• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ১৫, ২০১৯, ০৫:১০ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ১৫, ২০১৯, ১১:১৬ পিএম

হাঁস পালনে স্বাবলম্বী ছকিমুদ্দি

হাঁস পালনে স্বাবলম্বী ছকিমুদ্দি
ছকিমুদ্দির হাঁসের খামার- ছবি: জাগরণ

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার পাঁচগাছী ইউনিয়নের পানাতি পাড়া গ্রামের মৃত খয়বর আলীর পুত্র মো. ছকিমুদ্দি (৪০)। দরিদ্র পরিবারের সন্তান ছকিমুদ্দি অর্থের অভাবে লেখাপড়া করতে পারেননি। কোন কর্মদক্ষতা বা অন্য কোন পেশা সম্পর্কে অভিজ্ঞতা না থাকায় হাঁস পালনে মনোনিবেশ করেন।  

জানা যায়, দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেয়া ছকিমুদ্দি লেখাপড়া না জানায় বা অন্য কোন পেশা সম্পর্কে অবগত না থাকায় জীবিকা নির্বাহের তাগিদে প্রাথমিকভাবে ৪০টি হাঁস হাট থেকে কিনে এনে পালন শুরু করেন। শত অভাব অনটনের মাঝেও খেয়ে না খেয়ে তিনি হাঁসের পরিচর্যা করেন। বর্তমানে তার হাঁসের সংখ্যা মোট প্রায় ৫শ'। তার মধ্যে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৬০টি হাঁস ডিম দেয়। এভাবে অনবরত ৩ মাস পর্যন্ত হাঁস ডিম দেয়। প্রতি হালি ডিম বিক্রি করেন ৪৮ টাকায়। এতে প্রতিদিন তার আয় হয় গড়ে প্রায় ৭শ’ ২০ টাকা। একটি হাঁস পরিপক্ক হতে সময় লাগে ৩ থেকে ৪ মাস। পরিপক্ক প্রতিটি হাঁস বাজারে বিক্রি করেন ২শ’ ৫০ থেকে ৩শ’ টাকা। পুনরায় হ্যাচারি থেকে হাঁসের বাচ্চা কিনে এনে পালন শুরু করেন। প্রতিটি হাঁস পরিপক্ক করে গড়ে তুলতে খাদ্য ও ওষুধ বাবদ লাগে প্রায় ১শ’ থেকে ১শ’ ৫০ টাকা। 

হাঁস খামারি ছকিমুদ্দি বলেন, আমি দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর ধরে হাঁস পালন করে আসছি। আমি নিতান্তই দরিদ্র পরিবারের সন্তান। শত অভাবের মাঝেও না খেয়ে থেকেও হাঁসের পরিচর্যা করেছি। আল্লাহর রহমতে এই হাঁস খামার থেকে আয়কৃত টাকা দিয়ে গরু কিনেছি, জমি কিনেছি, ছেলে মেয়ের লেখাপড়ার খরচ বহনসহ পরিবারের যাবতীয় মৌলিক চাহিদা পূরণ করে আসছি। 

তিনি আরও জানান, অন্যের জমিতে কৃষি কাজ না করে নিজেই হাঁস পালনের উদ্যোগ গ্রহণ করে কোনো অভাব ও অনটনের শিকার না হয়ে বেশ ভালোভাবেই দিন যাপন করছি। 

এ ব্যাপারে তরুণ হাঁস খামারি লিমন জানান, আমি ছকিমুদ্দি ভাইয়ের হাঁসের খামার দীর্ঘ দিন থেকে দেখে আসছি। আমি তার হাঁসের খামার দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে নিজেও ৫শ’ বয়সের হাঁসের বাচ্চা নিয়ে এসেছি। বর্তমানে বাচ্চাগুলোর বয়স ২৫ দিন হলো। একটি বাচ্চাও কোনো প্রকার রোগে আক্রান্ত হয় নি।

এ ব্যাপারে পাঁচগাছী ইউপি চেয়ারম্যান দেলওয়ার হোসেন বলেন, আমি ছকিমুদ্দির হাঁসের খামার দেখে অভিভূত। সে এই হাঁস পালন করে বেশ ভালোভাবেই তার পরিবার পরিজন নিয়ে সুখে শান্তিতে দিন যাপন করছে। আমি আশা করি তার এই সাফল্যে দেখে এলাকার অনেকেই অনুপ্রাণিত হয়ে হাঁসের খামার করে বেকারত্ব দূর করবেন। 


টিএফ