• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৫, ২০১৯, ০১:২১ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ৫, ২০১৯, ০১:২১ পিএম

মোবাইলে গান ডাউনলোডের নামে চলছে পর্নোগ্রাফির রমরমা ব্যবসা

মোবাইলে গান ডাউনলোডের নামে চলছে পর্নোগ্রাফির রমরমা ব্যবসা

দেশে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে ধর্ষণের ঘটনা। ৬ বছরের শিশু থেকে ৬০ বছরের বৃদ্ধা পর্যন্ত কেউ ছাড় পাচ্ছে না ধর্ষণের হাত থেকে। পরকীয়া ও ধর্ষণের মতো সমাজ বিধ্বংসী অপরাধগুলোর পিছনে নিয়ামক ভূমিকা রেখে চলেছে পর্নো ভিডিও।

বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মোবাইলে গান তোলার নামে চলছে পর্নো ভিডিওর রমরমা ব্যবসা। শিশু, কিশোর, যুবক বৃদ্ধ প্রায় সব বয়সের মানুষই এ দোকানগুলোর নিয়মিত গ্রাহক। ফলে এ উপজেলায় বেড়েই চলেছে ধর্ষণ কিংবা পরকীয়ার মতো অনৈতিক কাজের সংখ্যা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আমতলী, কিচক, গুজিয়া, শহরতলী, মেদেনীপুর, বুরিগঞ্জ, ময়দানহাটা, দেউলী, পাকুরতলা, ভাইয়ের পুকুর, গাংনগরসহ উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের কমপক্ষে শতাধিক স্পটে চলছে এ সমাজ বিধ্বংসী ব্যবসা। রাস্তার মোড়, ছোট বন্দর, মার্কেট কিংবা প্রত্যান্ত অঞ্চলের বাজারের পাশে নামে-বেনামে গড়ে উঠেছে এসব গান ডাউনলোডের দোকান। সহজ লভ্য ও হাতের নাগালে পাওয়ায় পর্নো ভিডিও দেখতে অভ্যস্ত হচ্ছে এ এলাকার কমলমতি শিক্ষার্থীসহ সব বয়সের মানুষ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিবগঞ্জ সদর ইউনিয়নের গুজিয়া এলাকার গান ডাউনলোডের এক দোকানী বলেন, ‘ভাই হামার (আমার) এটি (এখানে) সব বয়সের মানুষই আসে। ওয়াজ, সিনেমা, গান তোলার পাশাপাশি এক্স (পর্নো ভিডিও) ও তোলে। তাদের জন্য নতুন নতুন এক্স ডাউনলোড দিতে হয়। কখনও কখনও বগুড়া শহর থেকে তুলে আনি।

পরিচয় গোপন রাখার শর্তে উপজেলার কিচক এলাকার এক দোকানী বলেন, গান, ওয়াজের পাশাপাশি এক্স (পর্নো ভিডিও) তোলার জন্য গ্রাহকের আগ্রহ বেশি দেখা যাচ্ছে। এছাড়া এখন ইন্টারনেট থেকেও নতুন নতুন ভিডিও ডাউনলোড দেয়া যাচ্ছে।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি শিবগঞ্জ পৌর এলাকার অর্জুনপুরে নারী ধর্ষণ, চার সন্তানের জননীকে ধর্ষণ, দেবর ভাবির পরকীয়া, মামী ভাগ্নের পরকীয়ায় জোরা খুন, প্রতিবন্ধী কিশোরী ধর্ষণসহ বেশ কয়েকটি ঘটনা আলোচনায় এসেছে।
সচেতন নাগরিকরা মনে করছেন পর্নো ভিডিও এই অপরাধের জন্য প্রধান নিয়ামকের ভূমিকা পালন করছে।

আমাদের দেশে ২০১২ সালে অশ্লীল ভিডিও নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়ন করা হয়। যাতে লেখা আছে ‘যৌন উত্তেজনা সৃষ্টিকারী কোনো অশ্লীল সংলাপ, অভিনয়, অঙ্গভঙ্গি, নগ্ন বা অর্ধনগ্ন নৃত্য-চলচ্চিত্র, ভিডিও চিত্র, অডিও ভিজুয়াল চিত্র, স্থির চিত্র, অঙ্কিত চিত্রাবলী, বা অন্য কোনো উপায়ে ধারণকৃত ও প্রদর্শনযোগ্য বিষয়- যার কোনো শৈল্পিক মূল্য নেই– তা পর্নোগ্রাফি হিসেবে বিবেচিত হবে’।
পর্নোগ্রাফির সাথে জড়িত ব্যক্তির শাস্তি সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘পর্নোগ্রাফি উৎপাদন ও বিতরণকারীদের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ শাস্তি ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং অধিকন্তু ৫ লাখ টাকা জরিমানা’।
 
তাই আইন প্রয়োগের মাধ্যমে পর্নো ভিডিওর ব্যবসা ও ইন্টারনেট থেকে সব ধরনের পর্নো ওয়েবসাইট বন্ধ করতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে সরকার- এমনটাই প্রত্যাশা এ এলাকার সাধারণ মানুষের।


 

আরও পড়ুন