• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ২৬, ২০১৯, ১০:০৪ এএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ২৬, ২০১৯, ১০:২১ এএম

ডিএসসিসি

আধুনিক চেহারা পাচ্ছে ১৯ পার্ক-খেলার মাঠ 

আধুনিক চেহারা পাচ্ছে ১৯ পার্ক-খেলার মাঠ 
উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন একটি মাঠ -সংগৃহীত

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) গৃহীত ‘জলসবুজে ঢাকা’ প্রকল্পের উন্নয়ন কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। প্রায় ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নগরীর অবহেলিত পার্ক-খেলার মাঠগুলোকে আধুনিক ও দৃষ্টিনন্দন করে সাজিয়ে গড়ে তোলা হচ্ছে। এরইমধ্যে কয়েকটি পার্ক-খেলার মাঠের উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন হয়েছে। যে কোনও মুহূর্তে ওই সব পার্ক-খেলার মাঠ নগরবাসীর জন্য খোলে দেয়া হবে।   

এ তথ্য জানিয়েছেন ‘জলসবুজে ঢাকা’ প্রকল্পের পরিচালক ও ঢাকা দক্ষিণ সিটির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান। 

ডিএসসিসির পার্ক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নগরীর ১৯টি পার্কের মধ্যে বিশেষ করে শহীদ আবদুল আলিম পার্ক ও খেলার মাঠ, টিকাটুলি পার্ক ও খেলার মাঠ, হাজারীবাগ পার্ক, নবাবগঞ্জ পার্ক, রসুলবাগ শিশুপার্ক, শহীদ বুদ্ধিজীবী আবদুল খালেক সরদার পার্ক, সিরাজ-উদ-দৌলা পার্ক, গুলিস্তান পার্ক ও খেলার মাঠের নির্মাণ ও উন্নয়ন কাজ এরইমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। 

উন্নয়ন কাজ ঘুরে দেখছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন-সংগৃহীত

নির্মাণ ও সাজ-সজ্জাকরণের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে বংশাল, আউটফল, জোড়াপুকুরসহ নগরীর বেশ কয়েকটি পার্ক ও খেলার মাঠের। এ সব পার্ক ও খেলার মাঠের উন্নয়ন কার্যক্রম সম্পন্ন হয়ে গেলে নগরবাসী পাবেন দৃষ্টিনন্দন পার্ক ও খেলার মাঠ। আর সেটার জন্য অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন নগরবাসীরা।

জলসবুজে ঢাকা প্রকল্পের পরিচালক আসাদুজ্জামান বলেন, ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে জলসবুজে ঢাকা প্রকল্পের কাজ দ্রুত গতি এগিয়ে চলছে। এই প্রকল্পের কাজ শেষ হলে নগরবাসী যেমন দৃষ্টিনন্দন সাজ-সজ্জা চোখ জুড়িয়ে দেবে তেমনি পার্কে হাঁটাচলা করার জন্য মনোবলও বৃদ্ধি করবে। শিশু-কিশোররা আন্তর্জাতিক মানের এ সব খেলার মাঠে খেলাধুলায় অংশ নিয়ে নিজেদের আরও সমৃদ্ধ করবে।

প্রকল্পের সাথে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসে পার্ক ও খেলার মাঠের কাজ শেষ হয়ে যাবে। এ জন্য চলেছে জোর কর্মযজ্ঞ। বেশ কয়েকটি পার্ক ও খেলার মাঠ পরিদর্শন করে সেই কর্মযজ্ঞ দেখা গেছে। 

সরেজমিন ও প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্তা-ব্যক্তিদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, খেলার মাঠ এবং পার্কগুলোর মধ্যে রসুলবাগ, জোড়াপুকুর খেলার মাঠের উন্নয়ন কাজও প্রায় সমাপ্ত। অন্যান্য খেলার মাঠ ও পার্কগুলোর উন্নয়নের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে, যা চলতি বছরেই সমাপ্ত করে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। 

শহীদ আবদুল আলিম, রসুলবাগ, জোড়াপুকুর, গুলিস্তান পার্ক ও খেলার মাঠের উন্নয়ন কাজ এরইমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। অন্যান্য খেলার মাঠ ও পার্কগুলোর কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। সবগুলো মাঠ-পার্ক চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত হবে।

প্রকল্পের নকশায় দেখা গেছে, একগুয়েমি কাটাতে পার্ক ও খেলার মাঠে ফুলের বাগান, বিনোদন রাইড, ওয়ার্কওয়ে, ব্যায়ামাগার, কফিশপ ইত্যাদি নানাবিধ সুবিধা অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। পরিবেশ-প্রতিবেশ সামঞ্জস্য রেখে পার্ক ও মাঠে আলোক-সজ্জারও ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। 

