• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: জুন ১৬, ২০১৯, ০৮:২১ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ১৬, ২০১৯, ০৮:২১ পিএম

কৃষি উন্নয়নে যা করণীয় তাই করা হবে :কৃষিমন্ত্রী

কৃষি উন্নয়নে যা করণীয় তাই করা হবে :কৃষিমন্ত্রী
‘পরিকল্পিত ফল চাষ যোগাবে পুষ্টি সম্মত খাবার’ শীর্ষক সেমিনারে কৃষিমন্ত্রী

কৃষিমন্ত্রী ড. মো.আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন,সরকার কৃষি উন্নয়নে যা যা করণীয় তাই করবে। প্রয়োজনে ইউরিয়া সারের দাম কমানো হবে। কৃষি পণ্য রপ্তানিতে শতকরা ২০ ভাগ ভর্তুকি দেয়া হচ্ছে। 

মন্ত্রী বলেন, ফিলিপাইনের সঙ্গে দেশি ব্যবসায়ীদের আলোচনা হয়েছে ২-৩ লাখ মেট্রিক টন চাল রপ্তানি করা যেতে পারে। 

রোববার (১৬ জুন) দুপুরে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনের অডিটোরিয়ামে ‘পরিকল্পিত ফল চাষ যোগাবে পুষ্টি সম্মত খাবার’ শীর্ষক সেমিনারে কৃষিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
 
তিনি বলেন, বিশ্বের অর্থনীতিবিদদের অনুমানকে মিথ্যা প্রমাণ করে শুধু স্বয়ংসম্পূর্ণই নয়,খাদ্যে উদ্বৃত্ত হয়েছে দেশ। এখন দরকার জনগণের জন্য নিরাপদও পুষ্টিমানের খাবার।এই নিরাপদও পুষ্টিমানের খাবার নিশ্চিতে ফল বিরাট ভূমিকা রাখবে।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্বৃতি দিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন,কৃষির জন্য টাকা কোনো সমস্যা হবে না। ৯ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। দরকার হলে আরো টাকা দেয়া হবে, প্রয়োজনে ইউরিয়া সারের দাম আরো কমানো হবে। তিনি বলেন, আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে। আমাদের জমি কম ও অনেক প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যেও আমাদের উৎপাদন বাড়ছে।আমাদের লক্ষ্য মানুষের সামাজিক নিরাপত্তা দেয়া। এজন্য পর্যাপ্ত খাবার সরবরাহ ও মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে। সামাজিক নিরাপত্তার কর্মসূচির যেখানে ১৩ হাজার কোটি টাকা ছিলো, সেখানে চলতি বছরে ৬৪ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে ৭৪ হাজার কোটি টাকা করার পরিকল্পনা রয়েছে। জনগণের আয় বৃদ্ধি করতে হবে। আয় বৃদ্ধি করতে আমাদেরকে রপ্তানি বহুমুখীকরণ করতে হবে। এজন্য কৃষির বাণিজ্যিকীকরণসহ উচ্চ মূল্যের ফসল চাষাবাদে কৃষককে এগিয়ে আসতে হবে। এতে করে আমাদের জনগণের আয় যেমন বাড়বে, তেমনিভাবে স্থানীয় বাজারও সম্প্রসারিত হবে।
 
মন্ত্রী আরও বলেন,ধানের উৎপাদন বৃদ্ধির কারণে দাম অস্বাভাবিকভাবে কমেছে। এছাড়াও শ্রমিকের দামও অস্বাভাবিক ভাবে বাড়ছে। আগে দু’এক বেলা ভাত খেয়ে কাজ করে দিত। এখন শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। এর অর্থ হলো মানুষের জীবনযাত্রার মান ও কর্মসংস্থানের সুযোগ বেড়েছে। কৃষিতে বরাদ্দের অতিরিক্ত ৩ হাজার কোটি টাকা যান্ত্রিকীকরণে ব্যয় করা হবে। আমাদের জমিগুলো আকার ছোট। তাই দেশীয় উপযোগি যন্ত্রপাতি উদ্ভাবন করতে হবে। অথবা বিদেশ থেকে আমদানি করার সময় বিষয়টি চিন্তা করতে হবে। ফল মেলার বিষয় উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন,ফল উৎপাদনে আমরা অনেক এগিয়ে গিয়েছি। অনেক ফল আছে যেগুলো সারাবছর ধরে চাষ করা হচ্ছে। পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের বিদেশি ফলও চাষ হচ্ছে। আমাদের দেশের আম বিদেশিরা খেয়ে বলে খুবই সুস্বাদু। দেশীয় ফলের পুষ্টিমান যেমন রয়েছে,তেমনি সকলের কাছে সমাদৃত। এ ফল মেলা সকলের সচেতনতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে। 
    
বিশেষ অতিথি চ্যানেল আইয়ের পরিচালক ও বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ বলেন,আমাদেরে দেশে ফল চাষ কেমনভাবে বেড়েছে এবং কত ধরনের বৈচিত্র্য রয়েছে,তা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যাবে না। ফল চাষ সমপ্রসারণের জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে সহযোগিতা দেয়া জরুরি।

সেমিনারের আগে দিনব্যাপি জাতীয় ফল মেলার উদ্বোধন করে মন্ত্রী মেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরে ঘুরে দেখেন। এসময় কৃষি মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট দপ্তর/সংস্থার প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।  

এর আগে ‘পরিকল্পিত ফল চাষ যোগাবে পুষ্টি সম্মত খাবার’ প্রতিপাদ্যে ফলদ বৃক্ষ রোপণ পক্ষ ও জাতীয় ফল প্রদর্শনী ২০১৯ উপলক্ষে এক বর্ণাঢ্য র‌্যালি জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা শুরু হয়ে আ. কা. মু. গিয়াস উদ্দীন মিলকী অডিটরিয়াম চত্বরে শেষ হয়। জাতীয় ফল মেলায় ৭টি সরকারি ও ৫৭টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মোট ৮৪টি স্টল রয়েছে। মেলা প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকছে। 

কৃষি সচিব মো,নাসিরুজ্জামানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য কৃষিবিদ আব্দুল মান্নান,কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। 

টিএইচ/বিএস