• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: জুন ১৮, ২০১৯, ০৮:৫৯ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ১৮, ২০১৯, ০৮:৫৯ পিএম

সাতক্ষীরায় চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীকে জোর করে বিয়ে

সাতক্ষীরায় চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীকে জোর করে বিয়ে

সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলায় এবার ফারজানা ইয়াসমিন নামের চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রীকে জোরপূর্বক বিয়ে দেওয়া হয়েছে। অথচ ওই উপজেলাকে সারা দেশের মধ্যে সর্বপ্রথম বাল্যবিবাহমুক্ত উপজেলা ঘোষণা করা হয়।

ফারজানা ইয়াসমিন উপজেলার ভাড়াশিমলা সোনাটিকারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী ও উপজেলার সোনাটিকারী গ্রামের হাফেজ আশরাফুল ইসলাম ও আমেনা খাতুনের মেয়ে। বিদ্যালয়ে জমা দেওয়া জন্মসনদ অনুযায়ী তার জন্মতারিখ ২০০৭ সালের ১৩ আগস্ট। ১০ জুন তার বয়স হয়েছে ১১ বছর ১০ মাস ৪ দিন।

ওই দিনই ফারজানাকে বিয়ে দেওয়া হয়েছে একই গ্রামের বাবর আলীর ছেলে আনারুল ইসলামের (৩৫) সঙ্গে। ওই স্কুলছাত্রীর বাবা চৌবাড়িয়া গাজীপাড়া জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘মেয়ের বিয়ের ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। সব আমার স্ত্রী করেছে।’

ফারজানা ইয়াসমিনের চাচা শওকত হোসেন ও আমির আলী জানান, মেয়ের মা আমেনা খাতুনসহ কয়েকজন ১০ জুন (সোমবার) রাত ৮টায় ফারজানাকে জোরপূর্বক পার্শ্ববর্তী নলতার মাঘুরালী এলাকার একটি বাড়িতে নিয়ে বিয়ে দেয়। পরে দেবহাটা উপজেলার নাংলা গ্রামে নুর ইসলাম হুজুরের বাড়িতে নিয়ে তাকে আটকে রাখে। খবর পেয়ে ফারজানার বাবা হাফেজ আশরাফুল ইসলাম ১৩ জুন (বৃহস্পতিবার) দুপুরে ইউপি সদস্য মনোয়ারা খাতুনের সহযোগিতায় মেয়েকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসেন।

সোনাটিকারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সদানন্দ মন্ডল জানান, ফারজানার বয়স জন্মনিবন্ধন অনুযায়ী ১২ বছরের কম। ঈদের পর স্কুল খুললে ফারজানা না আসায় তিনি খোঁজ নিয়ে জেনেছেন তার বিয়ে হয়ে গেছে। বিয়ে কী সেটিও বোঝার বয়স এখনো তার হয়নি। সারা দেশের মধ্যে প্রথম বাল্যবিবাহমুক্ত উপজেলা কালীগঞ্জ। আর সেখানেই ঘটছে বাল্যবিবাহ।

এ বিষয়ে ভাড়াশিমলা ইউপির চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মাদ বিশ্বাস বলেন, বিষয়টি শোনার পর সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্যকে মীমাংসা করে দিতে বলা হয়েছে। মেয়েটি বর্তমানে তার চাচা শওকত আলীর বাড়িতে রয়েছে। ফারজানা পড়াশোনা করতে চায়।

জোরপূর্বক স্কুলপড়ুয়া মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার বিষয়ে জানতে মেয়েটির মা আমেনা খাতুনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।

ঘটনার বিষয়ে কালীগঞ্জ থানা পুলিশের ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আজিজুর রহমান বলেন, ঘটনাটি কেউ থানায় জানায়নি। কোনো অভিযোগও এখনো পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এনআই