• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৬, ২০১৯, ০৮:৪৮ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : অক্টোবর ১৬, ২০১৯, ০৯:৪১ পিএম

‘এখন বড় জিহাদ প্রয়োজন নিজের কু-প্রবৃত্তির বিরুদ্ধে’ 

‘এখন বড় জিহাদ প্রয়োজন নিজের কু-প্রবৃত্তির বিরুদ্ধে’ 
বক্তব্য রাখেন ব্যারিস্টার  ড. তুরিন আফরোজ - ফটোরিলিজ

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার  ড. তুরিন আফরোজ বলেছেন, ধর্মকে ব্যবহার করে তরুণদের জঙ্গিবাদে উস্কে দিতে জিহাদের ভুল ব্যাখ্যা করে অনেকে। সবার আগে জিহাদ করতে হবে নিজের নফসের এর বিরুদ্ধে। নিজের কু-প্রবৃত্তি দমন করতে হবে। সেটাই মূল জিহাদ। আজকে ভিন্নমতের জন্য মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে। অথচ আরবে নবীজী (সা.) এর সময়ে ৯০ শতাংশ অন্যধর্মের লোক ছিল, ১০ শতাংশ ছিল মুসলিম। তবুও সেখানে সবার সহাবস্থান ছিল। মদিনা সনদের মধ্য দিয়ে সকল ধর্মের মানুষের অধিকার নিশ্চিত হয়েছিল। তাই এখন সবচেয়ে বড় জিহাদ প্রয়োজন নিজের কু-প্রবৃত্তির বিরুদ্ধে। 

বুধবার (১৬ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর আজিমপুরে রায়হান স্কুল অ্যান্ড কলেজে ‘জাগো তারুণ্য, রুখো জঙ্গিবাদ’ স্লোগানে সুচিন্তা ফাউন্ডেশন আয়োজিত জঙ্গিবাদবিরোধী সেমিনারে তিনি একথা বলেন।

ড. তুরিন আফরোজ বলেন, এই বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে অসাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিতে। তাইতো এই বাংলার হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান আর মুসলমান সবাই মিলে এক হয়েছিলাম বাঙালি বলে। এখন আমরা স্বাধীন। একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ রাষ্ট্র। ধর্ম প্রত্যেকের ব্যক্তিগত বিশ্বাস এবং অধিকার। সেই বিশ্বাস ও অনুভূতির জায়গাটিতে তারা আঘাত করছে ক্ষমতা ও বাণিজ্যিক স্বার্থের লোভে। যার সঙ্গে ধর্মের আদৌ কোনও সম্পর্ক নেই। এই রাষ্ট্রটিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে প্রত্যেকের অধিকার এবং অংশগ্রহণের জায়গা থেকে।

অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মাঝে এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশের বিভিন্ন সেক্টরের সাফল্য তুলে ধরে যমুনা টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি মাহফুজ মিশু বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে সমৃদ্ধির পথে। এই এগিয়ে যাওয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে কিছু লোক সব সময় তৎপর। তারই একটির প্রকাশ জঙ্গিবাদ। এক ধরনের চরমপ্রন্থা থেকেই মূলত জঙ্গিবাদের উত্থান। জঙ্গিবাদিরা মানুষের চিন্তাকে বিছিন্ন করে যোগাযোগহীন করে তোলে। তাকে ভুল বোঝানোর মধ্য দিয়ে নির্দিষ্ট একটি রাজনৈতিক লক্ষ্যে, উদ্দেশে ব্যবহার করে। তখন ব্যক্তি আর ব্যক্তি থাকে না। তার কোনও বোধ থাকে না। সে তখন রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহৃত হয়। ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা দ্বারা পরিচালিত হয়।   

মিশু আরও বলেন, আমি যখন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তখন বাংলা ভাইয়ের দৌদণ্ডপ্রতাপ ও উত্থান দেখেছি। তৎকালীন সরকার বারবার বলেছে বাংলা ভাই মিডিয়ার সৃষ্টি। রাষ্ট্রই তখন জঙ্গিবাদ পৃষ্টপোষকতা করেছে।

সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের ডিরেক্টর কানতারা খান বলেন, জঙ্গিবাদ আমার কাছে শুধু ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে মানুষ হত্যা নয়। জঙ্গিবাদ অন্যায় সুযোগ নেয়া। পেট্টোল বোমার রাজনীতি করা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে কাজ করা। সামাজিক অনাচার তৈরি করা। নিজের মতের বিরুদ্ধে গেলে হত্যা করা। ইভটিজিং করা, ধর্ষণ করা। আজকে যারা ধর্মের নামে মানুষ হত্যা করছে, অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলতা করছে এরা কেউই প্রকৃত মুসলিম হতে পারে না। 

তিনি আরও বলেন, তরুণরাই শক্তি। এই তরুণদের হাত ধরেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন হয়েছে। ভাষা আন্দোলন, গণঅভ্যুত্থান, মুক্তিযুদ্ধ এই সবকিছুই সম্ভব হয়েছে। তাই এগিয়ে আসতে হবে তোমাদেরই।

অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য রাখেন রায়হান স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ রহিমা আফরোজ।

প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে ইসলাম ধর্মে জঙ্গিবাদ সমর্থন, অসমর্থন বিষয়ে মতবিনিময় করেন আশরাফুল আলম। 

সঞ্চালক ছিলেন আজ সারাবেলার সম্পাদক জব্বার হোসেন। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

এসএমএম