পাবনার চাটমোহরের ১০ কৃষককে দিয়ে পাটের নতুন জাত রবি-১’র আবাদ করিয়েছে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। পরীক্ষামূলক এ আবাদের ফলন নিয়ে বেশ আশাবাদি খোদ কৃষি কর্মকর্তাসহ চাষিরা। নতুন জাতের সোনালী আঁশে স্বপ্ন বুনেছেন তারা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, রবি-১ নামে নতুন জাতের এই পাট বিঘায় ১০ মণ হারে ফলন দেবে। বয়স ১০০ দিন হলেই জমি থেকে পাট কাটতে পারবেন কৃষকরা। আবাদের খরচ পড়বে তোষা-মেস্তা পাটের মতোই। এছাড়া পাট কাটার পরই কৃষকরা জমিতে রোপা আমন ধান আবাদ করতে পারবেন।
পরীক্ষামূলক পাট চাষকারী ১০ কৃষকের একজন আব্দুল জলিল। তিনি বলেন- পাটের গাছ তোষা-মেস্তা পাটের চেয়ে বড় হইছে (হয়েছে)। মোটাও বেশি। গোড়ার দিক থেকে মাথার দিকে ক্রমশ কিছুটা চিকন। আশা করতিছি (করছি) ১০ মণ হারে ফলন পাব। তিনি আরও জানান, তোষা-মেস্তা পাটে ফলন হয় গড়ে ৭/৮মণ হারে। নতুন জাতের পাটের আবাদের খরচ তোষা-মেস্তা পাটের মতোই।
অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক ও চাষি আব্দুল জলিলের ভাষ্যমতে, জমিতে পাট চাষ করতে খরচ হয় সাড়ে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা। এর মধ্যে চাষ, বীজ, সার, কীটনাশক আর পরিচর্যা থাকে। কিন্তু পাট কাটতে আর ধুয়ে ঘরে তুলতেই খরচ হয় ৫ থেকে সাড়ে ৭ হাজার টাকা। তিনি জানান, কামলার (শ্রমিক) মজুরি পবিশোধের পর ও বাজারে পাটের যে দাম পাওয়া যায়, তাতে কৃষকের খুব একটা লাভ হয় না। কিন্তু এতে কৃষকের কী বা করার আছে? খাওয়া-পরা চলে আরকি!
চাটমোহর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র বলছে, ১০ জন চাষির প্রত্যেককে ৪শ গ্রাম হারে বীজ দেয়া হয়েছে। ১০ শতক জমিতে আবাদের জন্য এ বীজ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সূত্র আরও জানায়, অন্য পাট থেকে এই পাট চাষের সুবিধা হলো- জমি পতিত থাকে না। আশা করছি, এ জাতের পাট আবাদে কৃষকরা বেশি লাভবান হবে।
চাটমোহর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হাসান রশীদ হোসাইনী বলেন, পরীক্ষামূলকভাবে ১০ জন কৃষককে দিয়ে এ পাটের আবাদ করিয়েছি। পাট গবেষণা ইন্সিটিটউট উন্নত এই পাটের জাত উদ্ভাবন করেছেন। ফলন ভালো পেলে, পরবর্তীতে এই নতুন জাতের পাট চাটমোহরের চাষিদের মধ্যে জনপ্রিয়তা লাভ করবে। আশা করা যায় আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে পাটের ফলন খুব ভালো হবে। তবে তিনি শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, সঠিক দাম না পেলে কৃষকরা পাট চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে।
একেএস