• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: এপ্রিল ১৭, ২০১৯, ১১:১৭ এএম
সর্বশেষ আপডেট : এপ্রিল ১৭, ২০১৯, ০৫:৫৪ পিএম

নৌ ধর্মঘট স্থগিত

প্রাণ ফিরেছে বরিশাল নদী বন্দরে

প্রাণ ফিরেছে বরিশাল নদী বন্দরে
মাঝ নদীতে নোঙর করে রাখা অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার লঞ্চ (সংবাদদাতার পাঠানো মঙ্গলবারের ছবি)

 

শ্রমিক ধর্মঘট স্থগিতে প্রাণ ফিরে পেয়েছে বরিশাল নদী বন্দর।  

বুধবার (১৭ এপ্রিল) সকাল ৬টা থেকে বরিশাল নদী বন্দর থেকে অভ্যন্তরীণ রুটগুলোতে যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল শুরু করেছে। তবে নৌ বন্দরে যাত্রীদের উপস্থিত একেবারেই কম।

এরইমধ্যে কীর্তনখোলার মাঝ নদীতে নোঙর করে রাখা অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার লঞ্চগুলো নদী বন্দরের জেটিতে এনে রাখা হয়েছে।

নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও বরিশাল আঞ্চলের সভাপতি শেখ মোহাম্মদ আবুল হাসেম জানান, শ্রমিকদের নিয়োগপত্র, সার্ভিস বুক, পরিচয়পত্র, শ্রমিকের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, খাদ্যভাতা ফ্রি, প্রভিডেন্ট ফান্ড, ভারতগামী জাহাজের ল্যান্ডিং পাস, জাহাজে কর্মরত অবস্থায় মৃত্যু হওয়া শ্রমিকের পরিবারকে ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ, নৌপথে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী ও ডাকাতি বন্ধ, পরীক্ষা বোর্ড মেরিন কোর্টের দুর্নীতি ও হয়রানি বন্ধ এবং নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনা সহ ১১ দফা দাবিতে সোমবার (১৫ এপ্রিল) রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে বরিশালসহ সারাদেশে নৌযান শ্রমিকদের ধর্মঘট শুরু হয়।

মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সকালে বরিশাল নদী বন্দর থেকে যাত্রীবাহী কোন লঞ্চ ছাড়েনি। রাতে বরিশাল থেকে ঢাকাগামীসহ দূরপাল্লার রুটের কোনও লঞ্চ ছেড়ে যাওয়া অথবা ছেড়ে আসেনি। যাত্রীবাহী লঞ্চ ও পণ্যবাহী নৌযানগুলো নদীর মাঝখানে নোঙর করে রাখা হয়। এর ফলে ভোগান্তিতে পড়তে হয় যাত্রীদের।

তবে নৌযান শ্রমিকদের ধর্মঘট কর্মসূচি স্থগিত করায় বুধবার সকাল থেকে পূর্বের ন্যায় যাত্রী ও পণ্যবাহী নৌযানগুলো চলাচল শুরু করেছে। নোঙর করে রাখা মালবাহী যানগুলো গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে গেছে। তাছাড়া ভোলা, মজুচৌধুরীর হাট, মেহেন্দিগঞ্জ, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি সহ অন্যান্য রুটের লঞ্চগুলো যাত্রী নিয়ে বরিশাল থেকে ছেড়ে গেছে।

নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন বরিশাল অঞ্চলের সভাপতি শেখ মোহাম্মদ আবুল হাসেম বলেন, রাতে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে শ্রম মন্ত্রণালয় এবং সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। সেখানে আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে ১ থেকে ৭ নম্বর বাস্তবায়ন এবং বাকি ৮ থেকে ১১ নম্বর দাবির বিষয়ে মন্ত্রণালয়কে অবহিত করার সিদ্ধান্ত হয়। এর ফলে নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন আপাতত তাদের কর্মসূচি স্থগিত করেছেন।

যাত্রী ও নৌ যানশূন্য একটি নৌ বন্দর  (সংবাদদাতার পাঠানো মঙ্গলবারের ছবি)

শ্রম প্রতিমন্ত্রীর আশ্বাসে নৌযান শ্রমিকদের ধর্মঘট স্থগিত

শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুন্নুজান সুফিয়ানের আশ্বাসে ধর্মঘট স্থগিত করে নৌযান শ্রমিকরা।

মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) রাতে শ্রম অধিদফতরে সঙ্গে নৌযান মালিক ও শ্রমিকদের দীর্ঘ বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে শ্রমিকদের বেতন-ভাতাসহ অন্যান্য দাবি ৪৫ কর্মদিবসের মধ্যে মীমাংসা করতে ১৭ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

১১ দফা দাবিতে রাজধানীসহ সারা দেশে নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট মঙ্গলবার সকাল থেকে শুরু হয়। মঙ্গলবার সকাল থেকে নৌযান শ্রমিকরা লাগাতার এই ধর্মঘট শুরু করে। ফলে ওইদিন সকালে ঢাকার সদরঘাট থেকে কোনো লঞ্চ ছেড়ে যায়নি। সরকার নির্ধারিত কাঠামোয় মালিকরা বেতন না দেয়ায় এই ধর্মঘট ডাকা হয়েছিল বলে শ্রমিকরা জানান।

ধর্মঘটের কারণে মঙ্গলবার বরিশাল থেকে ভোলা, মেহেন্দীগঞ্জসহ অভ্যন্তরীণ রুটে নৌযান চলাচল বন্ধ ছিল।

মোংলায় বন্দর এলাকায়ও ১১ দফা দাবিতে মঙ্গলবার সকাল থেকে শুরু হয় নৌযান (কার্গো, কোস্টার) শ্রমিকদের কর্মবিরতি। এ কর্মবিরতির ফলে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র বন্দর মোংলাসহ সারাদেশের নৌপথে পণ্য পরিবহন বন্ধ ছিল। 

জেডএইচ/এসকেএস/এসএমএম