• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ১৯, ২০১৯, ০৩:৩৮ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ১৯, ২০১৯, ০৩:৩৮ পিএম

বাবার কোলে চড়ে এইচএসসি পরীক্ষা দেয়া নাইচের সাফল্য

বাবার কোলে চড়ে এইচএসসি পরীক্ষা দেয়া নাইচের সাফল্য
বাবার কোলে চড়ে পরীক্ষা দিয়ে এবার এইচএসসি পাস করলেন নাইচ খাতুন  -  ছবি : জাগরণ

বাবার কোলে চড়ে পরীক্ষা দেয়া সেই প্রতিবন্ধী নাইচ এসএসসির পর এবার এইচএসসিতেও সাফল্য পেলেন। জিপিএ-২.৭৫ পেয়ে তিনি এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন।

নাইচের বাড়ি বগুড়ার ধুনটের চৌকিবাড়ি ইউনিয়নের বিশ্বহরিগাছায়। তার বাবা নজরুল ইসলাম কৃষক। মা আকতার জাহান গৃহিণী। এক ভাই ও এক বোনের মধ্যে নাইচ ছোট। বড় ভাই রবিউল করিম সরকারি আজিজুল হক কলেজে অনার্সের ছাত্র। মাত্র দেড় বিঘা ফসলি জমির ওপর চলে তাদের সংসার ও লেখাপড়া।

২০১৭ সালে বিশ্বহরিগাছা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে তিনি জিপিএ-৩.৫৫ পেয়েছিলেন। এবার বিশ্বহরিগাছা বহালগাছা বহুমুখী মহাবিদ্যালয় থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ-২.৭৫ পেয়ে পাস করেছেন।

নাইচ খাতুনের বাবা নজরুল ইসলাম জানান, তার মেয়ে জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধী। তার দুটি পা ও একটি হাত অচল। এ কারণে তিনি নিজের পায়ে দাঁড়াতে বা হাঁটতে পারেন না। তার পরও লেখাপড়া করতে চান। তাই তার মা ও তিনি ছোট থেকেই নাইচকে কোলে তুলে নিয়ে বিদ্যালয় ও কলেজের বেঞ্চে বসে দিয়েছেন। ক্লাস শেষে আবার একইভাবে তাকে বাড়ি নিয়ে গেছেন। এভাবেই তিনি বিশ্বহরিগাছা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১৭ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৩.৫৫ পেয়েছেন। ২০১৯ সালে ২.৭৫ পেয়ে এইচএসসি পরীক্ষায়ও পাস করেন তিনি। তবে আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে তাকে লেখাপড়া করাতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। তবুও মেয়ের স্বপ্ন পূরণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। 
নাইচের চিকিৎসার জন্য অনেক ডাক্তার ও কবিরাজের কাছে গিয়েছেন তার বাবা। কিন্তু অর্থের অভাবে তাকে সুস্থ করতে পারেননি।

নাইচ খাতুন বলেন, ‘আমি একজন আদর্শ শিক্ষক হতে চাই। কারো মাথায় বোঝা হয়ে থাকতে চাই না। তাই ইচ্ছাশক্তি ও মনোবল নিয়ে বাম হাত দিয়েই শিক্ষাজীবন শুরু করে এবার এইচএসসি পাস করেছি।’

বিশ্বহরিগাছা বহালগাছা বহুমুখী মহাবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রঞ্জন কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘প্রতিবন্ধী হওয়ায় এবং তার পড়ালেখার প্রতি আগ্রহ থাকায় আমরা তাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছি। আমরা নাইচের স্বপ্ন পূরণের সাথে থাকতে চাই।’

বগুড়ার ধুনট কল্যাণ সমিতির সভাপতি সাবেক অধ্যক্ষ সাছমুল আলম জয়, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোজাম্মেল হক, কল্যাণ সমিতির সদস্য সাবেক রংপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. জাকির হোসেন ও উপদেষ্টা জিয়া শাহীন জানান, তারা সমিতির পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দিয়ে থাকেন। নাইচের বিষয়েও তারা সহেযাগিতা করবেন।

এনআই

আরও পড়ুন