• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ২০, ২০১৯, ০৮:০৫ এএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ২০, ২০১৯, ০৮:০৯ এএম

হাওরাঞ্চলে মৎস্য সপ্তাহেও অবাধে চলছে মাছ নিধন

হাওরাঞ্চলে মৎস্য সপ্তাহেও অবাধে চলছে মাছ নিধন

সুনামগঞ্জ ১১টি উপজেলায় চলছে মৎস্য সপ্তাহ। অন্যদিকে প্রজনন মৌসুমে হাওর, নদী-নালা, খালবিলে অবাধে নিষিদ্ধ কোনা, বেড়জাল ও কারেন্ট জাল দিয়ে মাছের পোনা নিধন চলছে। কিন্তু মৎস্য অফিসের দায়সাড়া কার্যক্রমে ও হাওরাঞ্চলের জেলেদের বিকল্প জীবিকা নির্বাহের ব্যবস্থা না থাকায় মৎস্যজীবীরা হাওরগুলো থেকে অবাধে নিষিদ্ধ জাল দিয়ে পোনা মাছ ধরে বিক্রি করছেন। কিন্তু মোবাইল কোর্ট, জরিমানার কথা মৎস্য অধিদপ্তর বললেও বাস্তবে তা লক্ষণীয় নয়। এতে দিনে দিনে কমে যাচ্ছে দেশি মাছের প্রাচুর্য অভিযোগ এলাকাবাসীর।

হাওরপাড়ের স্থানীয় বাসীন্দাদের অভিযোগ, হাওরপাড়ের মৎস্যজীবীরা স্থানীয় মৎস্য অফিসকে ম্যানেজ করে অবাধে পোনা মাছ ধরে বিক্রি করছেন। জেলা সদরসহ উপজেলা সদরের প্রত্যেক বাজারে মাছের পোনা বিক্রী হচ্ছে নিয়মিত কিন্তু এ যেন দেখার কেউ নেই। নিষিদ্ধ কোনা জাল ও দড়া জাল নিয়ে সন্ধ্যা থেকে ভোর রাত পর্যন্ত আবার ভোর থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত পালা করে চলে পোনা মাছ শিকার। একেকটি কোনা জালের সাথে ৬-৮ জন লোক ও দড়া জালে ৪ জন করে দল গঠন করে হাওরে পোনা মাছ শিকারে নামতে দেখা যায়। প্রতিটি কোনা জাল দিয়ে কমপক্ষে ২ থেকে ৩ মণ মাছ শিকার করা হচ্ছে। এ হিসেবে প্রতিদিন জেলার বৃহৎ হাওরগুলো থেকে কয়েক টন মাছ শিকার করা হচ্ছে। এবং তা গ্রামে ও স্থানীয় বাজারসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করা হচ্ছে। 

জেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্র জানা যায়, মাছের বংশ বৃদ্ধির লক্ষ্যে সারা দেশে জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত হাওর, নদী-নালা, খালবিলে নয় ইঞ্চির নিচে রুই, কাতলা, কালবাউশ, মৃগেল, কালিয়াসহ রুই জাতীয় মাছের পোনাসহ মাছ ধরা নিষিদ্ধ রয়েছে। কোনা জাল নিষিদ্ধ কারেন্ট জালের চেয়েও বেশি ক্ষতিকর। হাওরে অনেকেই মৌসুমী মৎস্যজীবী। বর্ষার ছয় মাস তারা হাওরে মাছ ধরে। কোনা জালের ছিদ্র মশারির ছিদ্রের চেয়ে ছোট হওয়ায় মাছের একেবারে ছোট পোনাটিও উঠে আসে। অনেক সময় ডিমও আটকা পড়ে যায়। জৈষ্ঠ্য, আষাঢ় ও শ্রাবণ মাসে মাছের পোনা শিকার বন্ধ করা গেলে মৎস্য সম্পদে ভরপুর হত। জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে ছাড়াও জেলার হাওরগুলোতে কোনা জালের ব্যবহার বন্ধে অভিযান চালানো হচ্ছে।

একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার হিসাবে, হাওরের ৫৫ প্রজাতির মাছ বিপন্ন অবস্থায় রয়েছে। এরমধ্যে মহাশোল, রিটা, নানিদ, বাঘাইড়সহ পাঁচ প্রজাতির মাছ অতি সংকটাপন্ন এবং আরও ১৫ প্রজাতির মাছ রয়েছে সংকটনাপন্ন অবস্থায়। 
হাওরে নিষিদ্ধ কোনা জাল, কারেন্ট জাল দিয়ে অবাধে মাছ শিকার যত দ্রুত সম্ভব ব্যবহার বন্ধের দাবি জানান সর্বস্থরের জনসাধারণ।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আমিনুল হক বলেন, জৈষ্ঠ্য, আষাঢ় ও শ্রাবণ এই তিন মাস মাছের পোনা শিকার বন্ধ করা গেলে মৎস্য সম্পদে হাওরাঞ্চল ভরপুর হত। লাঘব হত মাছের অভাব। অবাধে মাছ ধরা বন্ধে মোবাইল কোর্ট, জরিমানাসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। এছাড়াও জেলার প্রতিটি উপজেলার জনবল কম এবং অপ্রতুল বাজেট বড় সমস্যা রয়েছে। তারপরও মাছের বংশ বিস্তারে ও রক্ষায় সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

কেএসটি
 

আরও পড়ুন