• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: মে ২১, ২০১৯, ০৯:৫৫ এএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ২১, ২০১৯, ০৯:৫৫ এএম

সিন্ডিকেট ভেঙে কৃষকের ধান ক্রয় করল ইউএনও

সিন্ডিকেট ভেঙে কৃষকের ধান ক্রয় করল ইউএনও

সরকারের সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে খাদ্য শষ্য ক্রয় করার জন্য ঘোষণা দিলেও খাদ্য বিভাগের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং রাজনৈতিক নেতাদের চাপে তা সম্ভব হয়ে উঠে না। ফলে সরকারের ধান, চাল গম সংগ্রহের উদ্দেশ্য সফলভাবে সম্ভম হয় না এবং ন্যায্য মূল্যে থেকে বঞ্চিত থাকে সাধারণ কৃষক। 

এবার নাটোরে সেই সিন্ডিকেট ভেঙে সরাসরি প্রকৃত কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয় করার জন্য মাঠ নেমেছে প্রশাসন। সোমবার (২০ মে) সরাসরি প্রকৃত কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয় নাটোর সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার জেসমিন আকতার বানু। এসময় সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মেহেদুল ইসলাম প্রকৃত কৃষক নিশ্চিত করেন এবং গোডাউনের খাদ্য কর্মকর্তারা ধান সংগ্রহ করেন। এসময় জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক শফিকুল ইসলাম, ভারপ্রাপ্ত গোডাউন কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদসহ অন্যান্যেরা উপস্থিত ছিলেন। ধান ক্রয়ের প্রথম দিনে প্রকৃত কৃষকের কাছ থেকে ৩ টন ধান ক্রয় করা হয়।

নাটোর সদর উপজেলা বুড়িবটতলা এলাকার থেকে আসা কৃষক শফিকুল ইসলাম বলেন, বাজারে ধান বিক্রি করতে গেলে দাম পাওয়া যাচ্ছে সাড়ে ৫শ থেকে ৬শ টাকা মণ। এতে অনেক টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় ইউএনও স্যার এর মাধ্যমে একটন ধান গোড়াউনে দিতে পেরেছি। এতে আমার কিছুটা হলেও লোকসান কমিয়ে আসবে। 

নাটোর কৃষি বিভাগ জানায়, এ বছর নাটোর জেলায় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ৬১ হাজার ৪৩৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়। যা থেকে ৪ লাখ ১৪ হাজার ৬৮৬ মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ। তবে এত পরিমাণে ধান উৎপাদন হলেও নাটোরের সাতটি উপজেলায় এবার মাত্র ২ হাজার ১১৫ মেট্রিক টন সংগ্রহ করবে খাদ্য বিভাগ। এর মধ্যে নাটোর সদরে মাত্র ৯৪ মেট্রিক টন।

এ ব্যাপারে সদর উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার মেহেদুল ইসলাম বলেন, কৃষি কার্ডের মাধ্যমে আমরা প্রকৃত কৃষক নির্বাচন করবো। এক্ষেত্রে আমার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের কাজে লাগাতে পারি। তারা প্রকৃত কৃষকদের নির্বাচন করে দিলে তার কাছ থেকেই ধান ক্রয় করা হবে। কোন কৃষকের যদি ধানে আদ্রতা বেশি থাকে, সে পরে ধান শুকিয়ে সঠিক আদ্রতায় দিতে পারবে। প্রতিদিন একটি ইউনিয়ন করে আমরা ধান ক্রয় করবো। এতে করে কৃষক লাভবান হবে। 

সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার জেসমিন আকতার বানু বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের নির্দেশক্রমে আমরা সরাসরি প্রকৃত কৃষকদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ শুরু করেছি। একজন কৃষক এক থেকে সর্বোচ্চ দেড় টন ধান দিতে পারবেন। এতে করে কৃষকরা লাভবান হবে এবং বাজারে ধান সংগ্রহের প্রভাব পড়লে অন্য কৃষকরাও ন্যায্য মূল্য পাবে। এখন থেকে গোডাউনে কোন ধান ক্রয় করবো না। ইউনিয়ন পর্যায় থেকে ধান ক্রয় করবো। এক্ষেত্রে কৃষি বিভাগের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে কোন কৃষকের ধান রয়েছে, সেটা নিশ্চিত করবে। এরপর ধানের আদ্রতা মেপে ক্রয় করার মতো হলে ওই কৃষকের ধান ইউনিয়ন ক্রয় সেন্টারেই দিতে পারবে। মঙ্গলবার ও বুধবার দিন থেকে আমরা এই কার্যক্রম শুরু করবো। 

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক শফিকুল ইসলাম বলেন, মন্ত্রণালয়ের কঠোর নির্দেশনা রয়েছে আগে ধান ক্রয় করতে হবে। সে জন্যই ধান ক্রয় অভিযান শুরু করেছি। প্রকৃত কৃষকের কাছ থেকে যাতে ধান ক্রয় করতে পারি সেজন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে কঠোর নির্দেশনা রয়েছে। আশা করছি ধান ক্রয় অভিযানের সাথে সাথে বাজারে ধানের দাম বৃদ্ধি পাবে এবং কৃষক সংকট কাটিয়ে উঠতে পারবে। 

কেএসটি