• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: আগস্ট ১৮, ২০১৯, ০৮:৫৮ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ১৮, ২০১৯, ০৮:৫৮ পিএম

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে টাস্কফোর্স কমিটির জরুরি বৈঠক কক্সবাজারে

প্রত্যাবাসন নিয়ে সর্বোচ্চ প্রস্তুত বাংলাদেশ

প্রত্যাবাসন নিয়ে সর্বোচ্চ প্রস্তুত বাংলাদেশ
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে জরুরি বৈঠকে উপস্থিত টাস্কফোর্স কমিটির সদস্যরা  -  ছবি : জাগরণ

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে রোববার (১৮ আগস্ট) কক্সবাজারে জরুরি বৈঠক করেছেন টাস্কফোর্স কমিটির সদস্যরা।

কক্সবাজারে শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন নুরুল আলম নিজামী। বৈঠক শেষে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার নুরুল আলম নিজামী বলেন, ‘রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে আমাদের সর্বোচ্চ প্রস্তুতি রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আগামী ২২ আগস্টের প্রত্যাবাসন নিয়ে আমরা ইতোমধ্যে প্রস্তুতি শেষ করেছি। এখন শেষ পর্যায়ের কাজ চলছে। সবকিছু ঠিক থাকলে হয়তো এ কার্যক্রম আরও বাড়ানো হবে।’

অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার আরও বলেন, প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া পুনরায় শুরু করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য মূলত এ বৈঠক। বৈঠকে প্রত্যাবাসনের নানা দিক নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সরকার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়েছে। প্রত্যাবাসন শুরু করতে হলে কোন কোন পথ ব্যবহার করতে হবে, তা নিয়েও আলোচনা হয়।

রোহিঙ্গারা যেতে আগ্রহী কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা মাঠপর্যায়ে রোহিঙ্গাদের মতামত যাচাই করতে গেলে তখন নিশ্চিত হওয়া যাবে। এ সময় এর বেশি কিছু জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি।

সভায় অন্যদের মধ্যে কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. আবুল কালাম, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন, পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেনসহ বিজিবি ও সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে গত বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারিতে ৩০টি পরিবারের ১৫০ জন রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে প্রত্যাবাসনের জন্য বাংলাদেশ-মিয়ানমার দুই দেশ প্রক্রিয়া শুরু করলেও রোহিঙ্গাদের বিক্ষোভের মুখে ওইদিন প্রত্যাবাসন শুরু করা যায়নি। এমনকি এর পর থেকে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া থমকে যায়।

এদিকে ১৭ আগস্ট বিকালে টেকনাফ কেরণতলী প্রত্যাবাসন ঘাট পরিদর্শনে গিয়ে সেখানে কয়েকজন শ্রমিককে কাজ করতে দেখা গেছে। এ সময় প্রত্যাবাসন নিয়ে কাজ করা একটি দলকেও প্রত্যাবাসন কেন্দ্রের বিভিন্ন স্থান ও কক্ষ ঘুরে দেখতে দেখা যায়। তবে গণমাধ্যমকে এড়িয়ে যান তারা।

তবে প্রত্যাবাসন ঘাটে দায়িত্বে থাকা প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয়ের প্রতিনিধি মোহাম্মদ শহীদুল হাসান জানান, এই ঘাট দিয়ে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন হওয়ার কথা রয়েছে। তাই কর্তৃপক্ষের নির্দেশে এখানে কয়েক দিন ধরে বিভিন্ন কাজকর্ম চলছে।

এই শিবিরের চেয়ারম্যান রমিদা বেগম বলেন, ‘শুনেছি, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন হবে। তবে হঠাৎ করে কারও সঙ্গে কথা বললে এই প্রত্যাবাসন নিয়ে রোহিঙ্গাদের মাঝে হতাশা বিরাজ করে। কেননা শিবিরের সিআইসি কার্যালয়ের পাশে এনজিওরা তাড়াহুড়াভাবে ছোট ছোট ঘর তৈরিকরছে। এ নিয়ে রোহিঙ্গাদের মাঝে কানাঘুষা চলছে।’

টেকনাফের জাদিমুড়া ২৭ নম্বর রোহিঙ্গা শিবিরের চেয়ারম্যান আবদুর রহমান বলেন, ‘রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হোক, সেটি আমরা চাই। তবে রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিচার নিশ্চিত করে নিজ দেশের নাগরিকত্ব দিলে আমরা ফেরত যেতে প্রস্তুত। হঠাৎ করে প্রত্যাবাসনের খবরে রোহিঙ্গারা উদ্বিগ্ন। কীভাবে কী হচ্ছে তা আমরা বুঝতে পারছি না।’

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টে কোরবানি ঈদের মাত্র কয়েক দিন আগে রাখাইনের ৩০টি নিরাপত্তাচৌকিতে একযোগে হামলার ঘটনা ঘটে। প্রতিক্রিয়ায় মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর ব্যাপক নিপীড়ন শুরু করে। ফলে প্রাণ বাঁচাতে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। পুরনোসহ উখিয়া-টেকনাফের ৩০টি শিবিরে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। তবে জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, উখিয়া-টেকনাফে আশ্রিত রোহিঙ্গার সংখ্যা ১১ লাখ ৮৫ হাজার ৫৫৭। এর মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই বেশি।

এনআই

আরও পড়ুন