• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: এপ্রিল ২, ২০১৯, ০৯:৩৫ এএম
সর্বশেষ আপডেট : এপ্রিল ১৩, ২০১৯, ০৮:৩৩ পিএম

ডাক্তার সংকটে আশাশুনি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে

ডাক্তার সংকটে আশাশুনি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে

সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তার সংকটসহ বিভিন্ন দুরবস্থার কারণে স্বাস্থ্য সেবার মান ভেঙ্গে পড়েছে।বাধ্য হয়ে রোগীরা হাসপাতালে না গিয়ে প্রাইভেট ক্লিনিক ও জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যাচ্ছে। ফলে রোগীদের ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

১১টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত আশাশুনি উপজেলা।অধিকাংশ এলাকা প্রত্যন্ত ও যাতায়াত ব্যবস্থা অনুন্নত। অনেক ইউনিয়নে প্রধান প্রধান সড়ক নির্মিত হলেও অভ্যন্তরীণ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা যথেষ্ট অনুন্নত। এলাকার মানুষ সাধারণ অসুখ বিসুখে হাসপাতাল মুখো হতে চায়না। অধিকাংশ মানুষ পল্লী চিকিৎসকদের কাছেই চিকিৎসা নেন। আবার অনেকে হাসপাতালে আসতে চাইলেও ডাক্তার, ওষুধ এবং সর্বোপরি অন্যান্য সুযোগ সুবিধা না থাকায় একবার গেলে দ্বিতীয়বার আর না যাওয়ার চেষ্টা করেন। 

উপজেলার বিভিন্ন স্থান ও ছোট-বড় বাজারে ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠেছে ক্লিনিকের নামে অসংখ্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। যেখানে অধিকাংশ ক্ষেত্রে চিকিৎসা সেবার নামে অপচিকিৎসা করা হয়ে থাকে বলে অভিযোগ রয়েছে। এলাকার গরিব ও দীনমজুর মানুষ চিকিৎসার জন্য যাবে কোথায়! তাই অনেকে আশাশুনি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যান বাধ্য হয়ে। 

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, এ হাসপাতালে ২১টি পদের বিপরীতে টিএইচএ সহ মাত্র ৪ জন এমবিবিএস ডাক্তার কর্মরত আছেন। এছাড়া একজন আয়ুর্বেদ ও একজন ডেন্টাল সার্জন আছেন। নার্সের ১৬টি পদের বিপরীতে আছেন ১২ জন, যার মধ্যে ৩ জন ডেপুটেশানে অন্যত্র কর্মরত আছেন। ৩ জন চিকিৎসকের মধ্যে একেক জনকে বাধ্য হয়ে একটানা ২দিন করে ডিউটিতে রাখতে হয়। আর প্রতি সপ্তাহে একদিন করে হাসপাতালে কোনো চিকিৎসক থাকেন না। ফলে সপ্তাহে একদিন করে চিকিৎসক ছাড়াই হাসপাতাল চলে। 

বর্তমান সময়ে পাড়াগায়েও হারিকেন-ল্যাম্পের ব্যবহার এখন আর চোখে না পড়লেও হাসপাতালে গেলে ওই গুলো খুজে পাওয়া যায়। রাতে বিদ্যুৎ লোডশেডিং হলে হাসপাতাল কক্ষে একটি করে হারিকেন জ্বালিয়ে আলোর ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। আইপিএস দীর্ঘদিন বিকল হয়ে পড়ে আছে। জেনারেটর থাকলেও ব্যবহার করা হয় না। এক্সরে মেশিন নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। প্যাথলজিষ্ট নেই। অ্যানেস্থেসিয়া ও গায়নি চিকিৎসক নেই। ডা. ইসকেন্দার আলম নামে একজন (অ্যানেস্থেসিয়া) সহকারী সার্জন হাসপাতালে পোষ্টিং থাকলেও তিনি কি কারণে ও কার বদৌলতে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেপুটেশনে বহাল তবিয়তে রয়েছেন সেটা প্রশ্নবিদ্ধ ? সপ্তাহে ২ দিন এখানে তাকে আসার কথা থাকলেও তিনি আসেননা। বরং আশাশুনি থেকে বেতন ঠিকই তিনি উঠিয়ে নিচ্ছেন। জনবল না থাকায় সরকারের ডিএসএফ প্রোগাম চালানো হচ্ছে না।

এছাড়া ওষুধ স্বল্পতা, চিকিৎসকের অভাবে ঠিকমত চিকিৎসা সেবা না পাওয়াসহ রয়েছে অসংখ্য অভিযোগ। তারপরেও এলাকার অসহায় মানুষ চিকিৎসা পেতে হাসপাতালে আসছেন। হাসপাতলের বেডে প্রতিদিন গড়ে ৬০/৭০ জন করে রোগী থাকেন। আউটডোরে (জরুরি ও বহিঃ বিভাগ) প্রতিমাসে গড়ে ৪৫০০ রোগী আসেন। 

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. অরুন কুমার ব্যানার্জী বলেন, চিকিৎসক সংকট বরাবর এ হাসপাতালে রয়েছে। অ্যানেস্থেসিয়া না থাকায় চাহিদা থাকলেও ডেলিভারী করানো সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়া অনেক সমস্যা আছে। অসুবিধা ও সমস্যার কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিত ভাবে অবহিত করা হলেও কোনো সমাধান হচ্ছে না।

বিএস