• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ২৯, ২০১৯, ১১:৩৪ এএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ২৯, ২০১৯, ১১:৩৪ এএম

সরকারি নিয়োগে ঘুষ বাণিজ্যে তৎপর দালাল চক্র

সরকারি নিয়োগে ঘুষ বাণিজ্যে তৎপর দালাল চক্র


সরকারি চাকরিতে বিভিন্ন নিয়োগ সামনে রেখে তৎপর হয়ে উঠেছে এক শ্রেণীর দালাল চক্র। নিয়োগ পাইয়ে দিতে চলছে লাখ লাখ টাকার ঘুষ বাণিজ্য। সম্প্রতি ঘুষ দেয়ার ক্ষেত্রে মোটা অংকের লেনদেনের সময় হাতে নাতে গ্রেফতার হয়েছে একাধিক পুলিশ সদস্য এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্মচারী। 

জানা গেছে, মাদারীপুরে পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগে প্রায় কোটি টাকা অবৈধভাবে হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে জেলা পুলিশের একাধিক সদস্যের বিরুদ্ধে। এরই মধ্যে প্রতারণার অভিযোগে মাদারীপুরের পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালদারের দেহরক্ষীসহ ২ কনস্টেবলকে আটকের পর নেয়া হয়েছে পুলিশ সদর দপ্তরে। এছাড়া একই অভিযোগে আরো দুই কর্মকর্তাকে শাস্তিমূলক জেলা থেকে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে। 

গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে পুলিশ সুপার তার নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নিজেই এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য জানিয়েছেন।

স্থানীয় ও একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুরে পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগে ঘুষ গ্রহণ ও অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনায় ২৪ জুন পুলিশ সদর দপ্তর থেকে অপরাধীদের ধরার জন্য বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। এই অভিযানে মাদারীপুরের পুলিশ সুপার সব্র্রত কুমার হালদারের দেহরক্ষী পুলিশ সদস্য নুরুজ্জামান সুমনকে ঘুষের টাকাসহ আটক করা হয়। এছাড়াও পুলিশ সদস্য ও পুলিশ লাইন্সের মেস ম্যানেজার জাহিদ হোসেন, টিএসআই গোলাম রহমান এবং পুলিশ হাসপাতালের স্বাস্থ্য সহকারী পিয়াস বালার কাছ থেকেও ঘুষের টাকা উদ্ধার করা হয়। পরে নুরুজ্জামান সুমন ও জাহিদ হোসেনকে পুলিশ সদর দপ্তরে নজরদারিতে রাখা হয়। টিএসআই গোলাম রহমান এবং পুলিশ হাসপাতালের স্বাস্থ্য সহকারী পিয়াস বালাকে মাদারীপুর জেলা থেকে অন্যত্র শাস্তিমূলক বদলি করা হয়েছে। ঘটনাটি গত সোমবার রাতে হলেও বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। কয়েক দফায় মাদারীপুর জেলা পুলিশের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সাংবাদিকদের সঙ্গে এ বিষয় কথা বলতে রাজি হয়নি তারা। পরে বিষয়টি জানতে গত বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া এন্ড পিআর) সোহেল রানাকে অবগত করলে তিনি আটকের বিষয়টি স্বীকার করেন। এ অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার রাতে তড়িঘড়ি করে মাদারীপুর পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালদার জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকে বিষয়টি অবগত করেন।

এদিকে তার দেহরক্ষীকে টাকাসহ আটকের বিষয় তিনি বলেন, যার যার অপরাধের দায়ভার তারই। 

পুলিশ আটকের বিষষয়ে মাদারীপুর সদর থানার ওসি সওগাতুল আলম জানান, পুলিশ নিয়োগের ব্যাপারে কাউকে আটক, গ্রেপ্তার বা অন্য কোন বিষয়ে আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কিছু বলতে পারবো না।

এদিকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) কর্তৃপক্ষ শিক্ষক পদপ্রার্থীর কাছ থেকে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করেছে। শিক্ষক এবং প্রার্থীর কথোপকথনের অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর গতকাল শুক্রবার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইবি। অভিযুক্ত ওই দুই শিক্ষক হলেন-ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রহুল আমিন ও ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আব্দুর রহিম।

ইবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এসএম আবদুল লতিফ জানান, ইবি ভিসি অধ্যাপক এম হারুন-উর-রশিদ আসকারি বরখাস্তের আদেশ জারি করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক জরুরি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের জন্য ১১ মার্চ সার্কুলার দেয় ইবি। রুহুল আমিন এবং আব্দুর রহিম এক প্রার্থীকে চাকরি দেয়ার নিশ্চয়তা দেন। এজন্য ১০ থেকে ১৮ লাখ টাকা লেন দেনের কথা বলেন তারা।

ফাঁস হওয়া অডিও ও নিয়োগ বাণিজ্য বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. রাশিদ আসকারী বলেন, এ বিষয়ে কোনো কথা নেই, যারা জড়িত তাদের চাকরি থাকবে না। ডকুমেন্ট পেলে যেই জড়িত থাক না কেন, তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

এইচএম/আরআই