• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: মে ১৪, ২০১৯, ০৩:৫৭ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ১৪, ২০১৯, ০৩:৫৭ পিএম

ক্যানসার আক্রান্ত কৃষকের ধান কেটে দিলেন স্কাউটস সদস্যরা

ক্যানসার আক্রান্ত কৃষকের ধান কেটে দিলেন স্কাউটস সদস্যরা

ময়মনসিংহের ফুলপুরে দরিদ্র কৃষকদের ধান কেটে দিয়ে সহায়তা করছেন ফুলপুরের হেলডস ওপেন স্কাউট গ্রুপের সদস্যরা। প্রথম দিনে (১৩ মে সোমবার) ক্যানসার আক্রান্ত এক কৃষকের ৮০ শতাংশ জমির ধান কেটে দিয়েছেন তারা।

ক্যানসারে আক্রান্ত দরিদ্র বর্গাচাষি আবু বক্কর সিদ্দিক। তার ৮০ শতাংশ জমিতে বোরোর বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু সেই ধান কাটার মতো শক্তি তাঁর নেই। পরিবারে লোকজন নেই। শ্রমিক নিয়োগের টাকাও নেই। অথচ এ ধান কেটে তাঁর নিজের চলতে হবে। আবার জমির মালিককেও ধান দিতে হবে।

এদিকে বর্তমান বাজারে এক মণ ধানের দাম ৫০০ টাকা। আর একজন শ্রমিকের এক দিনের মজুরি ৯০০ টাকা। অসুস্থ ও দারিদ্র্যের কারণে ধান কাটা নিয়ে বিপাকে পড়ে যান আবু বক্কর। সে সময়ই সহযোগিতার হাত বাড়ালেন স্কাউট সদস্যরা। সোমবার (১৩ মে) ধান কেটে কৃষকের বাড়ি পৌঁছে দিলেন তারা।

সামাজিক কর্মকাণ্ডের জন্য পুরো উপজেলায় অতিপরিচিত এ স্কাউট গ্রুপটি। এই গ্রুপের দলনেতা তাসফিক হক নাফিও জানান, এবার ধান কাটার শ্রমিকের মজুরি বেশি হওয়ায় অনেক দরিদ্র চাষিই ধান কাটতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন। তাই তারা সিদ্ধান্ত নেন কয়েকজন দরিদ্র কৃষকের জমির ধান তারা স্বেচ্ছাশ্রমে কেটে দেবেন। এরপর তারা তালিকা তৈরি করেন। এ রকম ১১ জন কৃষকের তালিকা তারা তৈরি করেছেন। তালিকার প্রথম নামটি ছিল কৃষক সিদ্দিকের। গতকাল সোমবার তারা সেই কৃষকের ধান কেটে দেন। ধান কাটার পর তা কৃষকের বাড়িতেও পৌঁছে দেন।

নাফিও জানান, কৃষক সিদ্দিকের বাড়ি উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে। সকাল ৮টায় তারা সদরে জমায়েত হন। এরপর ৯টায় রূপসী ইউনিয়নের ঘোমগাঁও গ্রামে পৌঁছে ধান কাটা শুরু করেন। গতকাল সোমবার তারা ছিলেন মোট ২০ জন। তবে তাদের দলে মোট সদস্য ৫০ জন। তারা পালা করে এ কাজ করবেন।

ধান কাটায় অংশ নেওয়া স্কাউট মিলন মিয়া বলেন, প্রথমবার ধান কাটলাম। অনেক ভালো লেগেছে যে একজন অসহায় মানুষের উপকার করেছি।

কৃষক আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, আমি দুই বছর ধরে ক্যানসারে আক্রান্ত। চিকিৎসা করে সর্বস্বান্ত হওয়ার পথে। অনেক কষ্ট করে বোরো ধান করলেও শ্রমিক না পেয়ে হতাশায় ছিলাম।

হেলডস ওপেন স্কাউট গ্রুপের কো-চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান বলেন, ধানের দাম কম, আবার শ্রমিক সংকটের বিষয়টি এখন সারা দেশের সমস্যা। এ সমস্যা সমাধানের কার্যকর উপায় খুঁজতে গিয়ে আমরা মানববন্ধন বা দাবি আদায়ের কোনো কর্মসূচি পালন না করে সরাসরি সমস্যা সমাধানে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিই। সেই সিদ্ধান্ত থেকেই ধান কাটা। আমাদের এ উদ্যোগ চলমান থাকবে। সদস্যরা আগে কোনো দিন ধান কাটেননি। স্বেচ্ছাশ্রমে ধান কেটে তারা আনন্দিত।

এনআই