• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৬, ২০১৯, ০৯:৫৮ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ৭, ২০১৯, ১০:২৯ এএম

৫ লাখ রোহিঙ্গার সমাবেশ, গোয়েন্দা ব্যর্থতার তদন্ত শুরু

৫ লাখ রোহিঙ্গার সমাবেশ, গোয়েন্দা ব্যর্থতার তদন্ত শুরু
দুই বছর পূর্তির ঘোষণা দিয়ে গত ২৫ আগস্ট (রোববার) প্রায় ৫ লাখ রোহিঙ্গার শোডাউন -ফাইল ছবি

প্র স ঙ্গ রো হি ঙ্গা স মা বে শ  

.........................................................

● বহুমুখী তৎপরতায় সাহস বেড়ে গেছে রোহিঙ্গাদের

● সমাবেশের বিষয়টি তারা বেশ গোপন রেখেছিল  

● বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার প্রশ্নে বড় ধরনের হুমকি

..................

কক্সবাজারের কুতুপালং ক্যাম্পের মাঠে ৫ লাখ রোহিঙ্গার সমাবেশের আগে গোয়েন্দা তৎপরতায় কোনও ঘাটতি বা অবহেলা ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে মন্ত্রণালয় রোহিঙ্গাদের নিয়ে কাজ করা সব এনজিও’র (বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার) কর্মকাণ্ডের বিষয়েও অনুসন্ধান শুরু করেছে। 

রোহিঙ্গা সমাবেশে গোপন আর্থিক সহায়তা ও প্রত্যাবাসনবিরোধী উসকানি দেয়ার অভিযোগে দুটি এনজিওকে এরই মধ্যে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সূত্র এসব তথ্য জানায়।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা, সেবা ও সুরক্ষা বিভাগ এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রোহিঙ্গা সেলের একাধিক কর্মকর্তা দৈনিক জাগরণকে জানান, মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে সরকার যে সময়ে তৎপর, ঠিক সেই সময়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়ার দুই বছর পূর্তির ঘোষণা দিয়ে গত ২৫ আগস্ট (রোববার) প্রায় ৫ লাখ রোহিঙ্গা নিয়ে শোডাউন করে।

এ সমাবেশ থেকে বাংলাদেশ সরকারের সামনে ৫ দফা দাবিও ছুড়ে দেয় রোহিঙ্গারা। বিষয়টি এমন, বাংলাদেশ আশ্রয় দিয়ে অন্যায় করেছে। সে কারণে তাদের দাবি মেনে নিতে হবে। ঘটনাটি দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার প্রশ্নে হুমকিস্বরূপ।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্মসচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা দৈনিক জাগরণকে বলেন, কুতুপালং ক্যাম্পের মাঠে ৫ লাখ রোহিঙ্গার যে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়, সে সম্পর্কে আগাম তথ্য সংগ্রহে গোয়েন্দা তৎপরতায় কোনও ঘাটতি ছিল কি না, বিশেষ করে স্বল্প সময়ে এত বড় সমাবেশ, এত উপস্থিতি, কয়েক লাখ গেঞ্জি ছাপানো এবং ৫ দফা দাবির বিষয়ে গোয়েন্দারা কতটুকু অবহিত ছিল, আর কতটুকুই বা সরকারকে অবহিত করা হয়েছিল, সেসব বিষয় খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু করে দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

কক্সবাজারে কাজ করা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রোহিঙ্গা সেলের মহাপরিচালক (ডিজি) দেলোয়ার হোসেন দৈনিক জাগরণকে সমাবেশের আগাম তথ্য বা গোয়েন্দা তৎপরতার বিষয়ে বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রোহিঙ্গা সেল এসব বিষয়ে যথেষ্ট সজাগ ও তৎপর ছিল। রোহিঙ্গারা তাদের এ সমাবেশের বিষয়টিতে বেশ গোপনীয়তার আশ্রয় নিয়েছিল। তবে আগাম গোয়েন্দা তৎপরতার বিষয়টি খতিয়ে দেখার ওপর তিনিও সায় দেন। 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল এর আগে দৈনিক জাগরণকে কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের নিয়ে কাজ করা সব এনজিও’র (বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার) কর্মকাণ্ডের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরুর কথা জানিয়েছিলেন। এরই মধ্যে গত ৪ সেপ্টেম্বর (বুধবার) রোহিঙ্গা সমাবেশে গোপন আর্থিক সহায়তা ও প্রত্যাবাসন বিরোধী উসকানি দেয়ার অভিযোগে দুটি এনজিওকে নিষিদ্ধ করে এনজিও ব্যুরো। 

টেকনাফসহ কক্সবাজারের স্থানীয়দের কথা একটাই, এনজিওদের নানা রকম তৎপরতায় সাহস বেড়েছে রোহিঙ্গাদের। নানা অজুহাতে দুই দফায় প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া ব্যর্থ করে দেয়ার পর ক্যাম্পেই তারা মহাসমাবেশ করে। 

রোহিঙ্গা সমাবেশ
গত ২৫ আগস্ট (রোববার) সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়ে দুপুর ১২টা পর্যন্ত চলে রোহিঙ্গা সমাবেশ। আয়োজকদের মতে, পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা যোগ দেয় এ সমাবেশে। আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস নামক সংগঠনের চেয়ারম্যান মুহিব উল্লাহ, আবদুর রহিম ও মুহাম্মদ ইলিয়াছসহ অন্যান্য রোহিঙ্গা নেতারা এ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন। 

দুই এনজিও নিষিদ্ধ
রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনবিরোধী উসকানি দেয়ার অভিযোগে ‘আদ্রা’ ও ‘আল-মারকাজুল’ নামে দুটি বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) কার্যক্রম কক্সবাজারে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

৪ সেপ্টেম্বর (বুধবার) এনজিও ব্যুরো থেকে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

জেলা প্রশাসনের এনজিও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ আশরাফুল আফসার (উপসচিব) জানান, প্রাথমিক তদন্তে এনজিও দুটির বিরুদ্ধে প্রত্যাবাসনবিরোধী উসকানি, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আয়োজিত সমাবেশে গোপন আর্থিক সহায়তাসহ বেশ কিছু অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।

এমএএম/এমএইউ/এসএমএম

আরও পড়ুন