী প্রকৌশলী হুমায়ুন কবীর আরো বলেন, কন্সট্রাকশন ইয়ার্ডে স্থান সংকুলান না হওয়ায় একটি স্প্যান ৪ ও ৫ নম্বর পিলারের ওপর রাখা আছে। এটি আসলে বসবে ৬ ও ৭ নম্বর পিলারের উপর। ৬ ও ৭ নম্বর পিলারের কাজ সম্পূর্ণ হলে এ স্প্যানটি সরিয়ে নেওয়া হবে।
এদিকে, পদ্মা সেতুর প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম জানান, একাদশতম স্প্যানটি বসানোর আমাদের টার্গেট মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল)। কিন্তু কালকে নাও হতে পারে। অনেক খুঁটিনাটি বিষয় আছে। যতই সময় যাচ্ছে মানুষ আশাবাদী হচ্ছে এটাই আমাদের পাওয়া। মানুষ আগে যে বিশ্বাস পাচ্ছিল না, সেটা এখন পাচ্ছে। তবে হঠাৎ আসা কালবৈশাখী ঝড় এবং স্প্যানবাহী ক্রেন চলাচলে নদীতে নাব্য সঙ্কট তৈরি হওয়ায় জাজিরা প্রান্তে সব শেষ স্প্যানটি বসাতে দুই দিন সময় লেগেছিল। বিষয়টি মাথায় রেখেই প্রস্তুত সেতু কর্তৃপক্ষ।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর বসানো হয় সেতুর প্রথম স্প্যান। এর প্রায় ৪ মাস পর ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি দ্বিতীয় স্প্যানটি বসে। এর দেড় মাস পর ১১ মার্চ জাজিরা প্রান্তে তৃতীয় স্প্যান বসানো হয়। এর ২ মাস পর ১৩ মে বসে চতুর্থ স্প্যান। এরপর এক মাস ১৬ দিনের মাথায় পঞ্চম স্প্যানটি বসে ২৯ জুন। ৬ মাস ২৫ দিনের মাথায় ২৩ জানুয়ারি বসে ষষ্ঠ স্প্যানটি। গত ২০ ফেব্রুয়ারি ৩৫ ও ৩৬ নম্বর পিলারে বসে জাজিরা প্রান্তের সপ্তম স্প্যান। ২২ মার্চ বসে অষ্টম স্প্যান এবং মাওয়া প্রান্তে গত ১০ এপ্রিল বসে নবম স্প্যান। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সেতুতে ৪২টি পিলারের ওপর বসবে ৪১টি স্প্যান।
কেএসটি