• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ৪, ২০১৯, ০৮:৩৬ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ৪, ২০১৯, ০৮:৩৬ পিএম

দ্রুত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারকে রাজি করাতে চেষ্টা করবে চীন

দ্রুত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারকে রাজি করাতে চেষ্টা করবে চীন
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের প্রধানমন্ত্রী কেকিয়াংয়ের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক - ছবি : পিআইডি

বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে চীন দেশটির সরকারকে সম্মত করতে চেষ্টা করবে বলে বেইজিং আজ ঢাকাকে আশ্বস্ত করেছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের প্রধানমন্ত্রী কেকিয়াংয়ের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বেইজিং এ আশ্বাস দিয়েছে।

বৈঠকে লি কেকিয়াং এই দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা দ্রুত সমাধানে শেখ হাসিনার সঙ্গে একমত পোষণ করে বলেন, এতে কোনো সন্দেহ নেই যে এটা বাংলাদেশের জন্য একটি বড় সমস্যা। তিনি এ সমস্যা দ্বিপক্ষীয় ভিত্তিতে সমাধানেও গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, চীন এই সমস্যা সমাধানে সহায়তা করবে।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক চীনের প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশ ও মিয়ানমার উভয়ে চীনের বন্ধু। আমরা এর আগে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে দুদেশকে সহায়তা করেছি এবং আমরা আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রাখব। চীনের প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুদেশকে আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান বের করতে হবে। এ প্রসঙ্গে কেকিয়াং উল্লেখ করেন যে, চীন তার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে দুবার মিয়ানমারে পাঠিয়েছে। আলোচনার মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধানে প্রয়োজনে আমরা আবারো আমাদের মন্ত্রীকে মিয়ানমারে পাঠাব।

শহীদুল হক বলেন, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়নের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনে এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের কারণে এই শান্তি ও স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত হচ্ছে। যতই সময় যাবে এই সমস্যা ততই বড় আকার ধারণ করবে এবং এর একমাত্র সমাধান হচ্ছে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবর্তন। শেখ হাসিনা বলেন, রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান হবে। কেন রোহিঙ্গারা ফিরে যেতে চায় না? উল্লেখ করে তিনি বলেন, মিয়ানমারকে এ সমস্যার সমাধান করতে হবে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের করার কিছুই নেই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনে দ্বিপক্ষীয় ব্যবস্থা করেছে। এ ব্যাপারে সব ধরনের প্রয়াস চালিয়েছে। কিন্তু, রোহিঙ্গারা ফেরত যেতে চায় না। কারণ, তারা শঙ্কিত যে তাদের ওপর আবারো নৃংশসতা চালানো হবে। এই শঙ্কা দূর করতে এবং রোহিঙ্গারা যেন নিরাপদে, মর্যাদা ও নিজস্ব পরিচয়ে নিজ দেশে ফেরত যেতে পারে সেজন্য অনুকূল পরিবেশ গড়ে তুলতে চীনের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। তাদের জমি-সম্পত্তির ওপর অবশ্যই তাদের অধিকার থাকতে হবে।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে চীনের প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, তার দেশ এটা বুঝতে পেরেছে যে রোহিঙ্গা সমস্যা হচ্ছে বাংলাদেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। চীনের প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা সংকটে মানবিক সাড়ার জন্য শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান।

চীনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. ফজলুল করিম ও প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ লেখক মো. নজরুল ইসলাম ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন।

দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের সময় বাংলাদেশ পক্ষে উপস্থিত ছিলেন অটিজম অ্যান্ড নিউরো-ডেভেলপমেন্ট ডিজঅর্ডারস-এর জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপারসন সায়মা ওয়াজেদ হোসেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. ফারুক খান। 

পরে প্রধানমন্ত্রী ‘দ্য গ্রেট হল অব দ্য পিপল’-এ চীনের প্রধানমন্ত্রীর দেয়া এক ভোজসভায় যোগদান করেন।

এফসি

আরও পড়ুন