• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মার্চ ৩০, ২০১৯, ০৮:৩১ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মার্চ ৩১, ২০১৯, ০২:৩৩ এএম

মানবেতর জীবন যাপন করছেন বান্দরবানের ১১ বিদ্যালয়ের শিক্ষক

মানবেতর জীবন যাপন করছেন বান্দরবানের ১১ বিদ্যালয়ের শিক্ষক

বান্দরবানের ১১টি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ না হওয়ায় শিক্ষকেরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। শুধু শিক্ষকরাই নয়, বিদ্যালয় জাতীয়করণ না হওয়ায় সরকারি সুযোগ সুবিধা বঞ্চিত হয়ে অনেক ছাত্রছাত্রী ও বিদ্যালয় থেকে ঝরে পড়ছে। শিক্ষার মান উন্নয়নে বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোকে দ্রুত জাতীয়করণের দাবি উঠেছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে। 
সারাদেশের বেশির ভাগ প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ হয়ে গেলেও বান্দরবানে ১১টি বিদ্যালয় এখনো বেসরকারিভাবে পরিচালিত হয়ে আসছে। 
বেসরকারিভাবে পরিচালিত হওয়ায় বিদ্যালয়ে রয়েছে নানান সমস্যা। পর্যাপ্ত পানি সরবরাহের অভাব, স্যানিটেশন ব্যবস্থার সমস্যা ও বিদ্যুৎ সরবরাহের অভাবে ব্যাহত হচ্ছে শ্রেণী কার্যক্রম। এক বেঞ্চে গাদাগাদি করে বসতে হচ্ছে অনেক শিক্ষার্থীদের, আবার উপবৃত্তির টাকা না পাওয়ায় বাবা মায়ের স্বল্প আয়ে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারছে না দুর্গম পাহাড়ের অনেক বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা।
 
লামা উপজেলার ধুইল্যা পাড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩য় শ্রেণীর ছাত্র মো. আবুল কালাম বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ে এক বেঞ্চে গাদাগাদি করে বসতে হচ্ছে অনেক শিক্ষার্থীদের। এক বেঞ্চে ৫ থেকে ৬ জনকে এক সাথে বসে আমাদের বিদ্যালয়ে ক্লাস করতে হয়। 

বান্দরবানে বেসরকারিভাবে পরিচালিত বিদ্যালয়গুলো হলো- বান্দরবান সদরের খমঙখ্যংওয়া, এম্পু পাড়া, মশাবনিয়া, হেব্রন পাড়া, গুংগুরু আগা পাড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। লামা উপজেলার নুনারঝিরি, মেরেঞ্জা, ধুইল্যা পাড়া, কমিউনিটি সেন্টার বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আর নাইক্ষংছড়ি উপজেলার শৈলশক্তি, জোমখোলা বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

লামা উপজেলার ধুইল্যা পাড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণীর ছাত্রী জান্নাতুল মাওয়া জানান, আমরা সরকারি কোন উপবৃত্তির টাকা পায় না, টাকা না পাওয়ায় বাবা মায়ের স্বল্প আয়ে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারছি না।

শিক্ষকরা জানান, ২০১২ সালে বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের প্রতিটি বিদ্যালয়কে সরকারিভাবে পরিচালনা করা হবে বলে ঘোষণা দেন, আর সেই ঘোষণার দ্রুত বাস্তবায়ন চাই শিক্ষকরা। শিক্ষকরা জানান, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরে ও শিক্ষা বিভাগের তদারকির অভাবে এখনো বান্দরবানের অনেক প্রাথমিক বিদ্যালয় বেসরকারিভাবে পরিচালনা করতে হচ্ছে, আর এতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে। 

বান্দরবানের হেব্রন পাড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক লাল রাম নোয়াম বম জানান, আমরা অনেক কষ্ট করে খেয়ে না খেয়ে, বেতন না নিয়ে বিদ্যালয়ে শ্রম দিয়ে যাচ্ছি। 

বান্দরবানের লামা উপজেলার সরই মৌজার ধুইল্যা পাড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক মো. জসীম বলেন, আমরা বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অনেক কষ্টে আছি, শীঘ্রই যেন পার্বত্য এলাকার বেসরকারি বিদ্যালয়গুলো জাতীয়করণ করা হয়।

বান্দরবানের জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. তবিবুর রহমান জানান, বান্দরবানে অনেক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হয়েছে এবং কিছু বিদ্যালয় রয়েছে যেগুলো এখনো জাতীয়করণ করা হয়নি, তবে শীঘ্রই এই প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো জাতীয়করণের আওতায় চলে আসবে।

প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থী ঝরে পরা রোধ এবং সরকারি সুযোগ সুবিধা পেয়ে উন্নত শিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নেয়ার জন্য শীঘ্রই বেসরকারিভাবে পরিচালিত বিদ্যালয়গুলো সরকারি করার জোর তাগিদ দিয়েছে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। 

কেএসটি