• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: জুলাই ১৭, ২০১৯, ০৭:২২ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ১৮, ২০১৯, ০১:১৬ এএম

সদরঘাটে ভবন ধস, বাবা ও ছেলের মরদেহ উদ্ধার

সদরঘাটে ভবন ধস, বাবা ও ছেলের মরদেহ উদ্ধার
চলছে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার কার্যক্রম - ছবি : জাগরণ

রাজধানীর সদরঘাট এলাকায় পাটুয়াটুলীতে তিনতলা একটি পুরনো ভবনের একাংশ ধসে অন্তত দুজনের মৃত্যু হয়েছে। দীর্ঘ অভিযান চালিয়ে সেই ভবনের ভেতর থেকে রাত সাড়ে ৮টার দিকে জাহেদ আলী নামে এক ফল ব্যবসায়ীর মরদেহ উদ্ধার করেছে দমকল বাহিনী।এর প্রায় ৪ ঘণ্টা পর রাত ১২টার দিকে জাহিদুলের ছেলে শফিকুল ব্যাপারীর (১৮) লাশও ধ্বংসস্তূপের নিচে পান ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।

বুধবার (১৭ জুলাই) দুপুর দেড়টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। তবে ফায়ার সার্ভিস মনে করছে ধসের ঘটনা ঘটেছে আগের রাতেই। ভবনটি এতটাই ঝুঁকিপূর্ণ যে সেখানে উদ্ধার কাজও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিস ভারী যন্ত্রপাতি নিয়ে কাজ করছে। যে অংশটি ধসে পড়েছে সেখানে সদরঘাটের ফল ব্যবসায়ী জাহেদ আলী ও তার ছেলে বসবাস করতেন।  

মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) রাতে ফলের দোকান বন্ধ করার পর থেকে জাহেদ আলীর মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। 

ফায়ার সার্ভিস জানায়, উদ্ধারের সময় আরেকটি দেয়াল ধসে পড়েছে। ভবনটির আশ-পাশে কোনও খোলা জায়গা নেই এবং ভবনে যাওয়ার রাস্তাও খুবই সরু। ফলে উদ্ধার চালাতে বেগ পেতে হয়। 

জানা গেছে, ভবনটি ব্রিটিশ আমলের। ছাদ নির্মাণ করা হয়েছে চুন, মাটি ও সুরকি দিয়ে। স্থাপনাটি নির্মাণে কোনও রড ব্যবহার করা হয়নি। গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে ভবনটি ধসে পড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিকালে উদ্ধার কাজ চলাকালে ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী বলেন, ঝুঁকির মধ্যেও উদ্ধার অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি। একটা আলমারি ছিল, উদ্ধারকার্যের সময় সেটা ওপর থেকে পড়েছে। সেটা সরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা এখনও নিশ্চিত না এখানে কেউ চাপা পড়েছে কি-না। লোক মুখে শোনা যাচ্ছে দুইজন নিখোঁজ রয়েছেন।

রাত ৮টায় কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান দৈনিক জাগরণকে বলেন, পাটুয়াটুলী এলাকায় পুরনো ভবনের ছাদ ধসে নিখোঁজ হওয়া ফল ব্যবসায়ী জায়েদ আলী ও তার ছেলের কোনও সন্ধান মেলেনি। যেহেতু পিতাপুত্র নিখোঁজ রয়েছেন, তাই আমরা ‍বিষয়টিকে কোনওভাবেই হালকাভাবে নিচ্ছি না। বেশ গুরুত্ব দিয়ে উদ্ধার অভিযান চলমান রাখা হয়েছে। 

জায়েদের প্রতিবেশী ফল বিক্রেতা শাহজাহান  জানান, ‘জায়েদ ও আমি একই এলাকায় ফল ব্যবসা করি। জায়েদকে কাজে সহযোগিতা করে তারই ছেলে। তারা দুজনই এই বাড়িতে থাকেন। মঙ্গলবার (১৬ ‍জুলাই) রাতে দোকান বন্ধ করে জায়েদ চলে যান। সকালে তার ফলের দোকান বন্ধ দেখতে পাই। তাকেও দেখা যায় নাই।’ 

স্থানীয়রা বলছেন, মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) রাতেই এটি ধসে পড়ে। আমরা এখানে এসে দেখি দমকল বাহিনী কাজ শুরু করে দিয়েছেন। জরাজীর্ণ দোতলা ভবনের চারপাশে কোনও রাস্তা নেই। সরু দেয়াল ঘেঁষে বাড়ি-ঘর। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের উদ্ধার অভিযানে সমস্যা হচ্ছিল। 

স্থানীয়রা বলছেন, টানা কয়েকদিন ধরে থেমে থেমে বৃষ্টির কারণে জীর্ণ ভবনটি ধসে পড়েছে। ভবনটি আগে থেকেই ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছিল।

জেডএইচ/এইচএম/এসএমএম/ এফসি