• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৬, ২০১৯, ০৯:৩৮ এএম
সর্বশেষ আপডেট : অক্টোবর ১৬, ২০১৯, ০৯:৩৮ এএম

ফাহাদের মায়ের আহাজারি

বড় বাবা চলে গেছে, ছোট বাবাকে বুকে আগলে রেখে সান্ত্বনা পাব 

বড় বাবা চলে গেছে, ছোট বাবাকে বুকে আগলে রেখে সান্ত্বনা পাব 
ঢাকা কলেজের হোস্টেলে আবরার ফাইয়াজের কক্ষে তার বাবা-মা - ছবি : সংগৃহীত

‘ঢাকা শহরে আমার বাবারে কে দেখবো, তারে কে দেখশুন করবো, বড় বাবাকে হারাইছি, ছোট বাবারে হারাইতে চাই না, নিজের গ্রামে ছোট বাবারে বুকে আগলে ধইরা রাখমু’- এ কথা বলে কান্নায় ভেঙে পড়লেন নিহত বুয়েটছাত্র আবরার ফাহাদের মা রোকেয়া খাতুন। মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) বিকালে ফাহাদের ছোট ভাই ফাইয়াজ ঢাকা কলেজ থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বের হয়ে যাওয়ার সময় প্রশাসনিক শাখার সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তার আহাজারিতে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।

এসময় আবরার ফাহাদের বাবা বরকতুল্লাহ কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, দুই ছেলের একজন আমাদের ছেড়ে চলে গেছে, এই অবস্থায় সার্বক্ষণিক নিরাপত্তাজনিত অজানা মৃত্যুশঙ্কা মাথায় নিয়ে জীবন-যাপন আরও কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে। এসব বিষয় ভেবে ওর মা এবং পরিবারের অন্য স্বজনদের ইচ্ছায় এমন সিদ্ধান্ত নিতে হলো। এছাড়া, এক সন্তানকে হারিয়ে ফাইয়াজের মায়ের একাকী জীবনের বিষয়ও বিবেচনা করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, কুষ্টিয়া সরকারি কলেজও দেশের উল্লেখযোগ্য কলেজগুলোর মধ্যে অন্যতম। ফা্ইয়াজ ছোট, ওকে দেখেশুনে আগলে রাখার জন্য বড় ভাই ফাহাদ ছিল। যেখানে ফাহাদই চরম নৃশংসতার শিকার হলো, সেখানে আর কার ভরসায় ওকে (ফাইয়াজকে) ঢাকায় রাখব? আমি বিশ্বাস করি ফায়াজ কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ থেকেও পড়ালেখা করে ভালো রেজাল্ট করবে। সেই সঙ্গে ওর মাকেও সঙ্গ দিতে পারবে। তাতে ফাইয়াজের জন্য ওর মা কিছুটা হলেও দুশ্চিন্তামুক্ত থাকবে।

ঢাকা কলেজ সূত্র বলেছে,  বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) নিহত ছাত্র আবরার ফাহাদের একমাত্র ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে ভর্তির আবেদন করেছেন। নিরাপত্তা শঙ্কায় তিনি ঢাকা কলেজ থেকে ছাড়পত্র নিয়েছে। মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকা কলেজ কর্তৃপক্ষ অনাপত্তি ছাড়পত্র দিয়েছে। 

কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ কাজী মনজুর কাদির জানান, রোববার আবরার ফাইয়াজ কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে ভর্তির আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে এরইমধ্যে কলেজ কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে তাকে ভর্তি করে নেয়ার জন্য ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন অপেক্ষায় আছি ঢাকা কলেজ থেকে ছাড়পত্রের কপি হাতে পেলেই ফাইয়াজের ভর্তির প্রাথমিক কাজ সম্পন্ন হবে। 

মঙ্গলবার রাতেই ফাইয়াজ, তার বাবা-মা, মামাতো ভাইসহ স্বজনদের নিয়ে কুষ্টিয়ার উদ্দেশে রওনা হয়ে গেছেন।

প্রসঙ্গত, আবরার ফাহাদ তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। গত ৬ অক্টোবর (রোববার) রাতে শেরে বাংলা হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় সোমবার সন্ধ্যায় ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ ১৯ জনকে আসামি করে চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। হত্যাকাণ্ডে জড়িত হিসেবে যাদের নাম এসেছে তারা সবাই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী। এ ঘটনায় ইতোমধ্যে ১১ জনকে বহিষ্কার করেছে ছাত্রলীগ।

এইচ এম/ এফসি

আরও পড়ুন