• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: জুলাই ১৯, ২০১৯, ০৯:১৬ এএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ১৯, ২০১৯, ০৯:১৬ এএম

শনির দশা কাটছেইনা বগুড়ার আলু  চাষিদের 

শনির দশা কাটছেইনা বগুড়ার আলু  চাষিদের 
আলু পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষকরা

শনির দশা কাটছেইনা বগুড়ার আলু চাষিদের। বিগত কয়েক বছর ধরে আলু  চাষে লোকসান গুনছে হচ্ছে চাষিদের। বরাবরের মতো আলুর বাম্পার ফলন পেয়ে এবারও দাম নিয়ে বিপাকে তারা। গত বছরের লোকসান পুষিয়ে নিতে লাভের আশায় হিমাগারে রাখা আলুতে এবারেও লাভের মুখ দেখছেনা তারা। গত জানুয়ারি মাসে আলুর ভরা মৌসুমে ভালো দাম না পাওয়ায় লাভের আশায় জমি থেকে আলু তুলে হিমাগারে সংরক্ষণ করেছে এ এলাকার সিংহভাগ আলু চাষি। কিন্তু বর্তমানে ক্রেতা সংকটে রীতিমতো মাথায় হাত পড়েছে কৃষকদের। 

গত বছরে অনেকটা পানির দামে আলু বিক্রি করায় এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে আলু চাষ করেছিলেন এ এলাকার অসংখ্য আলু চাষি। কিন্তু আলুর বাম্পার ফলন ঘরে তুলতে পেরে কৃষকের মুখে হাসি ফুঁটলেও সে আনন্দ ম্লান হয়েছে দাম না পাওয়ায়।

সরেজমিনে বগুড়ার বেশ কয়েকটি হিমাগার ও বাজার ঘুরে দেখা যায়,আলুর বস্তা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে কৃষক। ক্রেতা নেই বললেই চলে। যে দুই চার বস্তা বিক্রি হচ্ছে তার দাম খুব কম।বাজার পরিস্থিতি জিজ্ঞাসা করলে তারা জানান,বর্তমানে আলুর ক্রেতা খুব কম।উৎপাদন খরচ উঠছেনা বলেও অভিযোগ করেন তারা।

এ সম্পর্কে কথা হয় এই জেলার মোকামতলার কাশিপুর এলাকার আলু চাষি আব্দুল মান্নানের সঙ্গে। তিনি জানান, বর্তমানে প্রতি বস্তা আলু বিক্রি হচ্ছে ছয়'শ থেকে সাড়ে সাত'শ টাকায়। প্রতি বস্তায় ৬০ থেকে ৮০ কেজি আলু আছে। কিন্তু আলুর উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে হিমাগারে রাখতে প্রতি বস্তা আলু বাবদ খরচ হয় ২'শ ৩০ টাকা। সব মিলে ৩৩০ টাকা বাড়তি খরচ হয়েছে। সে অনুপাতে প্রতি বস্তা আলুতে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা পাচ্ছি আমরা। যা দিয়ে উৎপাদন খরচ ও উঠছেনা।

খুব একটা ভালো দিন যাচ্ছেনা ব্যবসায়ীদেরও । আলু উত্তোলনের সময় প্রতি মন আলু সাড়ে তিন'শ থেকে চার'শ টাকা করে গ্রামে গ্রামে ঘুরে শত,শত বস্তা আলু কিনে লাভের আশায় হিমাগারে রেখেছেন তারাও। কিন্তু বস্তা,পরিবহন ও শ্রমিক খরচসহ প্রতি বস্তা আলুতে তাদের প্রায় সাড়ে আট'শ টাকা খরচ হয়েছে।সেই অনুপাতে তাদের প্রতি বস্তা আলুতে লোকসান গুনতে হচ্ছে ১০০ থেকে দেড় 'শ টাকা। 
মোকামতলা আরএন্ডআর পটেটো কোল্ড স্টোরেজে আলু কিনতে আসা শিবগঞ্জের আলু ব্যবসায়ী সাইদুল ইসলাম জানান, আমরা প্রতি বস্তা ডায়ামন্ড আলু সাত'শ টাকা,কার্ডিনাল সাত'শ টাকা ও গ্র্যান্ড আলু চার'শ থেকে পাঁচ'শ টাকা বস্তা কিনেছি।

নুরুল ইসলাম লেদো নামে আরেক আলু ব্যবসায়ী জানান,আলুর উৎপাদন বেশি হওয়ায় বাজারে আলুর দাম কমেছে।

এদিকে সবজি বাজার গুলোতে প্রতিকেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা করে। সে হিসেবে ৬০ কেজি ওজনের এক বস্তা আলুর দাম হচ্ছে ১২'শ টাকা।  
হাট থেকে ৭'শ টাকা বস্তা  কিনে  প্রায় দ্বিগুণ দামে খুচরা বাজারে বিক্রি করছে দোকানিরা।  

এব্যাপারে মোকামতলা বাজারের ওয়াকিল নামের এক দোকানি জানান, ভাই হাট থেকে আলু  কিনে আনতে  শ্রমিক ও পরিবহন খরচ দিতে হয়। হাটের খাজনাও দিতে হয়। খরচ বেশি হওয়ায় দামও কিছুটা বেশি।

এদিকে আলু সহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যর সঠিক তদারকির জন্য কোনো মনিটরিং ব্যবস্থা না থাকায় এমন হচ্ছে বলে মত দিয়েছে সচেতন মহল।

বিএস