• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ৭, ২০১৯, ০৫:২৫ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ৭, ২০১৯, ০৫:২৬ পিএম

বেপরোয়া বাইক চালনা

সড়ক দুর্ঘটনায় রাজধানীতে ৪ দিনে নিহত ১৩ 

সড়ক দুর্ঘটনায় রাজধানীতে ৪ দিনে নিহত ১৩ 
প্রতীকী ছবি

ফাঁকা রাজধানীতে বেপরোয়া বাইকের দাপটে হতাহতের ঘটনা বেড়েই চলেছে। ট্রাফিক আইনের তোয়াক্কা করছে না বাইক চালকরা। ঈদের আগের দিন মঙ্গলবার (৪ জুন ) থেকে শুক্রবার (৭ জুন) পর্যন্ত ৪ দিনে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে আসা রোগীর সংখ্যা প্রায় ৫০০। এর মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ১৮৩ জন। সংশ্লিষ্ট দুর্ঘটনায় মারা গেছে ১৩ তরুণ।

এর মধ্যে রাজধানীর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৫ জন, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালে ৪ এবং জাতীয় অর্থোপেডিক ও পুনর্বাসন হাসপাতালে (পঙ্গু হাসপাতাল) ৪ জন মারা গেছেন।

সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক শামসুজ্জামান শাহীন বলেন, ঈদের মৌসুমে ফাঁকা রাস্তা পেয়ে গত চার দিনে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে প্রায় ২৯ জনের মতো হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে এসেছেন। তাদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায আসা ৫ জন মারা গেছেন। বাকিদের হাসপাতালে সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। 

জাতীয় অর্থোপেডিক ও পুনর্বাসন হাসপাতালের সহকারী রেজিষ্ট্রার ডা. শাখাওয়াত হোসেন বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার রোগীর সংখ্যা কম। ঈদের দিন রোগী এসেছে ছয় জন। তাদের মধ্যে তিন জনকে ছুটি দিয়ে দেয়া হয়েছে। কেউ কেউ জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিয়ে ফিরে গেছেন।

হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, নানান ধরনের সড়ক দুর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসা চলছে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, গত কয়েকবছর ধরে এই হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশই আসে ঈদের ছুটির সময়ে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে। এরমধ্যে সিএনজি ও মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহতের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।

চিকিৎসকরা বলছেন, ঈদের ছুটিতে রাজধানীর ফাঁকা রাস্তায় বেপরোয়া বাইক চালনাই এসব দুর্ঘটনার প্রধান কারণ। তবে এবারের ঈদে তুলনামূলক সড়ক দুর্ঘটনায় আসা রোগীর সংখ্যা অনেক কম বলে জানান হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. শুভ প্রসাদ দাস। তিনি বলেন, ঈদের দিন বৃষ্টির কারণে মানুষ ঘর থেকে কম বের হয়েছে। আবার ঢাকার বাইরে সংঘটিত দুর্ঘটনায় আক্রান্ত রোগীদের ঢাকায় আনাও সম্ভব হয়নি। স্থানীয়ভাবেই তাদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। সে কারণে এবার ঈদে এখানে রোগীর সংখ্যা তুলনামূলক কম।

রাজধানীর রাস্তায় মূল সড়কে বাস চলাচল করেছে খুবই কম। মার্কেট ও বিপণিবিতানগুলোও বন্ধ। তাই সবখানেই এখন অনেকটা নীরবতা বিরাজ করছে। রাস্তায় কয়েকটি গণপরিবহন চললেও প্রাইভেট গাড়ি খুবই কম। প্রতিটি গাড়িই চলছে দ্রুত গতিতে। পাশাপাশি রাজধানীজুড়ে রিকশা চলছে চোখে পড়ার মতো। তবে মটর সাইকেল চলছে বেপরোয়া। আর এভাবে চলার কারণে দুর্ঘটনার হারও বেশি। 

অনেকে মটর সাইকেলে চড়ে পরিবার নিয়ে ঘুরতে বের হয়েছেন। রাস্তায় লোকজন কম থাকলেও বিভিন্ন উদ্যান আর দর্শনীয় স্থানগুলোতে ভিড় করছে সব বয়সী মানুষ। রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়, জিপিও, পল্টন মোড়ের ফুটপাত থেকে কিছু লোকের হেঁটে চলা ছাড়া আর কিছুই চোখে পড়েনি। শুধু পল্টন নয়, পুরো রাজধানীজুড়েই এমন নীরবতা বিরাজ করছে। প্রতিদিন যে এলাকায় হাজার হাজার মানুষের পদচারণা, যানজট যেখানে প্রায়ই জনজীবন স্তব্ধ করে তোলে, সেই রাজধানী ঢাকার এই রূপ যেন অবিশ্বাস্য।

তবে ফাঁকা রাজধানীর পুরান ঢাকার বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় বিরাজ করছে ঈদের আমেজ। অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ থাকলেও মহল্লার শাখা সড়কগুলোর পাশে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা খেলনা, চরকবাজি, পুরাতন কাপড়, ফুচকা বিভিন্ন খাবার বিক্রি করছেন। 

এইচএম/এমএইউ/এসএমএম