• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: জুন ১০, ২০২০, ০৬:৫৬ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ১০, ২০২০, ০৬:৫৭ পিএম

বসল ৩১তম স্প্যান

দৃশ্যমান হলো পদ্মা সেতুর ৪ হাজার ৬৫০ মিটার

দৃশ্যমান হলো পদ্মা সেতুর ৪ হাজার ৬৫০ মিটার
সংগৃহীত ছবি

পদ্মা সেতুর ৩১তম স্প্যান ৫এ সফলভাবে বসানো হয়েছে।

বুধবার (১০ জুন) বিকাল ৪টায় দেশি-বিদেশি প্রকৌশলীদের সহায়তায় এটি জাজিরা প্রান্তের ২৫ ও ২৬ নং পিলারের ওপর বসানো হয়। এটি বসানোর ফলে পদ্মা সেতুর ৪ হাজার ৬৫০ মিটার দৃশ্যমান হলো।

৩১তম স্প্যানটিই ছিল জাজিরা প্রান্তের সর্বশেষ স্প্যান। এ স্প্যানটি মাওয়া ও জাজিরাকে সংযুক্ত করেছে। এখন বাকী থাকল মাওয়া প্রান্তের আর ১০টি স্প্যান।

এসব তথ্য দিয়ে পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান মোহাম্মদ আবদুল কাদের জানান, করোনার মধ্যেও পদ্মা সেতুর কাজ থেমে নেই। স্বাস্থ্যবিধি মেনে এগিয়ে চলছে পদ্মা সেতুর কাজ। ৩১তম স্প্যানটি ছিল একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ। নদীর স্রোতে আর চ্যানেলের মুখে এটি স্থাপন করতে নৌ পথ বন্ধ করাতে হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এ স্প্যানটি সফলভাবে বসাতে পারায় এখন আর তেমন কোনও জটিলতা থাকলো না। মাওয়া প্রান্তের বাকী ১০টি স্প্যান বসাতে তেমন বেগ পেতে হবে না। এ বর্ষায়ই এ ১০টি স্প্যান বসানো সম্ভব হবে।

তিনি জানান, নৌপথ বন্ধ করার পর ধূসর রঙের ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের তিন হাজার ১৪০ টন ওজনের স্প্যানটিকে মাওয়া কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে তিন হাজার ৬০০ টন ধারণক্ষমতার ‘তিয়ান ই’ ভাসমান ক্রেন বহন করে নির্ধারিত পিলারের কাছে নিয়ে যায়। এরপর শুরু হয় স্প্যান বসানোর কার্যক্রম। ইঞ্চি ইঞ্চি মেপে এটিকে ভাসমান ক্রেনের সাহায্যে বসিয়ে দেয়া হয় ২৫ ও ২৬ নং পিলালের ওপর।

এর আগে গত ৩১ মে পদ্মা সেতুর ৩০তম স্প্যান পিলারের ওপর বসানো হয়। স্প্যানটি জাজিরা প্রান্তের ২৬ ও ২৭ নম্বর খুঁটির ওপর স্থাপন করা হয়। এতে দৃশ্যমান হয় সেতুর ৪৫০০ মিটার বা সাড়ে ৪ কিলোমিটার। আর ৩১তম স্প্যানটি বসে যাওয়ার মধ্যে পদ্মা সেতু দৃশ্যমান হলো ৪ হাজার ৬৫০ মিটার। গত ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত মূল সেতুর কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৮৭ ভাগ। নদী শাসনের কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৭১ ভাগ। আর সেতুর সার্বিক কাজের অত্রগতি হয়েছে ৭৯ ভাগ।

সেতুতে ২ হাজার ৯৫৯টি রেলওয়ে  এবং ২ হাজার ৯১৭টি রোডওয়ে স্ল্যাব বসানো হবে। বর্তমানে রেলওয়ে স্ল্যাব বসেছে ১১০৫ টি ও রোডওয়ে স্ল্যাব ৬৩০টি বসানো হয়েছে।

নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান মোহাম্মদ আবদুল কাদের আরও জানান, ৩১তম স্প্যানটি বৃহস্পতিবার (১১ জুন( বসানোর পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু ১১ জুন থেকে ১৩ জুন পর্যন্ত অবহাওয়া খারাপ থাকার আশঙ্কা করা হচ্ছিল। তাই একদিন আগে বুধবার এটি বসানোর পরিকল্পা করা হয়। এটি জাজিরা ও মাওয়া প্রান্তের সংযোগ স্থল। যেখানে একটি নৌ চ্যানেল দিয়ে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌরুটের ফেরিসহ অন্যান্য নৌযান চলাচল করে। এ চ্যানেল দিয়ে এসকল নৌযান চলাচল করলে স্প্যানটি পিলালের উপর বসাতে মারাত্মক ঝুঁকি থেকে যায়। তাই নৌযান বন্ধ রাখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয়া হয়েছিল। জনসাধারণকে অনুরোধ করা হয়েছিল বুধবার শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌরুট পরিহার করে ঢাকা-পাটুরিয়া-ভাংগা রুট ব্যবহার করার জন্য। আমাদের অনুরোধে সারা দিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নৌ পথ বন্ধ রাখায় ৩১তম স্প্যানটি পিলারের উপর বসাতে তেমন বেগ পেতে হয়নি।

৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে সেতুটি দ্বিতল হবে, যার ওপর দিয়ে সড়কপথ ও নিচের অংশে থাকবে রেলপথ। সেতুর এক খুঁটি থেকে আরেক খুঁটির দূরত্ব প্রায় ১৫০ মিটার। একেকটি খুঁটি ৫০ হাজার টন লোড নিতে সক্ষম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসিকতায় নিজস্ব অর্থায়নে ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। মূলসেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে চীনের ‘সিনো হাইড্রো করপোরেশন’। কালেরকণ্ঠ।

এসএমএম

আরও পড়ুন