• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: এপ্রিল ২২, ২০১৯, ০৪:৩০ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : এপ্রিল ২২, ২০১৯, ১১:১১ পিএম

মসজিদে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ

শ্রীলঙ্কায় বোমা হামলায় অংশ নেয় ৭ আত্মঘাতী

শ্রীলঙ্কায় বোমা হামলায় অংশ নেয় ৭ আত্মঘাতী

 

রোববার ইস্টার সানডের পরবের মধ্যে দুই দফায় তিনটি গির্জা ও চারটি হোটেলসহ আট জায়গায় বোমা হামলায় অংশ নেয় সাত আত্মঘাতী হামলাকারী। শীর্ষ এক তদন্তকারির বরাত দিয়ে এ কথা জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

ফরেনসিক বিভাগের তদন্ত কর্মকর্তা আরিয়ানন্দা ভেলিয়াঙ্গা জানান, এর মধ্যে দুজন শাংরি-লা হোটেলে বিস্ফোরণ ঘটান। ৫ জন তিনটি গির্জা ও বাকি দুটি হোটেলে বিস্ফোরণ ঘটান। চতুর্থ আরেকটি হোটেল এবং অভিজাত আবাসিক এলাকার বাকি দুটি বোমার বিস্ফোরণ কিভাবে ঘটানো হয়েছে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ভেলিয়াঙ্গা বলেছেন, ‌‘তদন্ত চলছে’।

গির্জায় উপাসনার সময় এবং হোটেলগুলো সকালে বুফে নাস্তার সময়ে হওয়া এই হামলার দায় এখন পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠি বা ব্যাক্তি স্বীকার করেনি। কিংসবুরি হোটেলের এক কর্মচারি বলেছেন, ‘সকালে নাস্তা করতে আসা অতিথিরা ধ্বংসাবশেষ ও রক্তের মধ্যে পড়েছিল। আহত, নিহত সবাইকে আমরা সাহায্য করার চেষ্টা করেছি।’

চারটি বোমা ঠিক একই সময়ে ৮টা ৪৫ মিনিটে বিস্ফোরিত হয়। পরের দুটির বিস্ফোরণ ঘটে পরবর্তী ২০ মিনিটের মধ্যে। আর দুপুরের দিকে বাকি দুটি। হামলায় ২৯০ জন মারা যান যাদের বেশিরভাগই স্থানীয়। এছাড়া ব্রিটিশ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, তুর্কি, ভারতীয়, চীনা, ড্যানিশ, ডাচ এবং পর্তুগিজ নাগরিকসহ ৩৫ জন বিদেশী পর্যটকও মারা গেছেন।

সেনাদের বিশেষ একটি দল বিমানবন্দরের প্রবেশপথে আরেকটি বোমার হদিস পায় যা নিশ্ক্রিয় করা হয়। হামলার খবর পেয়ে বিদেশ সফররত প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা দেশে ফেরার সামান্য আগে বোমাটি খুঁজে পাওয়া যায়।

বোমা হামলার জন্য সন্দেহভাজন সাতজন সহ মোট ২৪জনকে গ্রেফতার করলেও এখনো কারো নাম প্রকাশ করেনি দেশটির নিরাপত্তা সংস্থা। কারণ হিসেবে এক উচ্চ পদস্থ সরকারি কর্মকর্তা বলেছেন, পুরোপুরি নিশ্চিত না হয়ে তারা কোনো ধরনের তথ্য প্রকাশ করতে চান না। এতে করে দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়তে পারে। দাঙ্গা পরিহার করতেই রোববার রাতেই মুসলিম অধ্যুসিত এলাকা ও মসজিদগুলোতে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। তবে এত নিরাপত্তার মধ্যেও দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের একটি মসজিদে পেট্রোল হামলা এবং পশ্চিমের এক শহরে মুসলমান মালিকানাধীন দুটি দোকানে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। তবে সরকার বা নিরাপত্তা বাহিনী এখনো বিষয়টি নিশ্চিত করেনি।

সন্দেহভাজন আরো কয়েকজনকে ধরতে নিরাপত্তাবাহিনীর অভিযান এখনো চলছে। রোববার দুপুরে অভিজাত আবাসিক এলাকার একটি বাড়িতে ঘটা বিস্ফোরণ মলত এই অভিযানেরই ফল। ঘটনা ব্যাখ্যা না করলেও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নিরাপত্তাকর্মী রয়টার্সকে জানান, অভিযানের সময় বাড়িটিতে বিস্ফোরণ ঘটে এবং এতে তিনজন নিরাপত্তা বাহিনীর তিন সদস্যও নিহত হয়েছেন।

সময়ের হিসাবে একের পর এক ঘটনাগুলো তুলে ধরা হলো। মোট ২০ মিনিটের হামলায় স্তবব্ধ হয়ে যায় পুরো শ্রীলঙ্কা :

সকাল ৮টা ৪৫ মিনিট: রাজধানী কলম্বোর শাংরি লা হোটেলে বোমা বিস্ফোরণ।

সকাল ৮টা ৪৫ মিনিট: কলম্বোর কোতাহেনা কোচিকাডের সেইন্ট অ্যান্থনির চার্চে বোমা বিস্ফোরণ।

সকাল ৮টা ৪৫ মিনিট: নেগাম্বোর কাটুয়াপিতিয়ার সেইন্ট সেবাস্টিয়ান ক্যাথলিক চার্চে বোমা বিস্ফোরণ।

সকাল ৮টা ৪৫ মিনিট: কলম্বোর কিংসবুরি হোটেলে বোমা বিস্ফোরণ।

সকাল ৮টা ৫০ মিনিট: কলম্বোর সিনামন গ্র্যান্ড হোটেলের রেস্তোরাঁয় বোমা বিস্ফোরণ।

সকাল ৯টা ০৫ মিনিট: বাত্তিকালোয়ার জিয়ন রোমান ক্যাথলিক চার্চে বিস্ফোরণ।

দুপুর ১টা ৪৫ মিনিট: আবারও বোমা বিস্ফোরণ। এবার দেহিওয়ালার জাতীয় চিড়িয়াখানার কাছে নিউ ট্রপিকাল ইন হোটেলে। যা ছিল দিনের সপ্তম বোমা বিস্ফোরণ।

দুপুর ২টা ১৫ মিনিট: কলম্বোর দিমাটাগোদায় একটি বাড়িতে পুলিশি অভিযান চলার সময় বিস্ফোরণ। দিনের অষ্টম এই বিস্ফোরণে তিন নিরাপত্তা বাহিনীর তিন সদস্য নিহত হন।

সূত্র রয়টার্স

এসজেড