• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: আগস্ট ১৮, ২০১৯, ১১:২১ এএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ১৮, ২০১৯, ১১:২১ এএম

বাড়তি ভাড়াতেও মিলছে না বাসের টিকিট

বাড়তি ভাড়াতেও মিলছে না বাসের টিকিট

বাড়তি ভাড়াতেও মিলছে না বাসের টিকিট। ট্রেনে রয়েছে ৩-৯ ঘণ্টার সিডিউল বিপর্যয়। আছে উপচেপড়া ভিড়। এ অবস্থায় কর্মস্থলে ফিরছে চরম দুর্ভোগে পাবনার চাটমোহরসহ পার্শ্ববর্তী উপজেলাগুলোর হাজার-হাজার কর্মজীবী নারী-পুরুষ। 

ঈদের একদিন পর থেকেই বেসরকারি চাকরিজীবীরা কর্মস্থলে ফিরছেন। তবে শুক্রবার ও শনিবার চাটমোহর রেলস্টেশনে ভিড় ছিল সবচেয়ে বেশি। সরকারি অফিস, আদালত রোববার (১৮ আগস্ট) থেকে পুরোদমে শুরু হওয়ায় গত দু’দিনে ঢাকায় ফেরার তাগাদা ছিল কর্মজীবীদের। 

ট্রেনে এবার স্মরণকালের সিডিউল বিপর্যয় ঘটেছে- এ কথা জানালেন খোদ চাটমোহরের দায়িত্বপ্রাপ্ত স্টেশন মাস্টার তাওলাত হোসেন। তিনি আরো বলেন, অতিরিক্ত যাত্রী, ট্রেনের সাপ্তাহিক ছুটি বন্ধ ও স্টেশন থেকে দেরি করে ট্রেন ছেড়ে দেওয়ার কারণেই এ সিডিউল বিপর্যয়।

চাটমোহর রেলস্টেশনে দেখা গেছে, যাত্রী ছাউনির নিচে শত শত যাত্রী অপেক্ষা করছে ট্রেনের জন্য। যাত্রী ছাউনিতে নেই ফ্যান। ফলে ভ্যাবশা গরমে নাকাল হচ্ছেন তারা। বেশিরভাগ যাত্রী কিনেছেন আসনবিহীন টিকিট। বরাদ্দের চেয়ে চাহিদা বেশি হওয়ার কারণে আসন দেওয়া হচ্ছে না বুকিং কাউন্টার থেকে। ট্রেন আসছে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে ৩/৪ ঘণ্টা দেরিতে।  দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর ট্রেনের দেখা পাচ্ছেন যাত্রীরা। এরপর ট্রেনে উঠতে যাত্রীরা হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন দরজায়। আদা-জল খেয়ে ঠেলাঠেলি করে উঠছে কামরায়।  আগে থেকে আসন সম্বলিত টিকিট কিনেও ট্রেনে উঠতে পারছেন না অনেক যাত্রী। আসন আছে, এমন যাত্রীদের কেউ কেউ ট্রেনে উঠতে পারলেও আসনে বসা তো দূরের কথা, আসনের ধারের কাছেও পৌঁছাতে পারছেন না। এ নিয়ে সহযাত্রীদের মধ্যে ঘটছে বাকবিতণ্ডা, চরম হৈ চৈ। যারা ফিরছেন পরিবার নিয়ে তাদের দুর্ভোগটা আরও বেশি। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন নারী ও শিশুরা। ঝুঁকি নিয়ে অনেকে চেপে যাওয়ার চেষ্টা করছেন ট্রেনের ইঞ্জিনে। ছাদে চড়েও ফিরছেন অনেকে।  লোকাল ট্রেনে কেউ কেউ ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনের দরজায় বাদুর ঝোলা হয়েছেন। 

ট্রেনের যাত্রী বাবুল বলেছেন, আমি চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট কেটেছি ১০ দিন আগে। স্টেশন মাস্টার বলেছেন, ট্রেন আসবে রাত ৯টার দিকে। ট্রেনটির নির্ধারিত সময় দুইটা। দুপুর থেকে অপেক্ষা করছি। যাব ঢাকায়।

দায়িত্বপ্রাপ্ত স্টেশন মাস্টার তাওলাত হোসেন বলেন, সবগুলো ট্রেনেই ন্যূনতম তিন ঘণ্টার সিডিউল বিপর্যয় ঘটেছে। সবচেয়ে বেশি সিডিউল বিপর্যয় ঘটেছে রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনে। ট্রেনটি ৯ ঘণ্টা ৮ মিনিট দেরিতে চলাচল করছে। এ স্টেশন থেকে চাটমোহর ছাড়াও পাবনা সদর, পাবনার আটঘড়িয়া, ভাঙ্গুড়া ও ফরিদপুর, নাটোরের বড়াইগ্রাম ও জোনাইল এলাকার শত শত যাত্রী যাতায়াত করেন ঢাকায়। 

এদিকে, যাত্রীদের অসহায়ত্বকে পুঁজি করে বাড়তি ভাড়া আদায় করছেন বাস মালিকেরা। চাটমোহর থেকে ঢাকার ভাড়া ৩০০-৩৫০ টাকা। কিন্তু ঢাকামুখী যাত্রীদের কাছে থেকে আদায় করা হচ্ছে সাড়ে ৫শ থেকে ৮শ টাকা। ভাড়া দ্বিগুন দিতে চাইলেও সিট ও টিকিট পাচ্ছেন না যাত্রীরা। এ নিয়ে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে যাত্রীদের মধ্যে।

ছোট শালিখা মহল্লার বাসিন্দা মোহন খান। তিনি বলেন, ট্রেনে সিট পাইনি। বাধ্য হয়ে বাসের টিকিট কিনেছি। ৮শ টাকার ভাড়া ১৪শ টাকা দিয়ে কিনেছি এসি বাসের টিকিট।  

বাড়তি ভাড়ার বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ বাস কোম্পানিগুলোর স্থানীয় চেইন মাস্টাররা। তারা বলছেন, চাহিদার চেয়ে বাসের পরিমাণ কম হওয়ার কারণেই টিকিট পাচ্ছেন না যাত্রীরা।

কেএসটি

আরও পড়ুন