• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: আগস্ট ২২, ২০১৯, ১০:২২ এএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ২২, ২০১৯, ১০:২২ এএম

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন পর্যবেক্ষণে চীন, আমেরিকা ও মিয়ানমার

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন পর্যবেক্ষণে চীন, আমেরিকা ও মিয়ানমার

রোহিঙ্গা ফেরত কার্যক্রম পর্যবেক্ষণে চীনের দু’জন ও মিয়ানমার দূতাবাসের একজন কর্মকর্তা কক্সবাজারে অবস্থান করছেন। একই সঙ্গে মার্কিন দূতাবাসের অপর তিন কর্মকর্তাও কক্সবাজার অবস্থান করছেন। বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) তারা উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করবেন। পুরো প্রক্রিয়াটি পর্যবেক্ষণের সঙ্গে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বিভিন্ন স্থাপনা দেখবেন তারা।

এছাড়া মিয়ানমারের ওপারে দেশটির উচ্চ পর্যায়ের দুটি  দল সীমান্তে অবস্থান করছে বলে জানা গেছে। কক্সবাজার শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ আবুল কালাম দৈনিক জাগরণকে এই বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। অন্যদিকে কতিপয় এনজিওগুলোর ইন্ধনে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু রোহিঙ্গা বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টার খবর পাওয়া গেছে। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্হা গ্রহন করা হয়েছে এবং কেউ কিছু করার অপচেষ্টা করলে ছাড় দেয়া হবে না বলে জানা যায়। 

২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্বপরিকল্পিত ও কাঠামোগত সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে নতুন করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ৭ লাখেরও বেশি মানুষ।

তাদের সঙ্গে যুক্ত হয় ১৯৯১ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত নানা অজুহাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নেওয়া অন্তত সাড়ে ৩ লাখ রোহিঙ্গা। সব মিলে বাংলাদেশে থাকা রোহিঙ্গার সংখ্যা প্রায় ১২ লাখের কাছাকাছি। এসব রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে আন্তর্জাতিক চাপের মূখে মিয়ানমার বাংলাদেশের সঙ্গে একাধিক চুক্তি করে।রাখাইনে রোহিঙ্গাদের জন্য সহায়ক পরিবেশ তৈরি করতে জাতিসংঘের উন্নয়ন সংস্থা -ইউএনডিপি ও শরণার্থী সংস্থা - ইউএনএইচসিআর এর সঙ্গে মিয়ানমার ত্রিপক্ষীয় চুক্তিও করে।

সর্বশেষ জুলাই মাসে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে নতুন করে উদ্যোগের অংশ হিসেবে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করে মিয়ানমারের পররাষ্ট্র সচিব মিন্ট থোয়ের নেতৃত্বাধীন একটি প্রতিনিধি দল। ১৫ সদস্যের দলটি দুই দিন ধরে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আলোচনা ও বৈঠক করে। ওই বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বৃহস্পতিবার রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরু হতে পারে।

শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ আবুল কালাম জানিয়েছেন, ‘রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের সার্বিক পরিস্থিতি জানার জন্য বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের দূতাবাসের দুইজন ও মিয়ানমারের একজন কর্মকর্তা কক্সবাজারে এসেছেন। এছাড়া মার্কিন দূতাবাসের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কাউন্সিলর, আঞ্চলিক রিফুউজি কো-অর্ডিনেটর সহ তিনজন কর্মকর্তা রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে রয়েছেন।  তারা তাদের মতো করে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করবেন।

আবুল কালাম আরও বলেন, ‘মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের আদিবাসী হিসেবে স্বীকার করে নিয়েছে। আমরা এই তথ্যটি রোহিঙ্গাদের জানিয়েছি। এছাড়া মিয়ানমার সরকারের দেওয়া ছাড়পত্র অনুযায়ী ১ হাজার ৩৭টি পরিবারের মোট ৩ হাজার ৫৪০ জনকে ফেরত নেওয়ার প্রথম তালিকাটি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে গত দুই দিনে ২৩৫টি রোহিঙ্গা পরিবারের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। তাদের অনেকে সম্মতি দিয়েছেন মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার জন্য। তবে কতজন রোহিঙ্গার প্রত্যাবাসন হবে সেটি এখন নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।


এমএইউ
 

আরও পড়ুন