• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: জুলাই ১১, ২০১৯, ০২:০৩ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ১১, ২০১৯, ০২:০৬ পিএম

সুনামগঞ্জে ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত 

সুনামগঞ্জে ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত 
পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে হাঁটু পানি- ছবি : জাগরণ

সুনামগঞ্জে গত ৪ দিনের টানা ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে জেলার সবগুলো প্রধান নদ-নদীসহ সীমান্ত নদীগুলোর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা, বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, ধর্মপাশা, দোয়ারাবাজার উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র, নিম্নাঞ্চলের অর্ধশতাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়, শতাধিক গ্রামের বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করেছে। 
এছাড়াও নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। টানা বৃষ্টির কারণে কর্মহীন হয়ে নিম্ন আয়ের মানুষরা বিপাকে পড়েছেন। এছাড়াও ঐসব এলাকার রাস্তাঘাট, জনপদ, হাট-বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি প্রবেশ ও স্কুল সংলগ্ন এলাকার রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় শিক্ষার্থীদের স্কুলে পাঠাচ্ছেন না অভিভাবকরা। ফলে শিক্ষার্থী উপস্থিতি কমে গেছে।

জানা যায়, পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত তাহিরপুর-সুনামগঞ্জ সড়ক, তাহিরপুর-বাদাঘাট সড়ক, বাদাঘাট-সোহালা, আনোয়াপুর-ফতেহপুর সড়ক, বিশ্বম্ভরপুর-সুনামগঞ্জ, সুনামগঞ্জ-জামালগঞ্জ, ছাতক, দোয়ারা বাজারের সড়ক ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ উপজেলা সীমান্তের বিভিন্ন সড়ক পানির তোরে ভেঙে ও পানিতে ডুবে চলাচল বন্ধ রয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে জেলা ও উপজেলা সদরের সঙ্গে বিভিন্ন ইউনিয়নের। এছাড়াও তাহিরপুর উপজেলা থেকে সুনামগঞ্জ জেলা সদরের সঙ্গে সড়ক পথে চলাচল বন্ধ রয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু বকর সিদ্দিক ভূইয়া বলেন, গত ৪ দিনের টানা ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের প্রধান নদী সুরমা, যাদুকাটা, পাটলাই, কুশিয়ারা, চেলা, খাসিয়ামারাসহ সবকটি নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সকাল ১১টার রিডিং অনুযায়ী সুনামগঞ্জের ষোলঘর পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ৮৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ১৮৬ মি.মি. বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বৃষ্টিপাত ও ঢল অব্যাহত থাকায় বন্যা হতে পারে। নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ইতোমধ্যে জেলা সদরের বিভিন্ন উপজেলার নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। 
সুনামগঞ্জ-তাহিরপুর-বিশ্বম্ভরপুর সড়ক গত ৪ দিন ধরে ডুবে আছে। ফলে চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট-তাহিরপুর সড়কও নিমজ্জিত হয়েছে। পানিতে ভেসে গেছে সদর উপজেলা, দোয়ারাবাজার, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার শতাধিক পুকুরের মাছ। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন মৎস্য চাষিরা। ঢল ও বর্ষণ অব্যাহত থাকলে পরিস্থিতির আরো অবনতি হবে বলে জানান তিনি।

তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুনা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল জানান, তাহিরপুর-সুনামগঞ্জ সড়ক একাধিক স্থানে ভাঙন ও পানিতে ডুবে যাওয়ায় খেটে খাওয়া মানুষগুলো ও জনজীবনে এসেছে চরম দুর্ভোগ। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য উপজেলায় স্থানীয় পর্যায়ে উদ্ধার টিম, শুকনা খাবার, ওষুধ, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, বন্যায় আশ্রয় কেন্দ্র, মেডিক্যাল টিম গঠনসহ সবকিছু প্রস্তুত রাখা হয়েছে এবং উপজেলার সকল কর্মকর্তা কর্মচারীদের কর্মস্থলে থাকে সর্তক অবস্থানে রয়েছে। 

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ জানান, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য প্রতি উপজেলায় কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। তাছাড়া বন্যা মোকাবেলায় প্রশাসনের সকল প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভা করে মাঠ প্রশাসনকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। বৈঠকে পরিস্থিতি মোকাবেলায় জেলায় ৩ লাখ টাকা, ২০০ মে. টন চাল এবং ৩ হাজার ৮০০ প্যাকেট শুকনো খাবার মজুদ আছে।

কেএসটি