• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: আগস্ট ২৫, ২০১৯, ০৯:২৪ এএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ২৫, ২০১৯, ০৯:২৫ এএম

বিলের ফেলনা শাপলায় ঘুঁচছে দারিদ্র্য

বিলের ফেলনা শাপলায় ঘুঁচছে দারিদ্র্য

শুধু গ্রামেই নয়, শহরেও তরকারি হিসেবে শাপলার জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। বাংলাদেশের প্রায় সর্বত্র, খাল, বিল, পুকুর, ডোবায় শাপলা পাওয়া যায়। বিল পাড়ের একদল নিবেদিত প্রাণ এ শাপলায় সবজির চাহিদা মিটানোর পাশাপাশি কাটাচ্ছেন নিজের সংসারের দৈন্যদশাও। প্রতি ১০০ গ্রাম শাপলার লতায় রয়েছে খনিজ পদার্থ ১.৩ গ্রাম, আঁশ ১.১ গ্রাম, ক্যালোরি-প্রোটিন ৩.১ গ্রাম, শর্করা ৩১.৭ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ৭৬ মিলিগ্রাম। শাপলার ফল দিয়ে তৈরি হয় চমৎকার সুস্বাদু খৈইও। গাজীপুরের কালীগঞ্জের বেলাই বিল পাড় ঘুরে এবং স্বাস্থ্য ও কৃষি বিশেষজ্ঞদের সাথে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।   

উপজেলার দুবার্টি গ্রামের ফারুক, খলিল, নুরুল ইসলাম ও বেলায়েত টিউবয়েল বসানোর কাজ করেন। তারা জানান, বর্ষার ৬ মাস অন্য কোন কাজ না থাকায় নিজেদের পেশা বদল করে বিলের শাপলা তুলে সংসার চালন। বর্ষা মৌসুম এলে টিউবয়েল বসানোর কাজ মোটামুটি বন্ধই থাকে। কিন্তু তাই বলে কর্মব্যস্ত ওই মানুষগুলো বসে থাকতে নারাজ। বর্ষার সময় তারা তাদের পেশা বদল করে শাপলা উঠানোর কাজ করেন। আর তা স্থানীয় বাজার ও রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় শহরগুলোতে বিক্রি করে সংসারের প্রতিদিনের অন্ন জোগান দেন। শুধু তারা নয় বিল পাড়ের প্রায় অর্ধশতাধিক দরিদ্র পরিবারের মানুষ এই শাপলা তোলার কাজে নিয়োজিত। আর তাদের এ কাজে পরম বন্ধুর মতো সহযোগিতা করছে তাল গাছ দিয়ে তৈরি কোন্দা বা কাঠ দিয়ে তৈরি ডিঙ্গি নৌকা। এতে একদিকে নিজেদের সংসারের যাবতীয় চাহিদা মেটাচ্ছেন। অন্যদিকে বিলে জন্ম নিয়ে বিলেই পঁচে যাওয়া জাতীয় ফুল শাপলাকে সবজি হিসেবে করছেন অতি জনপ্রিয়।  

পুষ্টি সমৃদ্ধ ফেলনা শাপলা সবজি হিসেবে দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখার বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যেও ফেলেছে ইতিবাচক সাড়া। তারা বলছেন যে শাপলা বিলে জন্মে বিলেই পঁচে যেত, সে শাপলা সবজি হিসেবে জনপ্রিয় ও দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছে ভাবতে ভালই লাগছে।      

কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ সাদেকুর রহমান আখন্দ বলেন, শাপলায় রয়েছে প্রচুর ক্যালসিয়াম। যা আলুর চেয়ে সাত গুণ বেশি। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আবু নাদির সিদ্দিকী বলেন, প্রাকৃতিকভাবে পাওয়া আর্শিবাদ বিলের শাপলা তুলে বাজারে বিক্রি করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছে। বিষয়টি ছোটভাবে দেখার সুযোগ নেই। 

সবচেয়ে আশার কথা, যে শাপলা বিলে ফুটে বিলেই পঁচে শেষ হয়ে যেত। সেই শাপলা তুলে স্থায়ীয় প্রায় অর্ধশতাধিক দরিদ্র পরিবারে স্বাচ্ছন্দ্য ফিরেছে। তারাই আবার দেশের অর্থনীতিতে রাখছে অবদান। আর বিল পাড়ের ওই মানুষগুলো ফেলনা শাপলাকে জনপ্রিয় সবজি হিসেবে এগিয়ে নিতে রাখছেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। তাই দিবানিশি কাজ করে যাওয়া মানুষগুলো ভাল থাক সব সময় এমটাই প্রত্যাশা সর্বমহলের। 

কেএসটি

আরও পড়ুন