• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ১২, ২০১৯, ০৮:৫৫ এএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ১২, ২০১৯, ০৮:৫৮ এএম

 নতুন সাজে আসছে ওয়াটার বাস

 নতুন সাজে আসছে ওয়াটার বাস
নতুন সাজে নামছে ওয়াটার বাস

লোকসান থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে সিঙ্গেল ইঞ্জিনে নতুন সাজে আসছে ওয়াটার বাস। আর এই ওয়াটারবাসগুলোকে আকর্ষণীয় করতে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বিআইডব্লিউটিসি পরিচালক (বাণিজ্য) এন এস এম শাহাদাত আলী এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, বিআইডব্লিউটিসির বহরে বর্তমানে ৮টি ওয়াটারবাস সদরঘাট থেকে গাবতলী ও টঙ্গী রুটে চলাচল করছে। জনগণের সুবিধার কথা চিন্তা করে আরও ৬টি বাস নিয়ে কাজ শুরু করা হবে।

হালকা ও দ্রুতগতির নতুন এ ওয়াটারবাসগুলো চলবে রাজধানীর সদরঘাট থেকে আশুলিয়া রুটে। এছাড়া নারায়ণগঞ্জ থেকে টঙ্গী রুটেও  এই বাহন চালুর পরিকল্পনা নিয়েছে বিআইডব্লিউটিসি।

বিআইডব্লিউটিসির একজন পদস্থ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে দৈনিক জাগরণকে বলেন, আগের ওয়াটার বাসগুলো ভারী ছিল।  সেগুলোতে লোকসান দিতে হচ্ছে। এবার পর্যটনবান্ধব ওয়াটার বাস নামানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এসব বাহনে চড়ে ঢাকার চারপাশের  মনোরম দৃশ্য দেখতে ভ্রমণ পিয়াসীরা ওয়াটার বাসে উঠবে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়,বিআইডব্লিউটিসির বহরে বর্তমানে ৮টি ওয়াটারবাস রয়েছে। লোকসানের কারণে বেসরকারি খাতে এগুলো ছেড়ে দেয়া হয়। তারাও লোকসান গোনায় এগুলো ফেরত দিয়েছে বিআইডব্লিউটিসিকে। এখন করপোরেশন নিজেই ওয়াটারবাসগুলো গাবতলী ও টঙ্গী রুটে সল্প পরিসরে পরিচালনা করছে। তবে এবার সিঙ্গেল ইঞ্জিনের নতুন ওয়াটারবাস নামানো হবে। এতে আশপাশে নৌকা চলাচলে ঝুঁকি থাকবে না। প্রাথমিকভাবে এগুলো সদরঘাট থেকে গাবতলী হয়ে আশুলিয়া এবং সদরঘাট থেকে নারায়ণগঞ্জ হয়ে টঙ্গী রুট পর্যন্ত চলবে। আশা করা হচ্ছে দ্রুতগতির কারণে এই বাহন যাত্রী ও পর্যটকবান্ধব হবে।

এদিকে নৌ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে সম্প্রতি টানা উচ্ছেদ অভিযান চালাচ্ছে অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। অভিযানে নদী ও তীর দখল করে গড়ে ওঠা বিভিন্ন স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে। উদ্ধার হয়েছে বিপুল পরিমাণ জমি।

বিআইডব্লিউটিসি বলছে, নদী দখলমুক্ত হওয়ার পর চালু করা হবে ওয়াটার বাস। এ ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিসি পরিচালক (বাণিজ্য) এন এস এম শাহাদাত আলী বলছে, ১১ বছর আগে ঢাকার এই বৃত্তাকার নৌপথ চালুর সময় ধারণা করা হয়েছিল ওয়াটার বাস বড় হলে অনেক যাত্রী একসঙ্গে বহন করা যাবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নানা কারণে বেশি যাত্রী পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। এবার নতুন চিন্তা থেকে ছোট আকারের বাহন চালু করা হবে। ঢাকার চারপাশের বৃত্তাকার এ নদীপথ
সচল রাখা গেলে রাজধানীর সড়কে চাপ কমতো। কিন্তু সঠিক পরিকল্পনা, ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সেটি কার্যকর হয়নি। 

নৌ মন্ত্রণালয়ের সূত্রমতে, আগামী ১০ বছরের মধ্যে ঢাকার নৌপথ পুরনো অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হবে।

