• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: মে ১৭, ২০১৯, ০৫:৩১ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ১৭, ২০১৯, ০৫:৩১ পিএম

গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা

বিষ-ভেজালমুক্ত খাদ্য নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের মৌলিক দায়িত্ব

বিষ-ভেজালমুক্ত খাদ্য নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের মৌলিক দায়িত্ব
‘বিষাক্ত খাদ্য : সাম্প্রতিক পদক্ষেপ ও করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা- ছবি : জাগরণ

দেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য বিষ ও ভেজালমুক্ত এবং পুষ্টিমানসম্পন্ন খাদ্য নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের অন্যতম মৌলিক দায়িত্ব। কিন্তু রাষ্ট্রকে আমরা এ দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে দেখছি না। আমরা বঞ্চিত হচ্ছি বিষ ও ভেজালমুক্ত এবং পুষ্টিমানসম্পন্ন খাদ্য পাওয়ার অধিকার থেকে। এখন এমন কোন খাদ্যদ্রব্য নেই যা মানসম্পন্ন এবং যাতে ভেজাল ও মারাত্মক ক্ষতিকর বিভিন্ন কেমিক্যাল মেশানো নেই। উৎপাদন থেকে বাজারজাতকরণ প্রত্যেকটি স্তরেই এর ছড়াছড়ি রয়েছে।

শুক্রবার (১৭ মে) পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা)-র উদ্যোগে রাজধানীতে পবা কার্যালয়ে ‘বিষাক্ত খাদ্য : সাম্প্রতিক পদক্ষেপ ও করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন।

পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা)-র চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে গোলটেবিল বৈঠকের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পবার সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুস সোবহান। আলোচক ছিলেন ঢাবির ঔষুধ প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক আ ব ম ফারুক, ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজের ডা. আবু সাইদ, নাসফ-এর সাধারণ সম্পাদক তৈয়ব আলী, বানিপার সভাপতি প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন, বিজিআরএম এর সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী গোলাম হায়দার, হিল-এর সভাপতি জেবুন নেসা প্রমুখ।

অধ্যাপক আ ব ম ফারুক বলেন, খাদ্যকে ভেজালমুক্ত করা গেলে ক্যান্সার কমপক্ষে অর্ধেকে নেমে আসত। নানা ধরনের বিষাক্ত ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে প্রস্তুতকৃত নিম্নমানের খাদ্যের কারণে আগামী প্রজন্ম বিভিন্ন গুরুতর অসুখের ঝুঁকি নিয়ে বড় হচ্ছে। দীর্ঘদিন বিষাক্ত খাদ্য গ্রহণের ফলে গর্ভবতী মা ও তার পেটের ভ্রুণের ক্ষতি হয়, সন্তানও ক্যান্সার, কিডনিসহ মরণব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে।

গোলটেবিল বৈঠক থেকে সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদ-মাদকের মতো নিম্নমান, ভেজাল ও বিষযুক্ত খাদ্যপণ্যের বিরুদ্ধে সরকারকে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করার দাবি জানান হয়।

নিম্নমান এবং ভেজাল ও বিষযুক্ত খাদ্যপণ্য উৎপাদন থেকে বাজারজাতকরণ প্রক্রিয়ার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে স্পেশাল পাওয়ার অ্যাক্ট, ১৯৭৪ এর ২৫-গ ধারা প্রয়োগের দাবি জানান। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯, নিরাপদ খাদ্য আইন, ২০১৩, ফরমালিন নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৫ কঠোরভাবে বাস্তবায়ন এবং অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানেরও দাবি করেন তারা। তারা মানসম্পন্ন এবং ভেজাল ও বিষমুক্ত খাদ্যপণ্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সংস্থার মধ্যে সমন্বয় সাধনপূর্বক সমন্বিত বাস্তবসম্মত মনিটরিং ও এনফোর্সমেন্ট কার্যক্রম পরিচালনার দাবি জানান।

জনস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে খাদ্যে বিষ বা ভেজাল রোধে কোন রকম বৈষম্য বা রাজনৈতিক বিবেচনা ছাড়াই আইন প্রয়োগে সরকারের প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহণেরও পরামর্শ দেন তারা।

ভেজাল ও বিষমুক্ত খাদ্য নিশ্চিতকরণে খাদ্যপণ্য উৎপাদন থেকে বাজারজাত করা পর্যন্ত সামগ্রিক ব্যবস্থাপনা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা এবং সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ রাসায়নিক পদার্থের আমদানিকারক ও ব্যবহারকারী এবং লেবেল ছাড়া বা মিথ্যা লেবেলের অধীন কীটনাশক বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণেও দাবি করেন তারা। এ জন্য সময়োপযোগী কীটনাশক নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়ন করার পরামর্শ দেন তারা।

টিএস/এসএমএম