• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৫, ২০১৯, ১০:৩০ এএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ৫, ২০১৯, ১০:৩৯ এএম

হুমকির মুখে উপকূলীয় জনপদ

সাতক্ষীরায় প্রায় ২৫০ কি.মি, বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ

সাতক্ষীরায় প্রায় ২৫০ কি.মি, বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বিভাগ-১ ও ২ এর আওতাধীন ৮০০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ। সিডর ও আইলায় ক্ষতিগ্রস্ত এসব বেড়িবাঁধে ব্যাপক ভাঙন ও ফাটল দেখা দিয়েছে। নদী ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করায় সিডর ও আইলা বিধ্বস্ত সাতক্ষীরার শ্যামনগর, আশাশুনি, কালিগঞ্জ ও দেবহাটা উপজেলার ভাঙনকবলিত এলাকার লক্ষাধিক মানুষ চরম আতংকে দিন কাটাচ্ছে। 

আগামী বর্ষা মৌসুমের আগেই ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ সংস্কার করা না হলে জোয়ারের তীব্র স্রোতে আশাশুনি, শ্যামনগর, কালিগঞ্জ ও দেবহাটা উপজেলার কপোতাক্ষ নদ, খোলপেটুয়া, ইছামতি ও বেতনা নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশংকা রয়েছে। 

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, সাতক্ষীরা পাউবো বিভাগ-১ ও ২ এর অধীনে ১১টি পোল্ডারে ৮০০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে প্রায় ৭০টি পয়েন্টে ২৫০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এরমধ্যে ২০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ অধিক ঝুঁকিপূর্ণ। বেড়িবাঁধে ভাঙন শুরু হওয়ায় আতংকে দিন কাটাচ্ছে নদীর তীরবর্তী অঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষ।                                 

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভাগ- ১ ও ২ এর আওতাধীন আশাশুনি উপজেলার জেলেখালী, দয়ারঘাট, কেয়ারগাতি, চাকলা, বিছট, কাকবসিয়া, কোলা, হাজারাখালী, ঘোলা ত্রিমোহনী, হিজলিয়া, চন্ডিতলা ও বুধহাটার তেতুলতলা, দেবহাটা উপজেলার সুশীলগাতী, চরকোমরপুর, খারাট, টাউনশ্রীপুর ও ভাতশালা এবং শ্যামনগর উপজেলার পদ্মপুকুর, গাবুরা, কাশিমাড়ি, বুড়িগোয়ালিনী, মুন্সিগঞ্জ ও রমজাননগর ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি পয়েন্টে পাউবো’র বেড়িবাঁধে মারাত্মক ভাঙন দেখা দিয়েছে। 

যেকোন মুহুর্তে বেড়িবাঁধ ভেঙে এই তিন উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে লক্ষাধিক লোক পানিবন্দি হয়ে পড়বে। পানিতে তলিয়ে যাবে হাজার হাজার বিঘা চিংড়ি ঘের ও ফসলের ক্ষেত। উৎপাদন ব্যাহত হবে দেশের সাদা সোনা খ্যাত চিংড়ি। 

একইভাবে মারাত্মক ভাঙনের মুখে পড়েছে সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার সীমান্ত নদী ইছামতি। সম্প্রতি উপজেলার সুশীলগাতী, চরকোমরপুর, টাউনশ্রীপুর ও ভাতশালা এলাকায় ইছামতি নদী‘র বেড়িবাঁধে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। ফলে ওই এলাকায় বসবাসরত মানুষজন চরম আতংকে দিন কাঠাচ্ছে বলে জানা গেছে।

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের বলেন, তার বিভাগের অধিনে ৩৮০ কিলোমিটর বেড়িবাঁধ রয়েছে। এরমধ্যে কমপক্ষে ১০টি পয়েন্টে অধিক ঝুঁপিপূর্ণ বেড়িবাঁধের পরিমাণ ৫০ কিলোটারের মত। তিনি আরো বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত এসব বেড়িবাঁধ মেরামতের জন্য সম্প্রতি ২ কোটি টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধগুলো দ্রুত সংষ্কারের উদ্যোগ নেয়া হবে।

সাতক্ষীরা পাউবো বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফ উজ্জামান খান বলেন, তার বিভাগের আওতাধীন ৪২০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। এরমধ্যে ৬০টি পয়েন্টে প্রায় ২০০ কিলোমিটার বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। চাহিদা অনুযায়ী বরাদ্দ না আসায় এসব বেড়িবাঁধ মেরামত করা সম্ভব হচ্ছে না। 
তিনি আরো বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় টেকসই বাঁধ নির্মাণের লক্ষ্যে পাউবো বিভাগ-২ এর অধিনে ৭/১, ৭/২ ও ১৩-১৪/১ এবং ১৩-১৪/২ নং পোল্ডারের ভাঙন কবলিত ৩৪টি পয়েন্টে বাঁধ সংস্কারের জন্য ইতিমধ্যে ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। চাহিদার বিপরীতে বরাদ্দের পরিমাণ এতোই নগন্য যে তা দিয়ে যতসামান্য কিছু করা ছাড়া কোনো উপায় থাকে না। 
তবে আরো প্রয়োজনীয় বরাদ্দ চেয়ে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে পর্যায়ক্রমে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধসমূহ মেরামত করা হবে।

কেএসটি
 

আরও পড়ুন