ডিএসসিসি ৫ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আশ্ররাফুজ্জামান (ফরিদ) দৈনিক জাগরণকে বলেন, সুস্থ মন ও শরীরের জন্য চাই খোলামেলা সুন্দর পরিবেশ। কিন্তু ঢাকা শহরে সেই খোলামেলা পরিবেশের বড়ই অভাব। আর সেই অভাব পূরণ করতে ডিএসসিসি যে উদ্যোগ নিয়েছে তা সত্যিই প্রশংসাযোগ্য। পার্ক ও খেলার মাঠ থাকলে মানুষ হাঁটাচলা করতে পারবেন। ছেলে-মেয়েদের খেলাধুলা করার জন্য মাঠ বড়ই দরকার। মাঠগুলো উন্নয়ন করা হলে সেই অভাবও পূরণ হবে। 

গুলিস্তানের স্থায়ী বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম নয়ন বলেন, আগে গুলিস্তান মাঠে নেশাখোরদের আড্ডা ছিল। এখন তা উচ্ছেদ করে আকর্ষণীয় করে সাজানো হয়েছে। যে কোনও মানুষ এখন এখানে আসলে মুগ্ধ হতে বাধ্য হবেন। নগরীর মাঠ ও পার্কগুলোকে আন্তর্জাতিক মানের করে গড়ে তোলায় মেয়র সাঈদ খোকনসহ প্রকল্পের সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানাই। 

খিলগাঁওয়ের ‘সি’ ব্লকের বাসিন্দা  সালেহীন বাবু বলেন, বাচ্চাদের খেলাধুলার জন্য কোনও মাঠ নেই। মুক্ত বায়ু গ্রহণে কোনও পার্ক নেই। কিন্তু এগুলো নগরজীবনে খুবই দরকার। ডিএসসিসি যে উদ্যোগ নিয়েছে সেটা বাস্তবায়ন হলে খুবই ভালো হয়। তবে মাঠ-পার্ক নিয়ন্ত্রণ করার জন্য প্রয়োজন বোধে সিকিউরিটি নিয়োগ দেয়া উচিত। যাতে করে সৌন্দর্য ধরে রাখা যায়। অন্যথায় নেশাখোরদের দখলে চলে যাবে এ সব পার্ক ও মাঠ।

● একগুয়েমি কাটাতে পার্ক ও খেলার মাঠে ফুলের বাগান, বিনোদন রাইড, ওয়ার্কওয়ে, ব্যায়ামাগার, কফিশপ ইত্যাদি নানাবিধ সুবিধা অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। পরিবেশ-প্রতিবেশ সামঞ্জস্য রেখে পার্ক ও মাঠে আলোক-সজ্জারও ব্যবস্থা রাখা হয়েছে ●

নগরীর সবগুলো পার্ক ও খেলার মাঠের উন্নয়ন কাজ শেষ হলেই নগরীর দৃশ্য পাল্টে যাবে। পার্ক ও খেলার মাঠগুলোর চেহারা পাবে আন্তর্জাতিক মানের। তখন নগরবাসীর মধ্যে পার্কে ঢুকতে আগ্রহ বাড়বে। এমনটাই প্রত্যাশা করেছেন ঢাকা দক্ষিণের নগরপিতা সাঈদ খোকন। তিনি দৈনিক জাগরণকে বলেন, বাসযোগ্য নগরী গড়ে তুলতে আমরা প্রতিনিয়ত নানা বিষয় নিয়ে যুদ্ধ করে যাচ্ছি। সেখানে দৃষ্টিনন্দন পার্ক-খেলার মাঠ না থাকলে কি চলে। তাই বহির্বিশ্বের আদলে এই নগরীতে পার্ক-খেলার মাঠ নির্মাণ করা হচ্ছে। আর তাতে করে নগরী আরও সৌন্দর্য হবে। মেয়র বলেন, এ সব পার্ক ও খেলার মাঠ ভালোভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে। কোনোভাবেই বিনষ্ট হতে দেয়া যাবে না। তবে এ জন্য নগরবাসীকেও সচেতন হতে হবে। নগরবাসী সচেতন না হলে নগরকে কোনোভাবেই সুন্দর করে গড়ে তোলা সম্ভব হবে না।

সাঈদ খোকন আরও বলেন, পরিকল্পিকভাবে পার্ক-খেলার মাঠগুলো নির্মাণ করা হচ্ছে। কাউন্সিলরদের সাথে আলাপ-আলোচনা এবং নগর বিষেজ্ঞদের পরামর্শ নিয়েই এ প্রকল্পের কাজ শুরু করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতার কারণে এ ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই। 

টিএইচ/এসএমএম