• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: জুন ২০, ২০১৯, ০৩:৪৭ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ২০, ২০১৯, ০৩:৪৭ পিএম

মাইন বিস্ফোরণে পা হারান মুক্তিযোদ্ধা উসমান গণি

মাইন বিস্ফোরণে পা হারান মুক্তিযোদ্ধা উসমান গণি

যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. উসমান গণি তালুকদার (৬৮)। মুক্তিযুদ্ধে তিনি অত্যন্ত সাহসী ভূমিকা রেখেছেন। তার নেতৃত্বে নেত্রকোনার দুর্গাপুরের বিজয়পুর থেকে প্রতিহত করা হয়েছিল পাক হানাদার বাহিনীকে। তিনি নেত্রকোনা পৌর শহরের নাগড়া উত্তর পাড়ার বাসিন্দা। মরহুম আব্দুল গণি তালুকদারের ছেলে উসমান গণি ১৯৭১ সালে বিএ শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন। নেত্রকোনা কলেজ হোস্টেলে থেকে লেখাপড়া করতেন। এ সময় বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে মে মাসের শেষের দিকে মুক্তিযুদ্ধে জড়িয়ে যান। গেরিলা আক্রমণে তিনি ছিলেন খুবই পারদর্শী। বিজয়পুর থেকে হানাদার বাহিনী পিছু হটার সময় এ বাহিনীরই পুঁতে রাখা মাইন বিস্ফোরণে একটি পা হাঁটুর ওপর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় তার। যুদ্ধাহত বীর এ মুক্তিযোদ্ধার একটি সাক্ষাৎকার তুলে ধরেছেন দৈনিক জাগরণের নেত্রকোনা সংবাদদাতা।

মো. উসমান গণি তালুকদার বলেন, পাকিস্তান সরকারের দুঃশাসন থেকে নিজেকে ও দেশকে বাঁচাতেই মূলত যুদ্ধে যাওয়া। পাক বাহিনীর অত্যাচার, নির্যাতন এতটাই বেড়েছিল যে তখন ঘরে বসে থাকার সুযোগ ছিল না। নিজের নৈতিকতাবোধ থেকেই নাড়া পড়েছিল যাওয়ার। তিনি বলেন, ‘প্রথমে ভারতের মেঘালয়ের মহাদেও ইয়ুথ ক্যাম্পে যাই। সেখানে ২০ দিন প্রাথমিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করি। পরে ১২৫ জনের দল নেতা করে আমাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় ভারতেরই তোরা প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে। যিনি আমাকে পাঠিয়েছিলেন, তিনি হলেন অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান। বর্তমানে তিনি ময়মনসিংহ জজ কোর্টে আইনজীবী হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তোরায় প্রায় এক মাস প্রশিক্ষণের পর বাঘমারায় এসে আমি কয়েক দিনের মধ্যেই যুদ্ধে নিয়োজিত হই। ১১ নং সেক্টরের অধীনে ময়মনসিংহের ধোবাউড়া সীমান্ত, নেত্রকোনার কলমাকান্দা ও দুর্গাপুরসহ ৮-১০টি স্থানে যুদ্ধ করেছি।’

‘৬ ডিসেম্বর বিজয়পুরে হানাদারমুক্ত হওয়ার পর আমরা যখন আনন্দে উদ্ভাসিত হয়ে বিজয়পুরেরই এক বাংকার থেকে অন্য বাংকারের পথ ধরে হাঁটছি, এমন সময় হঠাৎ এক মাইন বিস্ফোরণে আমার শরীর থেকে একটি পা প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। যে মাইনটির বিস্ফোরণ ঘটেছিল, সেটি পাক সৈন্যরা চলে যাওয়ার আগে গোপনে এখানে পুঁতে রেখেছিল। আমার যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া এখানেই শেষ হলো এবং আমার সহযোদ্ধারা আমাকে তৎক্ষণাৎ বাঘমারা চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে গেল। সেখানে নিয়োজিত সামরিক বাহিনীর একজন ডাক্তার আমার শরীর থেকে একটি পা আলাদা করেন।’

এনআই