• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩, ২০১৯, ০৮:২৫ এএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ৩, ২০১৯, ০৮:২৫ এএম

৩ চিকিৎসক দিয়েই চলছে সাড়ে তিন লাখ মানুষের সেবা

৩ চিকিৎসক দিয়েই চলছে সাড়ে তিন লাখ মানুষের সেবা

উপকূলীয় ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার সাড়ে তিন লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসেবার একমাত্র ভরসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসক-কর্মচারী ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সংকটে এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি যেন নিজেই রোগাক্রান্ত। ফলে উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার বাসিন্দারা কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠছে- কিন্তু মিলছে না এর প্রতীকার। 

উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সোনাগাজী উপজেলায় চিকিৎসকের মোট একুশটি পদ থাকলেও বর্তমানে উপজেলায় কর্মরত রয়েছেন মাত্র ৩ জন চিকিৎসক। অফিস সহকারীর ৫টি পদের মধ্যে কর্মরত আছেন মাত্র ২ জন। চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের পাঁচটি পদের মধ্যে আছেন মাত্র একজন। সুইপারদের ৫টি পদের মধ্যে ৪টি পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে। টেকনিশিয়াল থাকলেও দীর্ঘদিন এক্সরে মেশিনটি বিকল। গত প্রায় এক যুগেরও বেশি সময় জেনারেটরটি নষ্ট অবস্থায় পড়ে রয়েছে। 

এছাড়া আসবাবপত্র ও বিভিন্ন বিভাগে যন্ত্রপাতির সংকটও রয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ আরো জানায়, বর্তমানে হাসপাতালে যে তিনজন চিকিৎসক কর্মরত রয়েছেন তাদের মধ্যে একজন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা। তাকেও দাপ্তরিক কাজের পাশাপাশি রোগী দেখতে হয়। দুই জন মেডিকেল অফিসার (চিকিৎসক) দিয়ে চরম সংকটে চলছে হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রম। 
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি কাগজে কলমে ৫০ শয্যার বলা হলেও ৩১ শয্যার জনবল দিয়েই চলছে। প্রতিদিন গড়ে ৭০/৭৫ জন রোগী ভর্তি থাকেন।

বহির্বিভাগে গড়ে দূর দূরান্ত থেকে চারশ থেকে সাড়ে চারশ রোগী চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন। কিন্তু প্রয়োজনীয় ও বিভাগীয় চিকিৎসক না থাকায় অনেক রোগীকে সেবা না নিয়েই বাড়ি ফিরে যেতে হয়। অথবা জেলা শহরে বেসরকারি ক্লিনিকে গিয়ে চিকিৎসা সেবা নিতে হয়। উপজেলার চরচান্দিয়া ইউনিয়নের পূর্ব বড়ধলী গ্রাম থেকে চিকিৎসা নিতে আসা জামাল উদ্দিন নামে একজন রোগী জানান, তিনি দাঁতের ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে গিয়ে দাঁতের চিকিৎসক না থাকায় চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছেন।

সূজাপুর গ্রামের হাড ভাঙ্গা রোগী পেয়ারা বেগম চিকিৎসা সেবার জন্য স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গিয়ে জানতে পারেন, হাসপাতালের এক্সরে মেশিনটি নষ্ট। সোনাগাজী উপজেলা সদরে ভাল কোনো এক্সরে মেশিন না থাকায় বাধ্য হয়ে তাকে জেলা শহরের বেসরকারি হাসপাতালে যেতে হয়। 

সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নুরুল আলম হাসপাতালে চিকিৎসক-কর্মচারী ও যন্ত্রপাতি সংকটের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, চিকিৎসক সংকট এবং এক্সরে মেশিনসহ বিভিন্ন বিভাগের যন্ত্রপাতি নষ্ট থাকায় বিষয়ে একাধিক বার চিঠি দিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তিনি আরো জানান, ২১ জন চিকিৎসকের মধ্যে মাত্র ৩ জন চিকিৎসক দিয়ে চরম সংকটের মধ্যেও রোগীদের সেবা দিতে সাধ্যমতো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

কেএসটি

আরও পড়ুন