• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ২, ২০১৯, ০৬:৪০ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ৩, ২০১৯, ১২:৪২ এএম

ডায়াবেটিস রোগীদের  রোজা পালনে করনীয়

ডায়াবেটিস রোগীদের  রোজা পালনে করনীয়

এমনিতে ডায়াবেটিস রোগীদের রোজা পালন করতে তেমন কোন সমস্যা নেই। তবে যেসব ডায়াবেটিস রোগীদের অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা গ্রহন করা জরুরি।বিশেষ করে যেসব ডায়াবেটিস রোগীরা বিগত ৩ মাসের মধ্যে ১ বা একাধিক বার হাইপো বা হাইপার গ্লাইসেমিয়াতে(সুগার অতিরিক্ত কমেযাওয়া বা বেড়ে যাওয়া) আক্রান্ত হয়েছেন তারা রোজা শুরু হবার পূর্বেই ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহন করুন।বিশেষ করে যারা টাইপ ১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত তারা রোজার পূর্বেই ইনসুলিনের ডোজের ব্যাপারে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহন করুন।যেসব ডায়বেটিস রোগীদের অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস থাকে তাদের ডায়াবেটিস কিটোএসিডোসিসে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা থাকে। যা মারাত্মকএবং জীবন যাবার মত ঘটনা ঘটতে পারে। তাই,রোজার পূর্বেই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে আনার চেষ্টা করুন। 

যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের রোজা শুরু হবার অন্তত তিন মাস আগে থেকে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার চেস্টা করতে হবে।যাদের ডায়াবেটিস দীর্ঘদিন নিয়ন্ত্রনে থাকে না,তারা কিডনির জটিলতাতে ভুগতে পারেন তাই রোজার পূর্বেই মেডিক্যাল চেকআপের মাধ্যমেজেনে নিন ডায়াবেটিস ছাড়া আপনি আর কোন জটিলতায় আক্রান্ত হয়েছেন কিনা?
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখার জন্যে প্রয়োজন প্রতিদিন সঠিক ও সুষম খাবার গ্রহন,নিয়মিত ব্যায়াম,পর্যাপ্ত ঘুম,সময়মত ওষুধ বা ইনসুলিন গ্রহন। আর এই কাজ গুলোর অনিয়ম হলেই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে থাকেনা।তাই যারা সিয়াম পালন করতে ইচ্ছুক তারা সিয়াম শুরুর পূর্বেই এক মাসব্যাপি সিয়াম সাধনার জন্য ভালোভাবে প্রস্তুতি গ্রহন করুন।

ডায়াবেটিস রোগীদের ইফতার
 
*ইফতারিতে ডায়াবেটিস রোগীদের অতি ভোজন পরিহার করতে হবে।
*দুইটি খেজুরের সাথে এক গ্লাস পানি অথবা ১ গ্লাস দুধ দিয়ে ইফতারি শুরু করা যেতে পারে।
*সাথে রাখুন ১ কাপ টক-মিষ্টি মিক্স ফল,১/২ কাপ ছোলা,১কাপ মুড়ি,একটি পেয়াজু এবং একটি বেগুনী।
*শরবতের পরিবর্তে ডায়াবেটিস রোগীরা ইফতারে ১ গ্লাস ডাবের পানি খেতে পারেন।এছাড়া,ইফতারি থেকে শুরু করে ঘুমাতে যাবার আগ
পর্যন্ত পর্যাপ্ত পানি পান করুন।


রাতের খাবার যেমন হবে
ভাত অথবা রুটি,সাথে মাছ অথবা মাংস,শাকসবজি ডাল এবং সালাদ রাখুন।ঘুমাতে যাবার আগে ১/২ কাপ টক দই খেতে পারেন।সেহেরীসেহেরী ডায়াবেটিস রোগিদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।সেহেরিতে এমন সব খাবার খেতে হবে যেন সারাদিন ব্যাপি এনার্জি প্রদান করতে হবে।সেহেরিতে প্রোটিন এবং ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার রাখুন একটু বেশি পরিমানে।ভাতের সাথে মাছ,মাংস বা ডিম,শাকসবজি,ডাল,সালাদ রাখুনসঠিক পরিমানে।সেহেরিতে ১ কাপ দুধ খেতে পারেন।ডিহাইড্রেশন এড়াতে পর্যাপ্ত পরিমানে পানি পান করতে ভুলবেন না।
সতর্কতা:
যারা ইনসুলিন এবং মেডিসিন গ্রহন করেন তারা ডাক্তারের সাথে কথা বলে ইনসুলিনের বা মেডিসিনের  ডোজ ঠিক করে নেবেন।রোজার সময় নিয়মিত ব্লাড সুগার চেক করবেন।যদি রোজা রাখা সুগার কমে গিয়ে মাথা ঘোরা,পানি পিপাসা,চোখে ঝাপসা দেখেন তবে রোজা ছেড়ে দেয়াই ভালো।যেসব ডায়াবেটিস রোগীরা কিডনি জটিলতাতে ও ভুগছেন তারা ডাল এবং ডালের তৈরি সব ধরণের খাবার পরিহার করবেন। রমজান মাসে ডায়াবেটিস রোগীদের অতিরিক্ত ব্যায়াম করার দরকার নেয়।তারাবীর নামাজ পড়লে ব্যায়ামের কাজ হয়ে যায়।তবে ইফতারিএবং রাতে খাবার পর হালকা হাটা হাঁটি করতে পারেন।


লেখক : পুষ্টিবিদ, বেক্সিমকো ফার্মা লিমিটেড