• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: মে ১, ২০২১, ০৪:৩০ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ১, ২০২১, ০৪:৩৩ পিএম

দূরপাল্লায় ভাড়ায় গাড়ি, বাড়ছে সংক্রমণ ঝুঁকি!

দূরপাল্লায় ভাড়ায় গাড়ি, বাড়ছে সংক্রমণ ঝুঁকি!

লালমনিরহাটের আমির হামজা। কাজ করেন ঢাকার যাত্রাবাড়ীর শনির আখড়ার একটি টুপির দোকানে। লকডাউনে কাজ নেই বললেই চলে। তাই পরিবারের জন্য ছুটে যাচ্ছেন গ্রামের বাড়িতে। কষ্টের শেষ কি এখানে? না, শনির আখড়া থেকে গাবতলীতে আসতে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ভাগে ভাড়া গুনতে হয়েছে দেড়শ টাকা। আর গাবতলীতে এসে এখন একটি মাইক্রোবাস পেয়েছেন। তা-ও বগুড়া পর্যন্ত। গুনতে হবে এক হাজার টাকা।

একই গাড়িতে আরও একজন বসে আছেন, তার নাম মোস্তাকিম। কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করে ঢাকায় উত্তরা থাকেন। টিউশনি করে সরকারি চাকরির পরীক্ষা দিয়ে চলছিলেন। লকডাউনে বাসায় গিয়ে পড়ানো বন্ধ। তার ওপর হঠাৎ মা অসুস্থ থাকায় অতিরিক্ত বাড়ায় বগুড়ায় যেতে হচ্ছে তাকে। মাইক্রোবাসটিতে গাদাগাদি করে ১০ জন বসতে হয়। ফলে স্বাস্থ্যঝুঁকি তো থাকছেই। এমন আরও অনেককে গুনতে হচ্ছে বেশি ভাড়া।

মো. মেহেদী হাসান নামের এক ব্যক্তি র‌্যাকিন কনস্ট্রাকশনে কাজ করতেন ব্যাচিং প্লান্ট অপারেটর হিসেবে। চাকরি চলে যাওয়ায় হাতে দুটি ব্যাগ নিয়ে সিরাজগঞ্জ ফিরে যাচ্ছেন নিজ গ্রামের বাড়িতে। গাবতলীতে এদিক সেদিক ঘুরছেন, এক হাজার টাকার কমে কেউ যাচ্ছেন না। তাই তিনি দাঁড়িয়ে থাকেন।

গাবতলী থেকে পাটুরিয়া ঘাটে একেকটা গাড়িতে নিচ্ছে তিনশ থেকে সাড়ে তিনশ টাকা। ভাড়ার গাড়ির দেখাদেখি মোটরবাইক, সিএনজিচালিত অটোরিকশা আর ব্যাটারিচালিত রিকশাও দূরের পথে চলতে শুরু করেছে। এসব যেন দেখার কেউ নেই। ভাইরাস সংক্রমণের মধ্যেই গা ঘেঁষে বসছেন যাত্রীরা। মোটরসাইকেল চালক দুইজন আরোহীসহ গাদাগাদি করে মহাসড়কে চলছে ঝুঁকি নিয়ে। প্রতি ট্রিপে গাবতলী থেকে পাটুরিয়াঘাট পাচ্ছেন দুজনের কাছ থেকে সাতশ টাকা। লকডাউনে রাস্তায় সমস্যা হলে তা ম্যানেজ করেই চলছেন বলে জানান তারা। আরেক মোটরসাইকেল চালক বলেন, “দুনিয়া যেভাবে চলছে আমরাও সেভাবে ম্যানেজ করে চলছি।”

এর আগে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ আর দ্বিতীয় ঢেউ ঠেকাতে ৫ এপ্রিল থেকে গণপরিবহন বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। তারপরও যাতায়াতের বিকল্প এখন ভাড়ায়চালিত মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেল, সিএনজি অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা। এই সুযোগে পরিবহন খাতের চাঁদাবাজরাও সক্রিয় হয়েছে। বেকার শ্রমিকদের একটি অংশ গাড়িতে যাত্রী জোগার করে চালকদের কাছ থেকে আদায় করে নিচ্ছেন জনপ্রতি ৫০ থেকে একশ টাকা। যে যত যাত্রী জোগার করবে, তার আয়ও তত বেশি। তাই যাত্রী নিয়ে টানাটানিও বেশি।

এদিকে, কঠোর বিধি নিষেধ পালনে রাজাধানীর প্রবেশমুখসহ নানা জায়গায় চেক পোস্ট থাকলেও তা এখন অনেকটাক ফাঁকা পড়ে রয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে চেক ছাড়া চলছে বাহন। সংবাদিক দেখলে লোক দেখানো চেকিং শুরু করে দায়িত্বরতরা। গাবতলীতে দায়িত্বরত এক সার্জেন্ট জাগরণকে জানান, তারা চেকিং করে তারপর যেতে দেন। তবে সবার মুভমেন্ট পাস পাওয়া যায় বলেও জানান তিনি। তার মতে, বেশির ভাগ গাড়িই ব্যক্তিগত এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের।