• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৮, ২০১৯, ০৯:৫২ এএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ৮, ২০১৯, ০৯:৫৮ এএম

হোসেনি দালানে হামলা 

নিহত সঞ্জুর মায়ের দিন কাটে অর্ধাহারে অনাহারে 

নিহত সঞ্জুর মায়ের দিন কাটে অর্ধাহারে অনাহারে 
সাজ্জাদ হোসেন সঞ্জু- ছবি: জাগরণ

আমার ছেলে সঞ্জুর কি দোষ ছিল। আমার স্কুল পড়ুয়া ছেলে হোসেনি দালানের ইমামবাড়ায় তাজিয়া মিছিল দেখতে গিয়েছিল। কেন তাকে জঙ্গিরা গ্রেনেড মেরে হত্যা করলো। সেখানে জঙ্গিরা গ্রেনেড মেরে আমার বুক খালি করে আমার ছেলেকে নিয়ে গেল। এঘটনার চার বছর অতিবাহিত হতে চললো। কেউতো আমার খবর নিল না। কেউতো আমার হারিয়ে যাওয়া ছেলেকে এনে দিল না। সরকারও খবর নিল না। এভাবেই মনের কথা ব্যক্ত করেন হোসেনি দালানের গ্রেনেড হামলায় নিহত সঞ্জুর মা রাশিদা বেগম। অভাব অনটনে সঞ্জুর মায়ের দিন কাটে অর্ধাহারে অনাহারে। 

সঞ্জুর বাবা নাসির উদ্দিন বলেন, আমার ছেলে মারা যাওয়ার পর ঢাকা মেডিকেল ওয়ার্ডে আমার ছেলে সঞ্জুর লাশ দাফনের জন্য নগদ ৫ হাজার টাকা দিয়েছিল সরকার। আর কিছুই দেয়নি। স্থানীয় সাংসদও কোন খবর নেয়নি। আমি এ সকল গ্রেনেড হামলাকারীদের ফাঁসি চাই।  এদের সর্বোচ্চ শাস্তি দেখে যেতে পারলে আমার ছেলে সঞ্জুর আত্মা শান্তি পাবে বলে আমার বিশ্বাস রয়েছে।  

জানা গেছে, পবিত্র আশুরা উপলক্ষে তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতির সময় পুরান ঢাকার হোসনি দালানে হ্যান্ড গ্রেনেড হামলায় দুই জন নিহত হয়েছিলেন। তার একজন হচ্ছে কিশোর সাজ্জাদ হোসেন সঞ্জু। তার বাবার নাম মোহাম্মদ নাসির, মা রাশিদা বেগম। কেরানীগঞ্জের শুভাঢ্যায় বাড়ি তাদের। স্থানীয় চড়াইল উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র ছিলেন সঞ্জু। তিনি গ্রেনেড হামলায় ঘটনাস্থলেই মারা যায়। শরীরের বেশির ভাগ অংশেই স্পিন্টার বিদ্ধ হয় তার।

সে সময় চিকিৎসকরা বলছেন, স্পিন্টারে ফুসফুস ছিদ্র হওয়া এবং অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন কিশোর সঞ্জু।

নিহত সঞ্জুর মা রাশিদা বেগম বলেন, ঢাকায় চারশ’ বছরের ইতিহাসে হোসেনি দালানে এমন ঘটনা দেখিনি। শিয়া সম্প্রদায়ের মিছিলে হামলা আর মারা গেল আমার ছেলে কিশোর সঞ্জু। তার নাম সাজ্জাদ হোসেন সঞ্জু। আমরা বংশগত ভাবে সুন্নী। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও দেড় শতাধিক ব্যক্তি। এদের কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। গত ২০১৫ সালের ৩০ অক্টোবর শুক্রবার রাত ১টা ৪৮ মিনিটে সেখানে পাঁচটি হ্যান্ড গ্রেনেড ছুড়ে মারা হয়। এর তিনটি বিস্ফোরিত হয়।

আহতদের প্রায় সবাই গ্রেনেডের স্পিন্টারে বিদ্ধ হয়েছেন। হুড়াহুড়ি করে পায়ের নিচে পড়েও কয়েকজন আহত হন। আহতদের মধ্যে ৭২ জন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, ৩২ জন মিটফোর্ড হাসপাতালে ও ১৭ জন মগবাজার কমিউনিটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। নগরীর বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছেন অন্যরা।

ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন যারা- উজ্জ্বল (১৫), মহসিন (৪০), রেজাউল (২৩), হেলাল (২৬), রাকিব (২৬), রাফেজা (১৫), কামাল (১৯), শুভ (৩১), নূর হোসেন (৫০), কায়েস দেড় বছর, মনির (৩৫), সাকিব (১৮), তাজরান (২৬), রিনা (৪৫), ছানোয়ার (৩৫), সালাহ উদ্দিন (৩৫), সকিব (১৯), হালিমা (২০), আশিক (২৬), এমডি বিশ্বাস (১৮), আজিম (১৯), চাষনী (১৪), আউয়াল (২০), সুমি (১৯), সিনহা (৮), হাসান (৫), রেজা (১), জনি (১৯), সাহিজদা (৪০), আজগর (১৭), হোসেন (১৮), আবদুল ওহাব (৬৪), বাবু (২৩), মতিউর (৩৫), আয়শা (৫০), জামি (২৪), রোনা (২৬), সাখাওয়াত (১২), সাবানী (৯), নাজির (৩২), হাসানুজ্জামান (৪৫), আজিম (২২), আরিফ (২০), এমডি আফসান (২০), রফিক (২০), সালাহউদ্দিন (১৮), সাহাজানি (২৪), রফিক (২৬), এমডি সহিদ (৩৮), আমির হোসেন (৩৮), ছানোয়ার (২৭), রাকিব (২৮), আবদুল মালেক (৩০), ওয়াসিম (১২), সাগর (২০), ইমরান (৩০), সাহিদা (৫০), ইব্রাহিম (২৪), তুহিন (১২), বাবলা (৪০), সাগর (২৫), সানফি (১১) ও রুবেল (২১)।


এইচ এম/টিএফ
 

আরও পড়ুন