উল্লেখ্য, সদরঘাট থেকে গাবতলী পর্যন্ত বুড়িগঙ্গা ও তুরাগ নদ দিয়ে চলাচলের জন্য ২০১০ সালের ২৮ আগস্ট ওয়াটার বাস সার্ভিস চালু করে সরকার। ওয়াটারবাস দুটি নির্মাণে খরচ হয় প্রায় ১ কোটি টাকা। ১১ মাস যেতেই ২০১১ সালের ১০ জুন সার্ভিসটি মুখ থুবড়ে পড়ে।

এরপরও  ২০১৩ সালের ৪ জুলাইয়ে সাড়ে ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে আরও ৪টি ওয়াটার বাস নামানো হয়। বছর না যেতেই সেগুলোও থমকে যায়। নৌযানগুলো তৈরি করেছিল হাইস্পিড শিপ বিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি। পরে দৈনিক ৪০ হাজার টাকা লোকসান দেখিয়ে সার্ভিসটি বেসরকারি মালিকানায় ছেড়ে দেয়া হয়। কিন্তু তারাও লোকসানের কারণে বেশিদিন টিকতে পারেনি। এরপর বেশ কয়েক মাস সার্ভিসটি বন্ধ থাকে। লোকসানের ঝুঁকি মাথায় নিয়ে আবারো
২০১৪ সালের ১৬ নভেম্বর ওয়াটার বাসগুলো নামায় বিআইডব্লিউটিসি। পরে পুনরায় সেগুলো বেসরকারি মালিকানায় ছেড়ে দেওয়া হয়। কিছুদিন ঢিলেতালে যাত্রী পরিবহনের পর বর্তমানে এগুলো নামমাত্র চলাচল করছে।

বিআইডব্লিউটিসির ওয়েবসাইটের তথ্যমতে, বিভিন্ন স্থানের যাতায়াতের ওয়াটারবাসের ভাড়া উল্লেখ করা হলো:

সদরঘাট-গাবতলী ওয়াটার বাস সার্ভিস

স্টেশন হতে স্টেশন যাত্রী প্রতি এক্সপ্রেস ভাড়া: সদর ঘাট/বাদামতলী- সোয়ারী ঘাট ১০ টাকা, সদর ঘাট/বাদামতলী-খোলামুড়া ২০ টাকা, সদর ঘাট/বাদামতলী-বসিলা ৩০ থেকে ৪০/-টাকা সদর ঘাট/বাদামতলী-গাবতলী ৪০ টাকা থেকে ৫০ টাকা, সোয়ারী ঘাট-খোলামুড়া ১০ টাকা, সোয়ারী ঘাট-বসিলা ৩০ টাকা, সোয়ারী ঘাট-গাবতলী ৩৫ টাকা, খোলামুড়া- বসিলা ২০ টাকা, খোলামুড়া-গাবতলী ৩০ টাকা, বসিলা-গাবতলী ১০ টাকা থেকে ৩০টাকা, গাবতলী-সদর ঘাট/বাদামতলী ৪০ টাকা  থেকে ৫০ টাকা।
       
নারায়ণগঞ্জ-টঙ্গী ওয়াটার বাস সার্ভিস :      

স্টেশন হতে স্টেশন যাত্রী প্রতি ভাড়া: নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দর-কাঁচপুর  ৩০ টাকা, নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দর-ডেমরা ৪০ টাকা, নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দর-রাজাখালী (নলছাড়া) ৮০ টাকা, নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দর-বেরাইদবাজার ৮৫ টাকা,  নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দর-ইছাপুরা ১০০ টাকা,  নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দর-টঙ্গী ১১০ টাকা, কাঁচপুর-ডেমরা ১০, কাঁচপুর-বেরাইদবাজার ৫৫, কাঁচপুর-ইছাপুরা ৭০, কাঁচপুর-টঙ্গী ৮০, ডেমরা-রাজাখালী (নলছাড়া) ৪০, ডেমরা- বেরাইদবাজার ৫০, ডেমরা-ইছাপুরা ৬০, ডেমরা-টঙ্গী ৭০, রাজাখালী(নলছাড়া)- বেরাইদবাজার ১০, রাজাখালী (নলছাড়া)-ইছাপুরা ২০, রাজাখালী (নলছাড়া)-টঙ্গী ৪০, বেরাইদবাজার-ইছাপুরা ১৫, বেরাইদবাজার-টঙ্গী ৩০, ইছাপুরা-টঙ্গী ২০টাকা।

টিএইচ/একেএস/আরআই
 

আরও পড়ুন