• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: মার্চ ১৪, ২০১৯, ০৭:৪৩ পিএম

কেমিক্যাল মুক্ত শুঁটকি তৈরিতে স্বাবলম্বী ২০ পরিবার

কেমিক্যাল মুক্ত শুঁটকি তৈরিতে স্বাবলম্বী ২০ পরিবার

 

কেমিক্যাল মুক্ত শুঁটকি মাছে ভাগ্য খুলেছে বরিশালের উজিরপুর উপজেলার হারতা ইউনিয়নের অন্তত ২০টি পরিবারের। বছরজুড়ে নিজেদের তৈরি শুঁটকি যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।

এতে পরিবারগুলো অর্থনৈকিভাবে সমৃদ্ধশীল হচ্ছে। পাশাপাশি তাদের তৈরি ক্ষতিকারক কেমিক্যাল মুক্ত শুঁটকির চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকারি পৃষ্ঠপোশকতা পেলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে হারতায় তৈরি শুঁটকি বিদেশে রফতানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

জানাগেছে, বরিশালের উজিরপুর উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা হারতা। এখানকার কালবিলা, জামবাড়ি ও হারতা গ্রামের অন্তত ২০টি পরিবার শুঁটকি তৈরি করে জীবিকা নির্বাহের পথ বেছে নেন। ট্যাংরা, পুঁটি, চিংড়ি, ভাটা, ইলিশসহ অন্তত ১০ প্রজাতির মাছের শুঁটকি তৈরি করে থাকেন তারা।

বিশেষ করে হারতা গ্রাম থেকে শুঁটকি তৈরি’র সূচনা হয়। এই গ্রামটির ৩টি পয়েন্টে প্রায় চার দশক ধরেই বিভিন্ন প্রজাতির মাছ দিয়ে শুঁটকি তৈরি হচ্ছে। পরিবারগুলোর অন্তত ৪০ জন শুঁটকি তৈরির কাছে সরাসরিভাবে যুক্ত রয়েছেন। যে কারণে উত্তর হারতা গ্রামটি এখন শুঁটকি পল্লী হিসেবেই পরিচিত।

হারতার শুঁটকি বিক্রেতা চিত্ত রঞ্জন হালদার জানান, প্রায় ৪০ বছর ধরে তিনি হারতা বাজার সংলগ্ন নদীর পাড়ে শুঁটকি মাছ তৈরি করে আসছেন। তার সঙ্গে রয়েছেন সুখরঞ্জন মাঝি ও সুভাষ হালদার।

এরা নানা প্রজাতির মাছের শুঁটকি তৈরি করে ফরিদপুর, ফেনী, কিশোরগঞ্জ, ভৈরব, ভাঙা ও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রফতানি করছেন। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ২০ মেট্রিক টন দেশীয় নদী’র মাছের শুঁটকি দেশের বিভিন্ন স্থানে রফতানি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিত্ত রঞ্জন হালদার।

শুঁটকি তৈরির কারিগর সুখরঞ্জন মাঝি বলেন, দেশি মাছের দুই ধরনের শুঁটকি তৈরি করে থাকেন তারা। কোন প্রকার ক্ষতিকারক কেমিক্যাল প্রয়োগ ছাড়াই এই শুঁটকি তৈরি করে থাকেন। যে কারণে উজিরপুরের শুঁটকি’র চাহিদা দেশজুড়েই রয়েছে।

জামবাড়ি গ্রামের মৎস্য শিকারী কৃষ্ণ পাল বলেন, গত ২০ বছর ধরে আমি জেলের কাজ করে আসছি। তবে মাছ কোন আড়ৎএ বিক্রি করছি না। মাছ ধরে শুঁটকি পল্লী নিয়ে বিক্রি করছি। এতে ভালো মুনাফাও পাওয়া যায়।

এদিকে, স্থানীয় শুঁটকি ব্যবসায়ী বলেন, ‘উজিরপুরের সম্ভাবনাময় শুঁটকি শিল্পের উন্নয়নে সরকারের সহায়তা প্রয়োজন। এতে শুঁটকি শিল্পের প্রসারের পাশাপাশি জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন হবে। ব্যবসায়ীরা নিজেরা সাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি এলাকার যুবসমাজ বেকারত্বের অভিশাপ থেকে রক্ষা পাবে।

উপজেলার হারতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হরেন রায় বলেন, দীর্ঘদিন ধরে হারতায় ৩টি খোলায় নানা ধরনের শুঁটকি তৈরি হচ্ছে। বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকার আসছে শুঁটকি ক্রয়ের জন্য। এই তিনটি’র পাশাপাশি আশপাশের গ্রামগুলোতেও শুঁটকি তৈরিতে আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই সরকারি সহায়তা পেলে হারতা শুঁটকি পল্লী’র শুঁটকি বিদেশেও রফতারি করা সম্ভব হবে বলে আশাবাদী তিনি।

কেএসটি