ফেনীতে মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে নিপীড়নের পর পুড়িয়ে হত্যার অন্যতম পরিকল্পনাকারী শরিফুল ইসলাম ওরফে শরিফকে আটক করেছে পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
বুধবার (১৭ এপ্রিল) সকালে ঢাকার কামরাঙ্গীরচর এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ফেনী পিবিআইয়ের অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার মনিরুজ্জামান। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি তিনি।
এর আগে সোমবার (১৫ এপ্রিল) রাতে নুসরাতের সহপাঠী বান্ধবী কামরুন্নাহার মনি ও মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে জান্নাতুল আফরোজকে আটক করেছে পিবিআিই।
আলোচিত এ হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত ১৭ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ও পিবিআই। এরা হলেন- সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদ দৌলা, কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মুকছুদ আলম, শিক্ষক আবছার উদ্দিন, নুসরাতের সহপাঠী আরিফুল ইসলাম, নূর হোসেন, কেফায়াত উল্লাহ জনি, মোহাম্মদ আলা উদ্দিন, শাহিদুল ইসলাম, অধ্যক্ষ সিরাজের ভাগনি উম্মে সুলতানা পপি, জাবেদ হোসেন, যোবায়ের হোসেন, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন, মো. শামীম, কামরুন নাহার মনি, জান্নাতুল আফরোজ মনি ও শরিফুল ইসলাম ওরফে শরিফ। মামলার এজহারভুক্ত আটজনের মধ্যে সাত আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হাফেজ আবদুল কাদের নামে এজহারভুক্ত আরও এক আসামিকে এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
এদিকে রোববার (১৪ এপ্রিল) রাতে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইনের আদালতে নুসরাত হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্ধি দিয়েছে মামলার অন্যতম আসামি নুর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামিম। জবানবন্দিতে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার নির্দেশে তারা নুসরাতের গায়ে আগুন দিয়েছে বলে স্বীকার করেছে। এছাড়াও হত্যার আগের দিন শরিফ সেখানে পরিকল্পনা বৈঠক ও পরদিন গেইট পাহারার দায়িত্বে ছিল। তাদের স্বীকারেক্তির ভিত্তিতে পিবিআই ঘটনার সঙ্গে জড়িত অপর আসামিদের আটক করেছে।
প্রসঙ্গত, গত ৬ এপ্রিল সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসায় যান নুসরাত জাহান রাফি। সেখানে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। ১০ এপ্রিল (বুধবার) রাত সাড়ে ৯টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান অগ্নিদগ্ধ নুসরাত। পরদিন সকালে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ স্বজনদের বুঝিয়ে দিলে বিকালে সোনাগাজী পৌরসভার উত্তর চরচান্দিয়া গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
এসসি/