• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৯, ০২:৪৯ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৯, ০২:৪৯ পিএম

ধান নয়, কলা চাষেই সফল কৃষক রাজা মিয়া

ধান নয়, কলা চাষেই সফল কৃষক রাজা মিয়া

সাদুল্লাপুর উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের মিরপুর গ্রামের ৫ নং ওয়ার্ডের মৃত মফিজ উদ্দিনের ছেলে রাজা মিয়া (৬১)। কৃষক আবদুর রাজ্জাক (রাজা মিয়া) জন্মগ্রহণ করেন ১৯৫৮ সালের ১ জুন।

কৃষক পরিবারেই তার জন্ম। বিভিন্ন ফসলের পাশপাশি কলা চাষ করাই তার নেশা ও পেশা। প্রায় ২০ বছর ধরে তিনি কলা চাষ করে আসছেন। দীর্ঘদিন ধরে কলা চাষ করেই লাখপতি বনে গেছেন রাজা মিয়া। প্রতি বছরের মতো এবারও ৫০ শতক জমিতে চাষ করেছেন কলা। তিনি সফলতার রঙিন স্বপ্ন বুনছেন। 

সরেজমিন পরিদর্শনে জানা যায়, এক সময় পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া ১০ শতক জমি ছাড়া কিছুই ছিল না রাজা মিয়ার। অভাবের গন্ডিতে ঘুরপাক খাচ্ছিল রাজা মিয়া'র জীবন। শুধু ধান উৎপাদন করে যে আয় হতো তার সবটুকু ব্যয় হয়েও ধার কর্য করতে হতো। ফলে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর দিনাতিপাত করতেন তিনি। আজ থেকে প্রায় ২০ বছর আগে দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া রাজা মিয়া এক কলা চাষির পরামর্শ ও উৎসাহ নিয়ে প্রথমে ১০ শতক জমিতে শুরু করেন কলার আবাদ। এরপর কলা চাষ করেই বদলে যেতে থাকে তার কষ্টের দিনগুলো। সেই থেকে তিনি নিয়মিত কলা (সাগর কলা) চাষাবাদ করে আসছেন।

অদম্য কর্ম চেষ্টা দিয়ে রাজা মিয়া অভাবকে বিদায় জানাতে সক্ষম হয়েছেন। কলা বিক্রির আয় দিয়ে ১ ছেলে ও ৪ মেয়েকে লেখাপড়া শিখিয়েছেন তিনি। ছেলে এখন বিজিবিতে (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) চাকরি করছেন। মেয়েদেরকে ভাল ঘরে পাত্রস্থ করেছেন। প্রায় এক বিঘা জমির উপর করেছেন দৃষ্টিনন্দন পাকা বাড়ি। নিজের স্ত্রী, ছেলের বউ, নাতিপুতি ও দু'তিন জন দৈনিক মজুরির কামলা মিলে সুখের সোনালী সংসার তার। দৈন্যতাকে পেছেনে ফেলে প্রচুর কর্ম পাগল রাজা মিয়া'র আজ মুখে ফুটেছে হাসির ঝিলিক। জয় করেছেন সোনালী দিন। বর্তমানে রাজা মিয়ার মোট জমির পরিমাণ ১৫ বিঘার উপর।

রাজা মিয়া জানান, এবার ৫০ শতক জমিতে জমিতে কলা চাষ করা হয়েছে। জমিতে ৫০০ গাছে কলা ধরেছে। যার খরচ হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার টাকা। ইতিমধ্যে তার ৫০০ কলা গাছের বেশ হৃষ্টপুষ্ট লম্বা লম্বা ছরিগুলো বিক্রি'র উপযোগী হয়েছে। বর্তমান দামে বিক্রি করলেও লক্ষাধিক টাকার কলা বিক্রি করা সম্ভব বলে জানান তিনি।

ধান বাদ দিয়ে কলা চাষ কেন, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ধান কাটার পরেও দাম ছিল ৫শ থেকে ৬শ টাকা। কিন্তু এখন প্রতি মণ ধান বিক্রি করছি ৪২০ থেকে ৪৬০ টাকা!
কিন্তু জমিতে ধান রোপণ, আগাছা পরিষ্কার, সার-কীটনাশক প্রয়োগ, ধান কাটা– মাড়াই ও ঘরে তোলায় প্রতি মণ ধানে কৃষকদের যে খরচ হয় তাও বিক্রি করে তুলতে পারছি না। এছাড়া ধান কাটা ও মাড়াইয়ের জন্য শ্রমিকের মজুরি দিতে হয়েছে বিঘা প্রতি ৩ হাজার ৫শ’ টাকা। যা খুবই কষ্টকর। আগামীতে শুধু খাবার ধান ছাড়া অতিরিক্ত আবাদ করবেন না বলেও জানান তিনি।

এছাড়া রাজা মিয়া ৩ হাজার বেগুনের চারা লাগিয়েছেন কয়েক বিঘা জমিতে। দেখা গেছে, ৩ হাজার বেগুন গাছের জন্য বাসের খুটি তৈরিতে ব্যস্ত রাজা মিয়ার দিন হাজিরা কর্মচারী রফিকুল মিয়া।

কৃষক রফিকুল বলেন, ধান আবাদ করলে ধ্বংস হয়ে যেত রাজা ভাই। তাই তিনি কলা, বেগুন, লাউ ইত্যাদি চাষাবাদ করেই আজ লাখ লাখ টাকা করতে পেরেছেন।

কেএসটি

আরও পড়ুন