• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ১৩, ২০১৯, ১০:০৩ এএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ১৩, ২০১৯, ০৪:০৬ পিএম

৭ বছর ধরে পড়ে আছে ভাঙা সেতুটি 

৭ বছর ধরে পড়ে আছে ভাঙা সেতুটি 
ঝিনাইগাতীর কাটাখালীর সেতুটি ভেঙে পড়ে থাকায় পাশে সাঁকো দিয়ে পারাপার হচ্ছে এলাকাবাসী

খালের দুপাড়ের বসবাসকারীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে প্রায় তিন যুগ আগে নির্মাণ করা হয় শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার পাইকুড়া গ্রামে ‘কাঁটাখালী সেতু’। নির্মাণের প্রায় দুই যুগ সেতুর সুফল পেলেও প্রায় সাত বছর আগে পাহাড়ি ঢলে সেতুটি ভেঙে পড়ে যায়। এরপর থেকেই এখনো পড়ে আছে ভাঙা অবস্থায়। দীর্ঘদিন ধরে এই অবস্থা থাকলেও কর্তৃপক্ষ এখনো কোন ব্যবস্থা নেননি অভিযোগ স্থানীয়দের। আর উপজেলা প্রকৌশলী বলছেন সেতু নির্মাণে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে অবগত করা হয়েছে। অনুমোদন পেলেই পুনঃনির্মিত হবে এ সেতুটি।

সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেতুটি বিধ্বস্ত হয়ে ভাঙা অবস্থায় খালের পানিতে পড়ে আছে। এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীরা ভেঙে যাওয়া সেতুর পাশ দিয়ে দুইটি বাঁশের নড়বড়ে সাঁকো দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। চলতি বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ি ঢলের পানির প্রবল চাপে বা স্রোতের টানে যেকোনো সময় সাঁকোটি ভেঙে যেতে পারে বলে এলাকাবাসী শঙ্কা প্রকাশ করে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, সেতুটি ভাঙার সাত বছর পার হলেও এখনো সংস্কার বা পুনঃনির্মাণ করা হয়নি। যার ফলে সেতু দিয়ে যাতায়াতকারীরা পড়ছেন চরম দুর্ভোগ ও ভোগান্তিতে। সেতুটির পশ্চিম পার্শ্বের স্কুল, মসজিদ, মাদ্রাসা থাকায় স্থানীয়রা বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে যাতায়াত করলেও সাঁকো দিয়ে কোনো রোগী বা উৎপাদিত পণ্য আনা-নেওয়া করা সম্ভব নয়। ফলে এ অঞ্চলের প্রায় ১০ গ্রামের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ ৪ কিলোমিটার ঘুরে উপজেলা শহরে যাতায়াত করছে। তাদের দাবি, সেতুটি দ্রুত নির্মাণ করা হোক।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, প্রায় তিন যুগ আগে উপজেলার সদর ইউনিয়নের পাইকুড়া গ্রামে কাঁটাখালী খালের ওপর এলজিইডি সেতুটি নির্মাণ করে। কিন্তু ২০১০ সালে পাহাড়ি ঢলে সেতুটির সংযোগ সড়কের মাটি সরে যায়। তখন এলাকাবাসী ওই স্থানে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে সাঁকো বানিয়ে কোনো রকমে যাতায়াত চালু রাখে। কিন্তু ২০১২ সালে আবার প্রচণ্ড পাহাড়ি ঢলে সেতুটি সম্পূর্ণরূপে ধসে খালের মাঝখানে পড়ে যায়। এরপর থেকে সেতুসংলগ্ন কোনাগাঁও, পাইকুড়া, সুরিহারা, খিলাগাঁও, দড়িকালিনগর, নয়ানীপাড়া, বালিয়াচসহ ১০ গ্রামের প্রায় ৭ হাজার মানুষ চলাচলে চরম দুর্ভোগ ও ভোগান্তি শিকার হচ্ছে।

কোনাগাঁও গ্রামের শিক্ষার্থী রবিন, মুন্নি, মামুনসহ আরও অনেকেই বলেন, এখন হয়ত বৃষ্টি নেই, তাই নদীতে স্রোত নেই। তাই আমরা বিদ্যালয়ে যেতে পারছি। কিন্তু বর্ষা মৌসুমে খালে প্রচণ্ড স্রোত থাকে। তখন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাঁকোর ওপর দিয়ে কলেজে যাতায়াত করতে হয়। আবার অনেক তিন-চার কিলোমিটার পায়ে হেঁটে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করে। 

পাইকুড়া এআরপি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরনবী আজাদ বলেন, কাটাখালী খালে সেতুর অভাবে ১০ গ্রামের প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী তিন কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে যাতায়াত করে। আবার অনেকে বাঁশের সাঁকো দিয়ে বিদ্যালয়ে আসার সময় পড়ে গিয়ে জামা-কাপড় ভিজে যায়। যার ফলে ছাত্ররা ভেজা শরীরে বিদ্যালয়ে আসে। 

উপজেলা প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বলেন, এ খালের ওপর ভেঙে যাওয়া সেতুটি পুনঃনির্মাণের জন্য এমআরআরআইডিপি প্রকল্পের আওতায় মাটি পরীক্ষা ও ডিজাইনের কাজ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অনুমোদন পাওয়া গেলে সেখানে সেতু নির্মাণ করা হবে।

কেএসটি