• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ৯, ২০১৯, ০৫:০০ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ৯, ২০১৯, ০৫:০০ পিএম

প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ

গাইবান্ধায় অভাবের তাড়নায় সন্তান বিক্রি

গাইবান্ধায় অভাবের তাড়নায় সন্তান বিক্রি

অভাবের তাড়নায় বাধ্য হয়ে নিজেদের সন্তানকে বিক্রি করে দিয়েছেন অসহায় দুই বাবা। মাত্র ৭০ হাজার টাকায় দুই পরিবারের ৩টি সন্তানকে বিক্রির নির্মম এ ঘটনাটি ঘটেছে গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায়।

অনুসন্ধানে জানা যায়, এই উপজেলার সর্বানন্দা ইউনিয়নে অভাবের তাড়নায় তিনটি সন্তান বিক্রির ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে একটি বাচ্চাকে ৫০ হাজার এবং অপর দুটি বাচ্চাকে ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করা
হয়েছে।

রাজবাড়ি গ্রামের হাবিল মিয়া অভাবের তাড়নায় মাত্র ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে নিজের সন্তানকে তুলে দেন এক বিত্তবান ইঞ্জিনিয়ার পরিবারের হাতে।

তবে আবেগতাড়িত হয়ে পেশায় কৃষক হাবিল মিয়া বলেন, ‘আমি গরিব মানুষ। এই অভাবের সংসারে নয়জন সন্তান নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছিলাম। নিজের কোনো জায়গা-জমি না থাকায় মানুষের জায়গায় থাকি।’ বাচ্চা বিক্রির টাকা দিয়ে তিনি বড় মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন বলে জানান।

অপরদিকে একই উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের উত্তর ধর্মপুর গ্রামের ভূমিহীন ও পেশায় রিকশাচালক আশরাফুল ইসলাম বেশির ভাগ সময় চট্টগ্রামে থাকেন।

সন্তান বিক্রির বিষয়ে আশরাফুল বলেন, ‘আমার স্ত্রী পরপর  দুবার যমজ সন্তান প্রসব করেছিল। তাদের আমি ভরণ-পোষণ করতে পারছিলাম না। অভাবের কারণে দুটো বাচ্চা বিক্রি করে দিয়েছি। একটাকে বিক্রি করে পেয়েছি ৫ হাজার টাকা, আরেকজনকে বিক্রি করে পেয়েছি ১৫ হাজার টাকা।’

শ্রীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, ‘বিষয়টি দ্রুত সমাধানের জন্য ইউএনও স্যার এসেছিলেন। সবকিছু দেখেশুনে ভুক্তভোগীর জন্য আবাসনের স্থায়ী ব্যবস্থাসহ ভ্যানগাড়ি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘ইউএনও স্যার এখন থেকে ভিজিএফ, ভিজিডি, কাবিখা, টিআরসহ সরকারের সকল সুযোগ-সুবিধা তাদের বাধ্যতামূলকভাবে দেওয়ার নির্দেশনা দিয়ে গেছেন।’

এ ব্যাপারে সর্বানন্দা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুর রহমান বলেন, ‘এমন ঘটনা আমার জানা ছিল না। আপনাদের মাধ্যমে জেনে ইউএনও ও এমপি সাহেবসহ আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। তারা দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।’

উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোলেমান আলী বলেন, ‘ঘটনাটি জানার পরেই হতদরিদ্র ওই পরিবারগুলোর কাছে গিয়েছিলাম। তাদেরকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।’

গাইবান্ধা-৫ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী মুঠোফোনে বলেন, পরিবার দুটিকে সার্বিক সহযোগিতা করার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসক আব্দুল মতিন বলেন, ‘ঘটনা জানার পরই আমি ইউএনও সাহেবকে ওইসব অসহায়, গৃহহীন ও দুস্থ পরিবারকে ঘর করার জন্য জায়গা-জমি, আয়-রোজগার করার জন্য ভ্যানগাড়িসহ সকল প্রকার সহযোগিতা করার নির্দেশ দিয়েছি। আশা করছি, দ্রুতই তাদের সমস্যার সমাধান হবে।’

এনআই