• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: মে ৮, ২০১৯, ০২:৩৮ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ৯, ২০১৯, ০৯:৪১ পিএম

ডিএসসিসির দামের ধার ধারে না মাংস ব্যবসায়ীরা

ডিএসসিসির দামের ধার ধারে না মাংস ব্যবসায়ীরা

পবিত্র রমজান উপলক্ষে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নির্দেশকে পাত্তাই দিচ্ছেন না মাংস ব্যবসায়ীরা। গরুর মাংস ৫২৫ টাকা নির্ধারণ করে দিলেও রাজধানীর প্রায় প্রতিটি বাজারে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৫শ’ টাকা। ডিএসসিসির নির্দেশের কথা বললে মাংস ব্যবসায়ীরা সিটি করপোরেশন থেকে মাংস কেনার কথা বলেন তারা। বুধবার (৮ মে) রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, খিলগাঁও, রামপুরা, বনশ্রী, শান্তিনগর বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

সরেজমিন দেখা যায়, প্রতিটি মাংসের দোকানে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি সাড়ে ৫শ’ টাকা থেকে ৬শ’ টাকা পর্যন্ত কিন্তু ভোক্তার কোনো কথা নেই। 

যারা একটু কথা বলছেন বা জানতে চাইছেন তাদের দোকানদাররা বলছেন, সিটি করপোরেশনকে বলেন কম দামে গরু কিনে দিতে আমরা কম দামেই বিক্রি করবো। আর যদি এই দামে না পুষায় তাইলে যারা দাম নির্ধারণ করেছে অর্থাৎ সিটি করপোরেশন থেকে নিয়ে আসেন।

মাংস ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, তাদের কোন সুযোগ সুবিধা না দিয়েই বেঁধে দেয়া হয়েছে দাম। অন্তত কমদামের গরু কেনার ব্যবস্থা তো করে দিবে সিটি করপোরেশন। তারা বলছেন, অদ্যবধি মাংস ব্যবসায়ীদের নিয়ে বসে যে মাংস ব্যবসায়ী সমিতি আলোচনা করবে এ সুযোগও নেই। তাদের সংগঠনের অফিসটি আজও তালাবদ্ধ। যার কারণে মাংসের দাম নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।

মাংসের দামের বিষয়ে জানতে চাইলে মাংস ব্যবসায়ী সমিতির মহাসচিব রবিউল ইসলাম দৈনিক জাগরণকে বলেন, সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত দামেই বিক্রি করতে হবে। তবে মাংস ব্যবসায়ীদের মানবিক দিক বিবেচনা করা প্রয়োজন। সবচেয়ে বড় কথা হলো, ব্যবসায়ীরা ৫২৫ টাকা করে বিক্রি করবে। তবে তাদের অন্তত আশ্বস্ত করতে হবে, এই দামে মাংস বিক্রি করার জন্য। বাস্তবে গরুর দাম অনেক বেশি। এছাড়া আমি যে ব্যবসায়ীদের নিয়ে বসব তার কোন উপায় নেই। আমাদের সমিতির গাবতলীর অফিসটি আজও তালাবদ্ধ। গাবতলীর ইজারাদাররা তালাবদ্ধ করে রেখেছে। উত্তর সিটি করপোরেশন অফিস আমাদের বুঝিয়ে দেয়ার কথা থাকলেও আজ অবধি আমাদের ডাকেনি।

মেরাদিয়া বাজারে কথা হয় মাংসের দোকানের স্বত্বাধিকারী মো. কবিরের সঙ্গে। তিনি দৈনিক জাগরণকে বলেন, গরুর দাম বেশি। তাছাড়া বিদেশি গরু আসা প্রায় বন্ধ, চামড়াখাতেও ধ্স। যার কারণে গরুর মাংস বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। 

সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত রেটে কেন বিক্রি করছেন না জানতে চাইলে মো. কবির বলেন, যারা বসে বসে দাম নির্ধারণ করেছেন তাদের কমদামে গরু কিনে দিতে বলেন, আমরা ৫২৫ টাকা কেন আরো অনেক কমে বিক্রি করবো। চামড়ার দাম আশঙ্কাজনহারে কমে গেছে। আগে যেখানে প্রতি সপ্তাহে  ৪৫ হাজার টাকা চামড়ার বিল পেতাম এখন তা আট হাজারে ঠেকেছে। শুধু উপরে বসে নির্ধারণ করলে হয় না; বাস্তবতা জানতে হয় এবং বুঝতে হয় বলে জানান এই দোকানি।

শুধু কবিরের মাংসের দোকান নয়, এমনই চিত্র রাজধানীর অধিকাংশ মাংসের দোকানগুলোতে। তাদের অভিযোগ, বাস্তবতা বিবেচনা না করে গরুর মাংসের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া মাংসের বাজার নিয়ন্ত্রণহীন থাকার পরেও কিভাবে তারা এই দাম নির্ধারণ করে দেয়। 

যাত্রাবাড়ীর মাংস ব্যবসায়ী আলিম উদ্দিন দৈনিক জাগরণকে বলেন, গতকাল প্রথম রমজান ছিল। দুটি গরু কেটে সাড়ে ৫শ’ টাকা কেজি দরে মাংস বিক্রি করেছি। তাতে সবকিছু দেয়ার পর হাজার টাকা লাভ হবে কি না সন্দেহ। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কনজুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান দৈনিক জাগরণকে বলেন, সিটি করপোরেশনের উচিত, যারা নির্ধারিত দামের বেশি মাংস বেশি দামে বিক্রি করছেন। আর ভোক্তাদের উচিত এই বিষয়ে ভোক্তা অধিদফতরে অভিযোগ করা। 

এআই/টিএফ