• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: মে ২৬, ২০১৯, ০৮:৪২ এএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ২৬, ২০১৯, ০২:৫৬ পিএম

মেঘনা-গোমতী সেতু

অবশেষে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ভোগান্তির অবসান

অবশেষে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ভোগান্তির অবসান
মেঘনা-গোমতী সেতু

দেশের লাইফ লাইন হিসেবে পরিচিত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক মানেই যানজটের এক ভয়াবহ অভিজ্ঞতা। দীর্ঘ যানজটের কারণে গত সাত থেকে আট বছর ধরে এ মহাসড়কের অপর নাম ছিল ভোগান্তি। কিন্তু শনিবার (২৫ মে) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওই মহাসড়কের চারলেনে নবনির্মিত ‘মেঘনা-গোমতী সেতু’ খুলে দেয়ার পর মহাসড়কের চেহারাই পাল্টে গেছে। যেখানে দেড় ঘণ্টার রাস্তায় ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা যানজটে ব্যয় হতো। সে জায়গায় যানজটহীন রাস্তায় এক ঘণ্টা ৪০ মিনিটে ঢাকা থেকে কুমিল্লা শহরে চলে যাওয়া যাচ্ছে। অবসান ঘটেছে দীর্ঘ যানজটের ভোগান্তির।

কুমিল্লা থেকে ঢাকার যাতায়াত সময় পৌনে দুই ঘণ্টার মতো হলেও কখনও কখনও এ যাত্রায় ৯ থেকে ১০ ঘণ্টাও লেগে যেতো। এর কারণ ছিল অতিরিক্ত যানবাহন আর চার লেনের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দুই লেনের মেঘনা ও গোমতী সেতুর নির্মাণ কাজে যানজটে। সে কষ্ট আর ভোগান্তি শেষ হয়েছে। এখন আর দাউদকান্দির গোমতী সেতু এবং গজারিয়ার মেঘনা সেতুর ওপর দিয়ে নির্বিঘ্নে চলে যাচ্ছে যানবাহনগুলো। 

প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করলেন ঢাকা-কুমিল্লা মহাসড়কের চলাচলরত রয়েল এসি বাসের চালক আবদুল করিম। তিনি বলেন, এখন আর দীর্ঘ যানজটে বসে সময় অপচয় করতে হয় না। একবার বাসের দরজা বন্ধ করে টান দিলে আর কোথাও চাকা বন্ধ হয় না।

১৯২ দশমিক ৪৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কটি এশিয়ান হাইওয়ের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ-ভারতের সংযোগস্থলের পাশাপাশি দেশের রাজধানী ঢাকার সঙ্গে বন্দর নগরী চট্টগ্রামেরও যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম। এ বিষয়ে মেঘনা সেতুর প্রকৌশলী আমিনুল জানান, ৯৩০ মিটার দৈর্ঘ্যের দ্বিতীয় মেঘনা সেতুতে একটি জয়েন্ট অ্যাক্সপেনশন রয়েছে। যার ফলে এ সেতুতে যানবাহন চলাচলে কোনও বিঘ্ন সৃষ্টি হবে না। খুব দ্রুতগতিতে সেতুতে যানবাহন চলাচল করতে পারবে।

তিনি বলেন, পুরনো মেঘনা সেতুটি দুই লেনের হলেও নতুনটি চার লেনের। অর্থাৎ দু’টি সেতুতে মোট লেন ছয়টি। চার লেনের সড়ক দিয়ে যানবাহন এসে দু’টি সেতুতে ছয় লেনে চলাচল করতে পারবে। ফলে আগের মতো সেতুর কারণে আর যানজট হওয়ার কোনও শঙ্কা নেই। সেতুগুলো এখন যানজটমুক্ত থাকবে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

ইউনিক পরিবহনের চালক সোহেল আহমেদ জানান, এই মহাসড়কে প্রতিদিন চলাচলে কষ্টের কথা বলে শেষ করা যাবে না। যানজটে ভয়ঙ্কর রূপ ছিল এই মহাসড়ক। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয় এই সড়কে। নতুন সেতুটি খুলে দেয়ায় আমরা একটু স্বাচ্ছন্দে যেতে পারছি। পাশাপাশি যাত্রীরাও কষ্ট থেকে মুক্তি পেয়েছেন।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যানজট-ফাইল ছবি

বাংলাদেশ সরকার ও জাইকার অর্থায়নে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গোমতী নদীর ওপর ১৭টি স্প্যানের ১ হাজার ৪১০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১৭ দশমিক ৭৫ মিটার প্রস্থের দ্বিতীয় গোমতী সেতু এবং মেঘনা নদীর ওপর ১২টি স্প্যানের ৯৩০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১৭ দশমিক ৭৫ মিটার প্রস্থের দ্বিতীয় মেঘনা সেতু নির্মাণ করা হয়।

প্রায় সাড়ে ৩ বছর ধরে চলে ৪১তম মাসে এসে শেষ হয় সেতু দু’টির নির্মাণ কাজ। 

গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কে যাত্রীদের ভোগান্তি কমাতে দীর্ঘ প্রতীক্ষিত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দ্বিতীয় মেঘনা সেতু ও দ্বিতীয় গোমতী সেতু শনিবার (২৫ মে) উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সেতুটি উদ্বোধন করেন। 

এইচএম/এসএমএম