• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: আগস্ট ১৪, ২০১৯, ০৮:৫০ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ১৪, ২০১৯, ০৮:৫২ পিএম

অনেক স্থানে বর্জ্য অপসারণ হয়নি

অনেক স্থানে বর্জ্য অপসারণ হয়নি
নগর পরিচ্ছন্ন রাখতে কর্মীদের নিরন্তর চেষ্টা-সংগৃীত

রাজধানীতে পশু কোরবানির পর মহাসড়ক থেকে বর্জ্য অপসারণ করলেও এলাকার ভেতরে বেশিরভাগ বর্জ্যই অপসারণ হয়নি গত দুই দিনেও।

দুই সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, বেশিরভাগ মানুষই নির্ধারিত স্থানে কোরবানি দেয়নি। তাই ময়লা-আবর্জনা বেড়েছে। ৩ দিনের মধ্যে পরিচ্ছন্ন নগরী উপহার দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র। উত্তরের মেয়র বলেন, এরইমধ্যে পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে।

শহরকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করতে নিরলস প্রচেষ্টা। কোরবানির তৃতীয় দিনের বর্জ্য অপসারণে বুধবার সকাল থেকেই তৎপর ঢাকা দক্ষিণ সিটির পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের।

দিনের প্রথমভাগেই ডাম্পিং পয়েন্ট থেকে সরিয়ে ফেলা হয় বেশিরভাগ এলাকার বর্জ্য। ঝাড়ামোছা দিয়ে পরিষ্কার করা হয় বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার সরু গলি। এতে সন্তোষ প্রকাশ করেন নগরবাসী।

তবে মেরাদিয়া, বনশ্রী, রামপুরা বাজার, শাহজাহানপুর, কমলাপুরসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় ময়লার স্তূপ জমা থাকতে দেখা যায়। এর সঙ্গে জমতে থাকে তৃতীয় দিনের জবাই করা পশুর বর্জ্য।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন শতভাগ বর্জ্য অপসারণের দাবি করলেও মিরপুর,পল্লবী ও মনিপুর এলাকায় এখ‌নও আবর্জনার স্তূপ দেখা গেছে।

কমলাপুরের স্থায়ী বাসিন্দা সাহিন আবদুল বারী দৈনিক জাগরণকে বলেন, সাঈদ খোকন মেয়র হিসাবে বক্তব্য ভাল দিতে পারেন। কিন্ত তাকে দিয়ে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। তিনি বেশি কথা বলেন, কাজ করেন কম। তিনি যদি কাজে মনযোগী হতেন তাহলে এতক্ষণে সড়ক থেকে বর্জ্য সরে যেতো। 

রাজধানীর লালবাগের পোস্তা এলাকার চামড়ার আড়তের আশপাশের রাস্তা বেশ নোংরা। চলতি বছর ঈদে গরু ও ছাগলের চামড়ার দাম গত তিন দশকের ইতিহাসের সবচেয়ে কম হওয়া ও আড়তে দেরিতে পৌঁছানোর কারণে চামড়ায় পচন ধরায় মৌসুমি চামড়া বিক্রেতাদের অনেকেই চামড়া রাস্তায় ফেলে চলে যান। পোস্তা এলাকার রাস্তাঘাটজুড়েই এখন পরিত্যক্ত চামড়াসহ গবাদি পশুর বর্জ্যের ছড়াছড়ি। পোস্তার ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত দু-তিন দশকে এত চামড়া আর কোনও দিন নষ্ট হয়নি। এত বর্জ্যও কোনও দিন রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা যায়নি। 

পোস্তা ঘুরে দেখা গেছে, একাধিক গাড়ি দিয়ে বর্জ্য অপসারণ করা হচ্ছে। বর্জ্যের স্তূপ এত বেশি, অটোমেটিক মেশিন চালিয়ে সেগুলো গাড়িতে তোলাও কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ছিল। পরিচ্ছন্নকর্মী আবদুর রহিম জানান, বিগত বছরগুলোতে ঈদের পরদিনই পোস্তার প্রায় সব বর্জ্য অপসারণের কাজ শেষ হতো। কিন্তু এবার অনেক চামড়া নষ্ট হওয়ায় কয়েকটি অটোমেটিক যন্ত্রচালিত গাড়িতে তুলেও বর্জ্য অপসারণের কাজ শেষ করা যাচ্ছে না। 

আতিকুর রহমান নামে পোস্তার চামড়া শ্রমিক জানান, অন্যান্য বছর মাথার চামড়া বিক্রি করে ঈদের দু’দিনে ৬-৭ হাজার টাকা আয় করলেও এবার মাথার চামড়া কোনও আড়তদার কিনতে চাননি। অসংখ্য মাথার চামড়া রাস্তায় ফেলে দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। এ কারণেও পোস্তার রাস্তা নোংরা হয়েছে।

নগরীর কল্যাণপুর এলাকার বাসিন্দা মতিয়ার রহমান বলেন, দুই মেয়র বড় বড় কথা বলেন। মশা আর ডেঙ্গুর বিষয়ে তারা শুধু সভা-সমাবেশ করেছেন। কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।নগরবাসীর সাথে প্রতারণা ছাড়া কিছুই নয়। তাদের আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করার পরামর্শ দেন তিনি। 

ঢাকা দক্ষিণ সিটির উপ-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মিল্লাতুল ইসলাম দৈনিক জাগরণকে বলেন, যে সব স্থানে ময়লা সরানোর গাড়ি প্রবেশ করে না। সেই সব এলাকার ময়লা-আবর্জনা বিকল্প ব্যবস্থায় সরানো হচ্ছে। কোন জায়গায় এখনও ময়লা জমে আছে নগরবাসী জানালে দ্রুত সরানোর ব্যবস্থা করা হবে। 

তিনি বলেন, কমলাপুর এলাকায় গরুর হাটের ইজারাদারের কারণে হাটের ময়লা-আবর্জনা ছিলো, তা পরিষ্কার করা হয়েছে। 

ঢাকা উত্তর সিটির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) ইকরামুল হক খন্দকার বলেন, নগরীর কল্যাণপুর, মিরপুর মাজার রোড, শাহ অলীসহ বিভিন্ন স্থানের বর্জ্য দ্রুত সরানোর কাজ চলছে। আজ রাতেই সব ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করা সম্ভব হবে।

টিএইচ/এসএমএম

আরও পড়ুন