• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ১৫, ২০১৯, ০৫:০৮ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ১৫, ২০১৯, ০৫:০৮ পিএম

দৌলতপুরে সাড়ে তিনশ বসতবাড়ি নদীতে বিলীন

দৌলতপুরে সাড়ে তিনশ বসতবাড়ি নদীতে বিলীন

যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার যমুনা নদীর তীরবর্তী বাচামারা ও চরকাটারী ইউপির জনপদের চারটি গ্রামে ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙনের ফলে প্রায় তিনশ ৪৬টি বসতবাড়ি, কয়েক শত বিঘা আবাদি জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।

সোমবার (১৫ জুলাই) মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার যমুনা নদীর তীরবর্তী বাচামারা ও চরকাটারী ইউপি নদীপথে ইঞ্জিনচালিত নৌকা নিয়ে ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছেন মানিকগঞ্জের ডিসি এস.এম ফেরদৌস।

এসময় উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম রাজা, ইউএনও সাবরিনা শারমিন, উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন আবুল, চরকাটারী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল বারেক মণ্ডলসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা দেখা যায়, ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকটি পরিবারের লোকজন নদীর পাড়ে অন্য জায়গায় ঘর-দরজা, ধান-চাল, জিনিসপত্র, গবাদি পশু নিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। যমুনা নদীর ভাঙন ঠেকাতে কয়েক সপ্তাহ পূর্বে বাচামার এলাকায় মানিকগঞ্জ জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড চার হাজার বস্তা (জিও ব্যাগ) নদীর পাড় ঘেঁষে ফেলেছে তা কোনো কাজে আসেনি। ভাঙন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি হয়ে পড়েছে।

সরেজমিনে কথা হয় উপজেলার চরবারাঙ্গা গ্রামের প্রবীণ সমেজ প্রামাণিকের সঙ্গে। গত দুই যুগে আট দফা ভাঙনের শিকার হয়েছেন। তার ৪০ বিঘা জমি ও ঘরবাড়ি ছিল। এখন কিছুই নেই। সবই যমুনা নদীতে বিলীন হয়েছে। ইপিজেড এলাকায় কুলির কাজ করে চলে তার সংসার।

চরকাটারী মণ্ডল পাড়ার আবদুল খালেক মণ্ডল জানান, নদীতে হঠাৎ পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ভাঙন শুরু হয়। এবার নিজের বাড়িতে থাকতে পারবেন কি না তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন তিনি।

চরকাটারী বোর্ডঘর বাজার এলাকার আলমগীর হোসেন জানান, যমুনা নদীর ভাঙনে বাড়িঘর, জায়গা-জমি নদীতে বিলীন হওয়ায় গরু-ছাগল নিয়ে এখন অন্যের জমি ভাড়া নিয়ে কোনোমতে থাকছেন।

চরকাটারী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল বারেক মণ্ডল জানান, যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে কাঁঠালতুলী এলাকায় নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। এরমধ্যে কাঁঠালতলী গ্রাম নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের চাল না দিয়ে বাড়ি-ঘর অন্যত্র সরিয়ে নিতে নগদ অর্থ বরাদ্দ প্রয়োজন। এভাবে নদীর ভাঙন চলতে থাকলে চরকাটারী ইউপির অস্তিত্ব থাকবে না।

মানিকগঞ্জের ডিসি এস.এম ফেরদৌস নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের বলেন, এরমধ্যে চরকাটারী ও বাচামারা সাত মেট্টিক টন চাল বিতরণ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের নিয়ে সবর্দা চিন্তা করেন। আগামীতে সরকার আরো বরাদ্দ দিবে নগদ অর্থ, চাল, ঢেউটিন যাই আসুক সবটুকু জিনিস ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে সমানভাবে বিতরণ করা হবে।

তিনি বলেন, বাচামারা ও চরকাটারী ৬/৭ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে যে ভাঙন শুরু হয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধ করা সম্ভব নয়। এখানে ভাঙন রোধে ও স্রোত ঠেকাতে বিকল্প প্রটেকশনের ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ব্যাপারে উচ্চ পর্যায়ে, স্থানীয় এমপি ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জরুরি পদক্ষেপ নেয়া হবে।

কেএসটি