• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ১০, ২০১৯, ০৮:২৪ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ১০, ২০১৯, ০৮:২৪ পিএম

কাঠুয়া ধর্ষণ

হত্যা মামলায় ৮ জনের মধ্যে ৩ জনের যাবজ্জীবন

হত্যা মামলায় ৮ জনের মধ্যে ৩ জনের যাবজ্জীবন

 

কাঠুয়ায় আট বছরের শিশুকে গণধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় আট জনের মধ্যে ছয় জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছে পাঠানকোট আদালত। তাদের মধ্যে তিনজনকে সারা জীবন জেলেই থাকতে হবে। এদের সর্বনিম্ন যাব্বজীবন কারাদণ্ড হতে পারে বলে মনে করা হয়েছিল। এই ঘটনায় মোট আটজনের মধ্যে ৬ জনকে দোষী সাব্যস্ত করা হল। বিশাল নামে এক নাবালক অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস করা হয়েছে। তবে যে সমস্ত ধারায় চার্জশিট জমা পড়েছে তাতে ফাঁসির সাজা দেওয়ার সম্ভাবনা ছিল বলে মনে করেন আইনজীবী মহলের একটা বড় অংশ।

মন্দিরের কেয়ারটেকার সঞ্জি রাম, স্পেশাল পুলিশ অফিসার দীপক খাজুরিয়া এবং পরবেশ কুমার নামে এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই তিনজনকে গণধর্ষণের দায়ে ২৫ বছর কারাবাসের নির্দেশ ও এক লক্ষ টাকা করে জরিমানার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা। অপরাধের সহযোগী সাব ইন্সপেক্টর আনন্দ দত্ত, হেড কনস্টেবল তিলক রাজ এবং বিশেষ পুলিশ আধিকারিক সুরেন্দর ভার্মা প্রমাণ নষ্টের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়েছে। এদের পাঁচ বছর করে কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মামলায় ১৫ পাতার চার্জশিট পেশ করা হয়েছিল। গত বছরের ১০ জানুয়ারি ৮ বছরের এক বালিকাকে অপহরণ করে ধর্ষণ করে খুন করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত সাঞ্জি রাম। এ ঘটনা ঘিরে উত্তাল হয়ে উঠেছিল গোটা দেশ। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেই বিচারপ্রক্রিয়া কাঠুয়া থেকে পাঠানকোটে সরানো হয়। তাদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন নির্যাতিতার বাবা। তাদের আইনজীবীকেও হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন। সেকারণেই কাঠুয়া থেকে বিচারপ্রক্রিয়া পাঠানকোটে সরানোর আবেদন জানান তিনি।

১. জুন মাসের ৩ তারিখ শুনানি প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। গোটা পর্বটি ক্যামেরাবন্দি হয়েছে। আদালত জানায় আজ মামলার রায়দান হবে। সেই মতো রায় দিয়েছে আদালত।

২. গত বছরের জানুয়ারি মাসের ১০ তারিখ জম্মুর কাঠুয়া জেলায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের এই শিশুকন্যাকে অপহরণ করে স্থানীয় মন্দিরে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হয়। গোটা ঘটনায় উত্তাল হয় দেশ।

৩. দিন সাতেক বাদে শিশুটির দেহ উদ্ধার হয়। তারও তিন দিন বাদে এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার বয়স নিয়ে কিছুটা সংশয় থাকায় এখনও তার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। সে নাবালক কিনা তা খতিয়ে দেখবে জম্মু-কাশ্মীরের হাইকোর্ট। তারপরই এই মামলায় তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে কিনা।

৪. গণধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় গোটা দেশজুড়ে নিন্দার ঝড় ওঠে অপরাধীদের শাস্তির দাবিতে পথে নামে গোটা ভারত। ঘটনার তদন্ত শুরু করে ক্রাইম ব্রাঞ্চ। তথ্য প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ একজন সাব-ইন্সপেক্টর ও হেড কনস্টেবলকে গ্রেফতার করা হয়। ঘটনার মূল অভিযুক্ত প্রাক্তন রাজস্ব অধিকর্তা সাঞ্জি রাম মার্চ মাসের ২০ তারিখ আত্মসমর্পণ করে।

৫. ক্রাইম ব্রাঞ্চ তদন্ত করে বলে এই ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার নেপথ্যে আরও একটি বিষয় রয়েছে। একটি বিশেষ সম্প্রদায়কে ভয় দেখাতেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করে ক্রাইম ব্রাঞ্চ।

৬. গোটা আদালত চত্বরে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে। কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে না যায় তা নিশ্চিত করতে চাইছে প্রশাসন।

৭. এই ঘটনায় তার ছেলে বিশাল, বন্ধু আনন্দ দত্ত এবং দুজন বিশেষ পুলিশ অফিসার যাদের নাম দীপক খাজুরিয়া এবং সুরেন্দর বর্মা সহ কয়েকজন জড়িত বলে দাবি পুলিশের।

৮.এই ঘটনাকেও ঘিরে বিজেপি এবং তাদের তৎকালীন জোট শরিক পিডিপি'র মধ্যে মতোভেদ দেখা দেয়। বিজেপি নেতা তথা রাজ্যের দুই মন্ত্রী চৌধুরি লাল সিং এবং প্রকাশ গঙ্গা অভিযুক্তদের হয়ে মিছিলে হাঁটেন। আজ রায় স্বাগত জানিয়েছেন কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহেবুবা মুফতি। তিনি বলেন এই রায়কে স্বাগত জানাই। তাছাড়া এরকম একটা মামলা নিয়ে যে রাজনীতি চলেছে তা আমাদের বন্ধ করে দেয়া উচিত। আইনের ফাঁক ফোঁকরের সুযোগ যাতে কেউ নিতে না পারে তা আমাদের দেখতে হবে।

৯. আইন শৃঙ্খলা জনিত সমস্যার কারণে মামলা পাঠানকোটে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট।

১০. নাবালক ছাড়া অন্য অভিযুক্তদের গুরুদাস পুরের জেলে রাখা হয়। সুপ্রিম কোর্ট বলে অভিযুক্তদের হয়ে দুইজনের বেশি আইনজীবী লড়াই করতে পারবেন না।   

সূত্র : এনডিটিভি, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

এসজেড