• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: আগস্ট ৪, ২০২০, ০৪:০২ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ৪, ২০২০, ০৪:০২ পিএম

স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা করছে না অধিকাংশরাই

ঢাকা ফিরতে শুরু করেছে শ্রমজীবী মানুষ

ঢাকা ফিরতে শুরু করেছে শ্রমজীবী মানুষ
নৌ-পথে ঢাকার সদরঘাটে আসা যাত্রীদের উপচেপড়া ভীড়-জাগরণ

ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছেন নাড়ির টানে গ্রামের বাড়িতে ঈদ করতে যাওয়া শ্রমজীবী মানুষ। একারণে দেশের সড়ক-মহাসড়ক, নৌ-বন্দরসহ অন্যান্য টার্মিনালগুলোতে রাজধানীমুখী মানুষের চাপ দেখা গেছে। ফেরি ঘাটগুলোতেও দেখা গেছে মানুষের ভিড়। তবে অধিকাংশ পরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা যায়নি। মঙ্গলবার (৪ আগস্ট) রাজধানীর সদরঘাট, সায়েদাবাদ, কল্যাণপুর-গাবতলী ও মহাখালী বাস স্ট্যান্ড এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

সকালে সদর ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, দেশের দক্ষিণাঞ্চল থেকে ঢাকায় ফেরা অধিকাংশ লঞ্চেই ছিল কর্মজীবী মানুষের ভিড়। লঞ্চের ডেক থেকে শুরু করে কেবিন এমনকি কেবিনের সামনের গলি পথেও মানুষের চাপ দেখা গেছে। টার্মিনালের প্রতিটি পন্টুনে ছিল উপচেপড়া ভিড়। স্বাস্থ্যবিধির কোনও নমুনা দেখা যায়নি। অধিকাংশ যাত্রীর মুখে ছিল না মাস্কও।

কথা হয় বরিশাল থেকে আসা যাত্রী মামুনুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘গতকাল অফিস খুলেছে। স্যারকে বলে একটি অতিরিক্ত ছুটি নিয়েছি। আজ অফিসে যোগ দিতে হবে। তাই লঞ্চে করে চলে এলাম ঢাকায়। লঞ্চে তো মানুষের জন্য পা রাখার জায়গা নেই। কোনওভাবে ডেকের এক কোণে একটু বিছানা করে নিয়েছি। রাতে বৃষ্টিও হয়েছে। নির্ঘুম রাত কেটেছি। মানুষের চেঁচামেচি আর প্রচণ্ড ভিড় দেখে মনে হচ্ছে যেন করোনা বলতে কিছুই আর নেই। এর পরেও আসতে হয়েছে। কারও মুখে মাস্কও নেই। অফিস তো আর এসব বুঝবে না। তাই করোনা ঝুঁকি মাথায় রেখেই চলে এসেছি।’

হাতিয়া থেকে ছেড়ে আসা লঞ্চ এমভি তাশরীফের যাত্রী হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘গতকাল সাড়ে ১২টার দিকে লঞ্চ ছাড়ার পর মনপুরা ও ভোলার কয়েকটি ঘাট থেকে যাত্রী নেওয়ার পরপরই পুরো লঞ্চ ভর্তি হয়ে যায়। মানুষের ভিড়ে কোথাও কোনও জায়গা ফাঁকা ছিল না। অনেক কষ্ট করে ঢাকায় এসেছি। আজকের তুলনায় আগামীকাল মানুষের ভিড় আরও বাড়বে।’

একই চিত্র দেখা গেছে গাবতলী বাস টার্মিনালেও। তবে অধিকাংশ বাসে স্বাস্থ্যবিধি পালন করতে দেখা গেছে। যারা বাসে পরিবার পরিজন নিয়ে এসেছেন তারা পাশাপাশি দুই সিট দখল করেই এসেছেন। বিষয় নিয়ে পরিবহন চালকরা জানিয়েছেন, যাত্রীরা মানতে রাজি হয়নি। তারা বলছেন, তারা আত্মীয়-স্বজন। সে কারণেই তারা পাশাপাশি সিটে বসেছেন।

পরিবহন চালকরা জানিয়েছেন, ঈদের আগ মুহূর্তে অধিকাংশ কর্মজীবী মানুষ প্রায় একসঙ্গেই ঢাকা ছাড়লেও ফেরার সময় আলাদা আলাদাভাবে ফেরেন। অনেকেই ঈদের ছুটির সঙ্গে বাড়তি ছুটি যোগ করে নেন। কেউ কেউ ঈদ শেষে অফিস ধরতে ঢাকায় ফিরলেও তাদের পরিবার বাড়িতে রেখে আসেন। সে কারণে ফেরার সময় সাধারণত যাত্রীদের চাপ কিছুটা কম থাকে।

ছুটি থেকে যশোর থেকে ঢাকায় ফিরেছেন সরকারি চাকরিজীবী শরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘গতকাল অফিস খুলেছে। ঊর্ধ্বতন স্যারকে বলে আরও দুই দিন ছুটি নিয়েছি। আজ টিকিট পেয়ে ঢাকায় চলে এসেছি। বৌ-বাচ্চাকে বাড়িতে রেখে এসেছি। আরও কয়েক দিন বেড়াবে। এর পর আসবে। কারণ এখন আসলে যাত্রীদের যে চাপ তাতে দুর্ভোগের পাশাপাশি করোনা সংক্রমণ ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।’

জানতে চাইলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, ‘যাত্রীদের চাপ কিছুটা বাড়ছে। তবে ফেরি ঘাটগুলোতে ভিড় থাকার কারণে জট লেগে যাচ্ছে। আমরা সব পরিবহন মালিকদের বলে দিয়েছি কোথাও স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন করে পরিবহনে যাত্রী নেওয়া যাবে না।’

এমএইউ