• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৮, ২০১৯, ০৯:৫৬ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ৮, ২০১৯, ০৯:৫৮ পিএম

মূল্য পরিশোধ করেও ফ্ল্যাট বুঝে পাচ্ছেন না গ্রাহকরা

মূল্য পরিশোধ করেও ফ্ল্যাট বুঝে পাচ্ছেন না গ্রাহকরা

মোহাম্মদপুর ‘এফ’ ব্লক ফ্ল্যাট প্রকল্প

...............................

জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে নির্মাণাধীন মোহাম্মদপুর ‘এফ’ ব্লকে সীমিত আয়ের ৯০০ পরিবারের জন্য ফ্ল্যাট প্রকল্পের কাজ ধীরগতিতে চলছে। এ কারণে সরকারিভাবে বরাদ্দ পাওয়া ফ্ল্যাট গ্রাহক বা মালিকরা মূল্য পরিশোধ করার পরেও যথাসময়ে ফ্ল্যাট বুঝে পাচ্ছেন না। তাতে করে যেমন সীমিত আয়ের পরিবারগুলো একদিকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, অন্যদিকে বহু ফ্ল্যাট মালিকের বকেয়া টাকা ও রাজস্ব সরকারি খাতায় জমা হচ্ছে বিলম্বে।

৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে সীমিত আয়ের মানুষের জন্য এই প্রকল্পের উদ্যোগ নেয় সরকারের গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ। ১৬ তলাবিশিষ্ট ১৫টি ভবন নির্মাণ কাজ ধীরগতিতে চলছে। এসব ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হলে প্রতিটিতে ৬০টি পরিবার বসবাস করবেন। এ তথ্য জানিয়েছেন জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের অঞ্চল-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান। তিনি দৈনিক জাগরণকে বলেন, এই প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। এরই মধ্যে প্রকল্পের ২টি ভবন মালিকদের কাছে হস্তান্তর করে দেয়া হয়েছে। দুই ভবনে ১২০টি পরিবার বসবাস করার জন্য ফ্ল্যাটে উঠতে শুরু করে দিয়েছেন। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই আরও ৩টি ভবন হস্তান্তর করা হবে।

তবে অভিযোগ উঠেছে, অনেক ফ্ল্যাট মালিক টাকা জমা দেয়া পরেও সময়মতো ফ্ল্যাট বুঝে পাচ্ছেন না।পাশাপাশি ফ্ল্যাটের মূল্যবৃদ্ধিতে মালিকদের মধ্যে মিশ্রু প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।

ফ্ল্যাট মালিক সমিতির আহ্বায়ক সেলিম উদ্দিন দৈনিক জাগরণকে বলেন, সীমিত আয়ের মানুষের সাথে তামাশা শুরু করেছে সরকার। হঠাৎ করে ফ্ল্যাটের দাম বাড়ানোয়  আমরা যারপরনাই হতাশ। আমাদের পুঁজি ৩৫ লাখ। সেখানে ৬১ লাখ করা হলে কিভাবে মূল্য পরিশোধ করা সম্ভব। এ নিয়ে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানসহ সংস্থার বিরুদ্ধে টাকার কমানোর জন্য আদালতে মামলাও করেছেন ফ্ল্যাট মালিকদের অনেকেই।

আলী মাহমুদ নামে এক ফ্ল্যাট মালিক দৈনিক জাগরণকে বলেন, জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ যেসব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দিয়েছে তার মধ্যে বি আলম ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিল উত্তোলন করার পর কাজের গতি বাড়ায় নি।

জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটি বারবার সময় বাড়ানোর আবেদন করে নানা প্যাঁচের মধ্যে ফেলে গৃহায়ন কর্তৃপক্ষকে। এ কারণে প্ল্যানিং, অর্থ, গৃহায়ন মন্ত্রণালয় ও জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ ভবন নম্বর-৬ ও ৭ এর জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বি আলমকে দেয়া কাজের আদেশ বাতিল করে দেয়া হয়েছে চলতি বছরের ২৫ জুলাই।

‘এফ’ ব্লকে ৯০০ আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন হয় ২০০৬ সালে। তখন ৮০০ বর্গফুটের (সব মিলিয়ে ১১৯০) ফ্ল্যাট প্রতি বর্গফুট ১ হাজার ৫৯৬ টাকা হিসাবে ১৬ লাখ ৩১ হাজার টাকা ধার্য করা হয়। আর ১ হাজার বর্গফুটের (সব মিলিয়ে ১৩৯০) ফ্ল্যাটের দাম ধরা হয় ১৯ লাখ ৬৬ হাজার টাকা।

২০০৯ সালে ৮০০ বর্গফুট ফ্ল্যাটের দাম বাড়িয়ে ২৯ লাখ ৮০ হাজার টাকা এবং ১০০০ বর্গফুটের দাম নির্ধারণ করা হয় ৩৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা। 

‘এফ’ ব্লক প্রকল্পকারীদের প্রস্তাবের ভিত্তিতে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের বোর্ড সভায় সিদ্ধান্ত হয়, ৮০০ ও ১০০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাটের প্রতি বর্গফুটের দাম ৪ হাজার ৬০০ টাকা। এর ফলে ৮০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাটের দাম ৫৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। ১০০০ বর্গফুটের মোট দাম ৬৩ লাখ ৯৫ হাজার টাকা। এর বাইরে গাড়ি পার্কিং বাবদ আরও ৪ লাখ টাকা। সিদ্ধান্ত মোতাবেক বহু গ্রাহক মূল্য পরিশোধ করে এখনও ফ্ল্যাট বুঝে পান নি। এ কারণে তাদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তাদের দাবি দ্রুত সময়ে মধ্যে কাজ সমাপ্ত করে তাদের স্বপ্নের ফ্ল্যাট বুঝে দেয়া হোক।

টিএইচ/এসএমএম

আরও পড়ুন